সংবাদাতা, পুরাতন মালদহ: দুর্গাপুজোর আয়োজনের মাধ্যমে এখন বিগ বাজেটের পুজোর উদ্যোক্তা ক্লাবগুলি পরস্পরের সঙ্গে একটা সুক্ষ প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে। কেউ মণ্ডপসজ্জা তো কেউ প্রতিমায় নানা চমকের আয়োজন করে দর্শক টানার লড়া‌ইতে নামে। থিমের ভাবনায় চমকে দিয়ে দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করার খেলা এখন পুরোনো। দুর্গাপুজোয় এবার পুরাতন মালদহ শহরে মণ্ডপসজ্জার পাশাপাশি আলোকসজ্জাতেও থিমের ছড়াছড়ি দেখা যাবে বলে দাবি করছেন উদ্যোক্তারা। একাধিক বিগ বাজেটের পুজো কমিটি এবার মণ্ডপসজ্জা সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আলোকসজ্জাতেও একে অপরকে টেক্কা দিতে চাইছে। শিশুদের মনোরঞ্জক কার্টুন চরিত্র থেকে শুরু করে চন্দ্রযান অভিযান অথবা পরিবেশ সচেতনতার বার্তা—আলোকসজ্জায় উঠে আসছে বিভিন্ন থিম। চমক দিতে পুজো মণ্ডপগুলোতে আপাতত জোরকদমে কাজ চলছে।
এবিষয়ে পুজো কমিটির সদস্যরা বলেন, মণ্ডপসজ্জার অঙ্গ হিসেবে আলোকসজ্জাকেও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। সেই ভাবনা থেকেই আলোকসজ্জাতেও থিমের আয়োজন রাখা হয়েছে। শিশু থেকে বড়দের মনোরঞ্জনের নানা বিষয় আলোকসজ্জার মাধ্যমে তুলে ধরা হবে।
মঙ্গলবাড়ি শঙ্কর স্মৃতি সংঘের সহ সম্পাদক হারাধন সাহা বলেন, মণ্ডপসজ্জার পাশাপাশি আলোকসজ্জাতেও আমরা নির্দিষ্ট থিম নিয়ে চিন্তাভাবনা করেছি। দর্শনার্থীদের নজর কাড়তেই আমরা পুজোর আয়োজনে এধরনের নতুনত্বের কথা ভেবেছি। আমাদের পুজোর আলোকসজ্জায় সচেতনতার বার্তা দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় জল সংরক্ষণের বিষয়টি আলোকসজ্জার মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। এছাড়াও সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, যেমন চন্দ্রযান অভিযানের কথাও নিখুঁতভাবে দর্শনার্থীদের কাছে তুলে ধরা হবে। এজন্য আমরা নবদ্বীপের আলোকশিল্পীদের দ্বারস্থ হয়েছি। তাঁরাও দিনরাত এক করে থিমগুলি ফুটিয়ে তুলছেন।
মঙ্গলবাড়ির ঘোষপাড়া নবাগত ক্লাবের পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য মান্তু ঘোষ বলেন, শিশুদের মনোরঞ্জন বিষয়ে থিম থাকছে আমাদের আলোর আয়োজনে। শিশুরা মণ্ডপে এসে যাতে আনন্দ পায়, সে ভাবনা থেকেই এধরনের থিম আমরা রেখেছি। জিংগেল বেল ছড়া থেকে শুরু করে আলাদিনের প্রদীপ—সবকিছুই আলোকসজ্জার মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। রেইন রেইন, ডিং ডিং, জ্যাক অ্যান্ড জিলের মতো ছড়ার দৃশ্যায়ণ করা হবে আলোর মাধ্যমে। এছাড়াও চাঁদের হাট, চন্দ্রগ্রহণ, ভূতের চাঁদ ইত্যাদি ছবি সহ গল্প শিশুদের জন্য আলোর মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে। সেইসঙ্গে শিশুদের নজর কাড়বে ছোটা ভীম।
শহরের দেবীপুর নবীন সংঘ ক্লাব পরিচালিত সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সম্পাদক মিঠুন দাস বলেন, আলোকসজ্জায় মুম্বইয়ের গণেশ পুজোর আদল ফুটিয়ে তোলার ব্যবস্থা করেছি আমরা। এছাড়াও দৃষ্টিনন্দন টুনি বাল্ব, আলোর কলকা দিয়ে পুজো মণ্ডপ সাজানো হচ্ছে ।
শহরের মঙ্গলবাড়ি স্মৃতি সংঘের পুজো উদ্যোক্তরা ভরসা রেখেছেন সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর উপর। চন্দ্রযান অভিযান নিখুঁতভাবে তুলে ধরছেন তাঁরা। তাঁদের মণ্ডপে পৃথিবী থেকে চাঁদে যান পাঠানোর দৃশ্য আলোকসজ্জার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হবে। এছাড়াও জল সংরক্ষণ নিয়ে সচেতনতামূলক বার্তা থাকছে। মণ্ডপের প্রবেশপথের অদূরেই বড় বড় গেট তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়াও কলকা সহ অন্যান্য দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জায় চারিদিকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে।
দেবীপুর সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির মণ্ডপে মুম্বইয়ের গণেশ মূর্তির দেখা মিলবে। অ্যানিমেশনের কায়দায় সেই মূর্তিটি রাতের অন্ধকারে ঝকমক করে উঠবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।