ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
সোমবার তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে ওঠে শীতলকুচি ব্লকের বড়কৈমারি গ্রামপঞ্চায়েতের ডাকঘড়া বাজার। এদিন সন্ধ্যায় ডাকঘড়া বাজার এলাকায় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা মিছিল করে বাজারে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ে বাজারে থাকা বিজেপি’র লোকজন তাড়া করে তাঁদের। দেদার বোমাবাজিও করা হয়। তৃণমূলের পার্টি অফিসও ভাঙচুর করেছে বিজেপি। ডাকঘড়া বাজারে তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এব্যাপারে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা সাহের আলি মিঁয়া বলেন, ডাকঘড়া বাজারে আমাদের একটি মিছিল ছিল। সেখানে বিজেপি’র লোকজন হামলা চালিয়েছে। আমাদের পার্টি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। এদিকে বিজেপি’র প্রাক্তন জেলা সভাপতি হেমচন্দ্র বর্মন বলেন, ডাকঘড়া বাজারে আমাদের দলীয় কর্মীদের উপর হামলা করেছে তৃণমূলের লোকজন। তাতে একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
এদিকে রবিবার রাতে তুফানগঞ্জ ও শীতলকুচিতে যে সংঘর্ষ হয়েছে তাতে জখমদের মধ্যে তিন জনকে তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে ও এক জনকে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ধারালো অস্ত্র, লাঠি, রড প্রভৃতি দিয়ে তাদের দলের লোকদের উপর হামলা চালিয়েছে। মাথা, পিঠ সহ দেহের বিভিন্ন জায়গায় চোট লেগেছে জখমদের। এদিকে, বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ওই সমস্ত ঘটনায় তারা জড়িত নয়। এছাড়াও তুফানগঞ্জের মহিষকুচি এলাকায় তাদের এক মহিলা সমর্থককে সোমবার মারধর করা হয়েছে বলে বিজেপ’র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। সংঘর্ষ এড়াতে প্রশাসনের উদ্যোগে রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে শান্তি বৈঠকও করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব হচ্ছে না কোচবিহারে।
কোচবিহারের প্রাক্তন সংসদ সদস্য তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, রবিবার রাতে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি পালন করে ফেরার পথে মহিষকুচি এলাকায় আমাদের কর্মী সমর্থকদের বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা মারধর করেছে। তিনজনকে তুফানগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে, শীতলকুচির খালিসামারি এলাকার সরকারের হাট থেকে এক তৃণমূল কর্মী বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ,সাঙারবাড়ি এলাকায় তাঁর উপর পিছন থেকে হামলা চালায় বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। ওই কর্মীকে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিজেপির জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা রায় বলেন, মহিষকুচি এলাকায় গত শনিবার তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমাদের কর্মীকে মারধর করেছিল। আমি নিজে রবিবার ওই এলাকায় ছিলাম। ওদের গোষ্ঠীকোন্দলের ফলে এগুলি হয়েছে। আমাদের কেউ এসবের সঙ্গে জড়িত নয়। বরং সোমবার সেখানে আমাদের এক মহিলা কর্মীকে মারধর করা হয়েছে।
কোচবিহার জেলাজুড়েই নানা জায়গায় একের পর এক গণ্ডগোল, মারপিট, রাজনৈতিক সংঘর্ষ হয়েই চলেছে। এছাড়াও বাড়ি ভাঙচুর, বোমা, গুলি ছোঁড়ার মতো ঘটনাও ঘটেই চলেছে। বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। গত শনিবার কোচবিহারে প্রশাসনের উদ্যোগে কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা এলাকায় শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে একটি শান্তি বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু তারপর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই গত রবিবারই ওই বিধানসভার হাওয়ারগাড়ি এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূল-বিজেপি। বিজেপি সমর্থকদের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। দুই পক্ষেরই বেশ কয়েক জন আহত হয়।