বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
শিলিগুড়ির রাজনীতিতে বার বার নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন গৌতমবাবু। দলের সাংগঠনিক কাঠামোয় তাঁর ওঠাপড়া নিয়েও শহর রাজনীতিতে চর্চা রয়েছে। ক্ষমতার ভরকেন্দ্রে থাকায় দলে তাঁর বিরুদ্ধ শক্তি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, এবার গৌতম বিরোধিতা প্রকাশ্যে চলে আসায় দলে ব্যাপক আলোড়ন পড়েছে। ইতিমধ্যে দলের জেলা সভাপতির পদ থেকে তাঁর ইস্তফা চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে সরব হয়েছেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি রঞ্জিৎ ঘোষ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রঞ্জিতবাবুর সেই পোস্টে লাইক পড়েছে অসংখ্য। তা শেয়ার করা হয়েছে একাধিকবার। তাতে অসংখ্যা মানুষ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ বলেছেন, ‘সাবাস রঞ্জিৎ’। একই সুরে কেউ আবার রঞ্জিৎকে ‘সাহসী যুবক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। কেউ কেউ সেই পোস্টে সহমত পোষণ করেছেন। আবার কয়েকজন পরবর্তী নেতা কে, তা জানতে চেয়েছেন। ইতিমধ্যে রঞ্জিৎবাবু এই বিষয়টি ফোনে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতেও জানিয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
রঞ্জিৎবাবু বলেন, গৌতমদা মন্ত্রীত্ব নিয়ে সর্বক্ষণ ব্যস্ত থাকেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তিনি প্রশাসনিক কাজকর্ম নিয়েই ডুবে থাকছেন। তাঁকে কলকাতাতেও থাকতে হচ্ছে। তাঁকে দলের কাজে সর্বক্ষণ পাওয়া যায় না। বাইরে থাকলে এখানকার সমস্যা ও কর্মসূচি নিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা কঠিন হয়। দলের সর্বক্ষণের জেলা সভাপতি দরকার। তাছাড়া, ছাত্র ও যুব সংগঠনের সভাপতিদেরও ছাত্র এবং যুব সংগঠন করার বয়স নেই। সেখানেও নতুন মুখ উঠে আসছেন না। দলে যেন স্থবিরতা এসে গিয়েছে। এই অবস্থা কাটাতে দলের সর্বস্তরেই নেতৃত্বে বদল প্রয়োজন। তা না হলে শিলিগুড়িতে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। ওই পোস্ট করার পর দলের অনেকই নেতাই ফোন করে আমাকে সমর্থন জানিয়েছেন। পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের হাওয়ায় শিলিগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্র সিপিএমের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল তৃণমূল। পরের বারই অশোক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে এই কেন্দ্র দখল করে সিপিএম। শুধু তাই নয়, রাজ্যজুড়ে ঘাসফুল ছেয়ে গেলেও শিলিগুড়ি পুরসভা, মহকুমা পরিষদ এবং দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের ভোটে সাফল্য পায়নি তৃণমূল। এই অবস্থায় যুব নেতা সোশ্যাল মিডিয়ায় গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে সুর চড়ানোয় দল অস্বস্তিতে পড়েছে। দলে গৌতম বিরোধীরা তলে তলে জোটবাঁধতে শুরু করেছে বলেও দলীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, দলীয় এবং সংসদীয় রাজনীতির পদ আঁকড়ে রাখলেও গৌতমবাবু দলে দ্বিতীয় স্তরে নেতৃত্ব তৈরি করতে পারেননি। মাঝেমধ্যেই মেজাজ হারিয়ে ফেলছেন।
এদিকে দল সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌতমবাবুর পদত্যাগ চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হওয়া যুব নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চলেছে তৃণমূল যুব কংগ্রেস। সংগঠনের জেলা সভাপতি বিকাশ সরকার বলেন, ওই যুব নেতার কার্যকলাপ মানা যায় না। তাঁকে শোকজ করা হবে। তৃণমূলের জেলা আহ্বায়ক তথা পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার বলেন, ওই যুব নেতা বিষয়টি দলে জানাতে পারতেন।সোশ্যাল মিডিয়াতে বিষয়টি পোস্ট করে তিনি ঠিক করেননি।