পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
গত দু’তিন বছর ধরে ইংলিশবাজারে টোটো ও ই-রিকশর দাপাদাপি নাগরিকদের আতঙ্কে পরিণত হয়। এক সময় দুই হাজারের কম টোটো’কে ইংলিশবাজার শহরে চলাচলের অনুমতি দিয়েছিল পুরসভা। পরবর্তীতে বিষয়টি চলে যায় আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরের হাতে। কখনও পুরসভা আবার কখনও আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরের দেওয়া অনুমতির ফাঁকতালে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে টোটোর সংখ্যা। শুধু তাই নয়, বেআইনি টোটোর দাপটে কার্যত বন্ধ হয়ে যায় রিকশ পরিষেবা। রিকশ চালানো ছেড়ে ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজে চলে যেতে বাধ্য হন দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী ইংলিশবাজার শহর ও ব্লকের অনেকেই। অন্যদিকে টোটো চালকদের একাংশের ট্র্যাফিক আইন ভাঙার প্রবণতা, যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের মতো বিষয়গুলিও বাড়তে থাকার অভিযোগ উঠতে শুরু করে। শহরের বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে বেপরোয়া টোটো চালানোর কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে শুরু করে নিয়মিত।
এই পরিস্থিতিতে ফুঁসতে থাকা নাগরিকদের ক্ষোভের আঁচ পেয়ে শেষ পর্যন্ত সক্রিয় হয় জেলা প্রশাসন। একাধিকবার বৈঠক করে সমাধান সূত্র বের করতে উদ্যোগী হন জেলাশাসক ও পুলিস সুপার। সিদ্ধান্ত হয় ইংলিশবাজার শহরে বাইরের টোটো ঢুকতে পারবে না। ইতিমধ্যেই ই-রিকশ চালু হয়ে যাওয়ায় টোটোগুলিকে পরিবর্তনের নির্দেশিকাও জারি করা হয়। পাল্টা আন্দোলন শুরু করে সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু ও কংগ্রেসের আইএনটিইউসি। প্রশাসনিক নির্দেশ ও ইউনিয়নের প্রতিবাদের জেরে জুন-জুলাই মাসে একাধিকবার উত্তাল হয়ে উঠে মালদহ।
শেষ পর্যন্ত সর্বদলীয় বৈঠকে পুরো বিষয়টির একটি সমাধান সূত্র খোঁজার চেষ্টা হয়। বহিরাহত টোটো বা ই-রিকশগুলিকে শহরের বুকে চলতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তে একমত হন সব পক্ষই। ইংলিশবাজার পুরসভা এলাকায় বাইরের ই-রিকশর প্রবেশ আটকাতে শুরু হয় ড্রপগেট ব্যবস্থা। মালদহের এরোড্রাম এলাকায় শুরু হয় ই-রিকশ নিবন্ধীকরণ কর্মসূচি। কিন্তু ফের বেড়ে যায় টোটোর সংখ্যা। পুরনো বিভীষিকা ফিরে আসার ইঙ্গিত মিলতেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকেই।
জেলা ট্র্যাফিক পুলিসের ডিএসপি শুভতোষ সরকার বলেন, আমরা নজর রাখছি। নিবন্ধীকরণের সুযোগে বাইরের কিছু ই-রিকশ শহরে চলে আসছে। তবে তা দীর্ঘমেয়াদী হবে না। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪০০০ ই-রিকশকে কাগজ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি সব মিলিয়ে হাজার পাঁচেক ই-রিকশ ইংলিশবাজারে চলার অনুমতি পাবে। তাতে সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।
অন্যদিকে সিটু অনুমোদিত মালদহ জেলা ব্যাটারি চালিত রিকশ অপারেটর ও ড্রাইভারস’ ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কৌশিক মিশ্র বলেন, অনেক ই-রিকশ চালকই গরিব। আমরা তাঁদের পক্ষে। পুজোর আগে তাঁদের হেনস্তা করা হচ্ছে কোথাও কোথাও। তবে আমরা ই-রিকশ চালকদের ট্র্যাফিক আইন মেনে চলার পরামর্শ দেব। নাগরিকদের সঙ্গে সহযোগিতা করার কথাও বলব।
আঞ্চলিক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের সদস্য বাবলা সরকার বলেন, প্রশাসন যা সিদ্ধান্ত নেবে আমরা তা সমর্থন করব। তবে পুজো মরশুমে দু’মাস শহরে চলতে দেওয়ার জন্য আবেদন করছেন অনেক ই-রিকশ চালক। বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করলে ভালো হয়।