গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
এদিন সকাল সকাল হাতিগুলিকে মূর্তি নদীতে নিয়ে গিয়ে ঘসে মেজে স্নান করানো হয়। এরপর তাদের রং-বেরংয়ের চক দিয়ে সাজানো হয়। প্রতিটি হাতির গায়ে নাম লিখে দেওয়া হয়। তারপর তাদের পুজো মণ্ডপে নিয়ে আসা হয়। শাঁখ বাজানো হয় ও উলুধ্বনি হয়। পুরোহিত নিয়ম মেনে মন্ত্র উচ্চারণ করে পুজোপাঠ করেন। পুজো শেষ হলেই হাতিদের ভালোমন্দ খাওয়ান হয়। পর্যটকরাও কলা, আপেল ইত্যাদি ফলমূল হাতিদের নিজের হাতে খাইয়ে দেন। শেষে গ্রামবাসী ও পর্যটকরা একসঙ্গে বসে ভুরিভোজ সারেন।
হাতিপুজো দেখতে আসা এক পর্যটক হোসেন হবিবুর হাসান বলেন, আমি উত্তর চব্বিশ পরগনার সোদপুর থেকে এসেছি। লাটাগুড়িতে উঠেছি। এদিন আমাদের ঝালং বিন্দু যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন শুনলাম গাছবাড়িতে হাতির পুজো হবে, তখন তা দেখার লোভ সামলাতে পারলাম না। চলে এলাম পুজো দেখতে। আরও এক পর্যটক পম্পা রায় বলেন, গাছবাড়িতেই বিশ্বকর্মা পুজোর দিনটি কাটালাম। অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এদিন নিজের হাতে হাতিদের কলা খাওয়ালাম। এই অভিজ্ঞতার কথা বলে বোঝানো যাবে না।
কলকাতারই আরও এক দম্পতি বাবুল রায় চৌধুরী ও সুপ্রিয়া রায় চৌধুরী বলেন, গতবছরও আমরা এখানে হাতিপুজো দেখে গিয়েছিলাম। খুব ভালো লেগেছিল। তাই আমরা ঠিক করি যে এবছর আবার আসব। তাই আমরা বিশ্বকর্মা পুজোর আগে আবার ডুয়ার্সে এসেছি। গত তিনদিন হল ধুপঝোরারই এক রিসর্টে উঠেছি। হাতিপুজোয় অংশ নিতে খুব ভোরে গাছবাড়িতে চলে এসেছি।
গত দশ বছর ধরে এই গাছবাড়িতে হাতিপুজো হয়ে আসছে। একসময় নমো নমো করে এই পুজো সারা হত। কিন্তু যত দিন গেছে তত এলাকায় সরকারি বেসরকারি রিসর্টের সংখ্যা বেড়েছে। পর্যটকদের কাছে দিনে দিনে এই পুজো জনপ্রিয় হয়েছে। অনেক পর্যটক আছেন যাঁরা এই হাতিপুজোয় অংশ নিতে আগেভাগেই দূরদূরান্ত থেকে চলে আসেন। সেকারণে বনদপ্তরও এখান ঘটা করে পুজোর আয়োজন করে। এই পুজো উপলক্ষ্যে এদিন ভোজের মেনুতে ছিল খিচুড়ি, পাপড়ভাজা, তরকারি ও দুই-তিন রকমের মিষ্টি। মাঠে বসেই পর্যটকরা গ্রামবাসীদের সঙ্গেই বসে খান। এদিকে পুজোর আগে হাতিদের সাজানো থেকে শুরু স্নান করানো—সব কাজই করেন প্রধান মাহুত দীনবন্ধু বর্মন। এদিন ছয়টি হাতিকেই সবেতন ছুটি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধুপঝোরার বিট অফিসার রোশন রাই। রোশনবাবু বলেন, প্রতিবছরের মত এবছরও পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে ধুমধাম করে হাতিপুজো পালন করা হয়েছে।