গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, শনিবার ২০০ টাকার জাল নোট খুচরো করার জন্য আমার কাছে এক ব্যক্তি আসেন। একঝলক দেখে নোট জাল কি না তা চেনার কোনও উপায় ছিল না। কিন্তু ভালোভাবে পরীক্ষা করার পর দেখা যায়, নোটের প্রান্তে রিজার্ভ ব্যাংকের বিশেষ কালো দাগের পার্থক্য রয়েছে। আসল নোটের তুলনায় তা কিছুটা মোটা এবং খসখসে। হাত বোলালেই তা মালুম পাওয়া যাচ্ছে। বাকি সব চিহ্ন প্রায় আসল নোটের মতোই। আগে হয়তো এতকিছু না দেখে নোট নিয়ে নিতাম। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে মালদহে ৫০ এবং ২০০ টাকার জাল নোট উদ্ধারের খবর পেয়ে আমরা সচেতন হই। এতদিন আমরা সাধারণত ৫০০ বা ২০০০ টাকার নোট নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু গত দুদিন ধরে ছোট নোট নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন রয়েছি। এখন ৫০, ১০০, ২০০ টাকা সহ অন্যান্য ছোট নোটও পরীক্ষা করতে হচ্ছে। জয়ন্তবাবু আরও বলেন, বড় ব্যবসায়ীরা দোকানে নোট গোনার মেশিন বসিয়ে রেখেছেন। সেখানে নকল বা জাল নোট গোনার সময় ধরা পড়ে যাবে। ফলে তাঁদের তেমন সমস্যা হবে না। কিন্তু ছোট দোকানদারদের সেই সুবিধা নেই। তাঁদের খুবই অসুবিধা হবে।
ইংলিশবাজার শহরের অন্যতম প্রসাধন ব্যবসায়ী গণেশ দাস বলেন, পুজোর বাজারে দোকানে সমবসয় ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকে। বেশিরভাগ সময় ক্রেতারা ৫০, ১০০ বা ২০০ টাকার নোট দিয়ে থাকেন। ব্যস্ততার মাঝে ছোট নোট অতটা খুঁটিয়ে দেখা সম্ভব হয় না। নোট ছেঁড়া বা কাটা আছে কি না তা একঝলক দেখে আমরা ক্যাশবাক্সে রেখে দিই। ৫০ টাকা ও ২০০ টাকার নোট জাল হওয়ায় খুবই মুশকিল হল।
শহরের বস্ত্র ব্যবসায়ী আসাদুল শেখ বলেন, এতদিন দোকানে নোট গোনার কোনও মেশিনের প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু জাল নোটের দাপটে এবার তা কিনতে হবে। পাশাপাশি ‘পয়েন্ট অব সেল বা পস’ মেশিনও দোকানে বসানোর কথা ভাবছি। ওই মেশিনে কার্ডের মাধ্যমে বিল মেটালে নগদের ঝক্কি সামলাতে হবে না।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সীমান্ত হয়ে এদেশে সম্প্রতি প্রচুর জাল নোট ঢুকেছে বলে মালদহ জেলা পুলিসের ক্রাইম ব্রাঞ্চে খবর আসে। সেইমতো বিশেষ সেলের পুলিস আধিকারিকরা জেলাজুড়ে নজর রাখতে শুরু করেন। এক ব্যক্তি জাল নোট ভর্তি ব্যাগ নিয়ে মালদহ টাউন স্টেশনে যাচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার বিকেলে গোয়েন্দাদের কাছে খবর আসে। সেইমতো স্টেশন রোডে পুলিস ওত পেতে বসে থাকে। রাতে রাজা পাল সিং নামে মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা এক ব্যক্তিকে জেলা পুলিসের গোয়েন্দারা গ্রেপ্তার করেন। ধৃতের কাছ থেকে ৬০০ পিস ২০০ টাকা ও এক হাজার পিস ৫০ টাকার জাল নোট উদ্ধার হয়। ধৃতকে রাতভর জেরা করে বৈষ্ণবগনর থানার মোহনপুর এলাকা থেকে কাফিকুল শেখ নামে এক যুবককে পুলিস গ্রেপ্তার করে।
জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, কাফিকুল জাল নোট পাচারে রাজাকে সাহায্য করে। কাফিকুলের সঙ্গে জোট বেঁধে রাজা সীমান্ত থেকে নোট নিয়ে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছনোর চেষ্টা করছিল। কাফিকুল বাড়ি চলে যায়। রাজা বৈষ্ণবনগর থেকে মালদহ টাউন স্টেশনের উদ্দেশে রওনা দেয়। ধৃতদের জেরা করে জাল নোটের পাণ্ডাদের খোঁজ চলছে। এভাবে ছোট নোট জাল করে ভারতের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেওয়ার প্রয়াস যেভাবেই হোক বানচাল করতে হবে।