বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পরিবার সূত্রে জানা যায়, বাংলায় মুর্শিদকুলি খাঁয়ের আমলে জমিদারির পত্তন হয়। সেই সময় দেওয়ান পান তারাচাঁদ বন্দ্যোপাধ্যায়। জমিদারি প্রথা রমরমার সময়ে তারাচাঁদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলে রমেশ চন্দ্র বন্দোপাধ্যায় ও যোগেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম দুর্গাপুজার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কালের নিয়মে বর্তমানে এই জমিদার বাড়ি ও ঠাকুর দালানের ভগ্নপ্রায় অবস্থা। আজ থেকে ১২৮ বছর আগে তপনের মনোহলীর জমিদার বাড়িতে প্রথম দুর্গাপুজো হয়। বর্তমানে বংশের সমস্ত শরিক পুজোয় সেভাবে অংশগ্রহণ করে না। গ্রামবাসীরা এখন এই জমিদার বাড়ির পুজোকে সর্বজনীন পুজো কমিটি তৈরি করে চিরাচরিত রীতি ও প্রথা অনুযায়ী উদযাপন করেন। শুরুতে যে নিয়ম রীতিতে পুজো হতো আজও সেই রীতিতেই পুজো হয়।
জমিদার বাড়ির সদস্য শিবপ্রসাদ পাকড়াশি বলেন, আমাদের জমিদারি প্রথা উঠে যাওয়ার পর থেকে আমাদের পাঁচ শরিক জেলা ও বিভিন্ন রাজ্যে কর্মসূত্রে চলে গিয়েছে। নিয়মিত পুজো চলতে থাকলেও সব শরিক পুজোতে না আসতে পারায় একটা সময় মনোহলি জমিদার বাড়ির পুজো বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। তারপর গ্রামের সাধারণ মানুষকে ডেকে বারোয়ারি কমিটি করে পুজোর দায়দায়িত্ব তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বারোয়ারি পুজো কমিটি জমিদার বাড়ির রীতিনীতি অনুযায়ী দেবীর পুজো করে। আমরা সাধ্যমতো পুজো কমিটিকে সাহায্য করি। জমিদার বাড়ির সদস্যরা এই পুজো পরিচালনার দায়িত্বে না থাকলেও আড়ম্বরে কোনও ভাটা পড়েনি।
পুজো উদ্যোক্তা পিন্টু দাস বলেন, আমরা গ্রামবাসীরা জমিদার বাড়ির সঙ্গে কথা বলে কমিটি গঠন করে পুজোর দায়িত্ব নিই। জমিদার বাড়ির রীতিনীতি মেনেই সকলের মঙ্গলের জন্য দুর্গাপুজো করে আসছি। পুজোর দিন জমিদার বাড়ির সকল শরিকদের আমন্ত্রণ করা হয়। পুজোকে ঘিরে এখনও আমরা মহাভোজ করিয়ে থাকি। গ্রামের সকলে চাঁদা তুলে এই পুজো করি। লোকশ্রুতিতে জানা যায় জমিদারের আমলে তপন এলাকার আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ এই পুজো দেখতে আসতেন এবং পুজোতে অংশগ্রহণ করতেন। জমিদার বাড়ি থেকে তৎকালীন সময়ে গ্রামের মানুষজনদের মেলা দেখতে টাকা দেওয়া হতো। বর্তমানে পরিচর্যার অভাবে জমিদার বাড়ির ভগ্নদশা হয়েছে। জমিদার বাড়ির ঠাকুর দালানের অবস্থাও খারাপ হয়ে পড়েছে। তবুও এই জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে মানুষজনের উৎসাহ ও উন্মাদনার বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি।