কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
রায়গঞ্জ পুর এলাকার বীরনগরের বাসিন্দা মানসবাবু ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন। সঙ্গে থাকেন তাঁর স্ত্রী ও একমাত্র কন্যা সোহিনী। ছোটবেলা থেকেই হাতের কাজের দক্ষতা দেখিয়ে এসেছেন তিনি। স্কুল জীবনেই মাটির তৈরি নানা ধরনের মূর্তি বানাতেন মানসবাবু। এছাড়াও নানাবিধ সামগ্রী দিয়ে তৈরি করতেন বিভিন্ন ধরনের মডেল ও মূর্তি। খুব ভালো ছবিও আঁকতেন ছাত্রজীবনে। রায়গঞ্জ থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত করণদিঘীতে চশমার দোকান চালান মানসবাবু। সেটাই তাঁর মূল পেশা। ব্যবসা চালানোর পাশাপাশি নানা ধরনের হাতের কাজ করাও তাঁর নেশা। মানসবাবু জানালেন, এব্যাপারে স্ত্রী ও মেয়ের কাছ থেকে সব সময় উৎসাহ পেয়েছেন তিনি।
বিগত দিনে বিভিন্ন ধরনের মূর্তি বানানোর পর গতবছর মানস বাবুর মাথায় আসে এই মিনিয়েচার দুর্গা প্রতিমার কথা। ঠিক করেন, একটি অত্যন্ত ক্ষুদ্র আকারের দুর্গা প্রতিমা তৈরি করবেন তিনি। সকলের নজর কাড়বেন। সেই সিদ্ধান্তেরই ফসল ৬ মিলিমিটার উঁচু এই দুর্গামূর্তি। মাটি, খড় ও আঠা দিয়ে এই মূর্তি তৈরি করেছেন তিনি। পরে রং লাগিয়ে দেবীকে যেন জীবন্ত করে তুলেছেন মানসবাবু।
শিল্পী বলেন, বেশ কয়েক বছর আগে হাতের কাজ করে কিছু করে দেখানোর স্পৃহা জাগে মনের গভীরে। সেই ইচ্ছাশক্তিতে ভর করেই আমি ক্ষুদ্র আকারের প্রতিমা বানিয়েছি। এব্যাপারে আমি গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষকে ইমেইল মারফত জানিয়েছিলাম। সেখান থেকে তারা আমার কাজের ফটোগ্রাফ ও তার বিস্তারিত বিবরণ জানতে চেয়েছে। আমি তা কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়ে দেব।
মানসবাবু আরও বলেন, কয়েক বছর আগে আমি চাল দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, অটলবিহারী বাজপেয়ি, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মুখাবয়ব তৈরি করেছিলাম। তা সকলের ভালো লেগেছিল। সেই ঘটনাই আমাকে এই কাজে আরও উৎসাহিত করেছে।
শিল্পীর কাছ থেকে জানা গিয়েছে, পালপাড়া থেকে মাটি নিয়ে এসে এই প্রতিমা গড়েছেন মানসবাবু। বড় প্রতিমার ক্ষেত্রে দেবীকে সাজানো হয় শাড়ি পরিয়ে। মানসবাবুর ক্ষেত্রে সেই সুবিধা ছিল না। তাই তিনি দেবীকে সাজিয়েছেন রং দিয়েই। এত ছোট প্রতিমাকে হাত দিয়ে ধরে কাজ করা সম্ভব নয়। তাই চিমটে দিয়ে ধরে ধরে কাজ করেছেন তিনি।
মানসবাবুর একমাত্র মেয়ে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সোহিনী রায় বলেন, বাবার এই কাজে আমাদের পরিবারের সকলেই গর্বিত। আশা করি, বাবা তাঁর কাজের যোগ্য সম্মান পাবেন।