ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
এব্যাপারে কালিয়াগঞ্জ ক্রেতা সুরক্ষা সেবা সমিতির সম্পাদক চিন্ময় দাশগুপ্ত বলেন, এই শহরে ২৫০’র বেশি সর্ষের তেলের মিল ছিল। কিন্তু বর্তমানে সংখ্যাটা ১০০’র কিছু বেশি। দেখা যাচ্ছে প্রতিদিন এই শহরে প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে ১০ থেকে ১২ ট্যাঙ্ক পাম তেল ঢুকছে। কিসের জন্য এই বিপুল পরিমাণ পাম তেল শহরে ঢুকছে সেব্যাপারে প্রশাসনিক নজরদারি প্রয়োজন। আমরা অতীতে ভেজাল তেলের কারবারের পর্দা ফাঁস করার উদ্দেশ্যে নানাভাবে পরীক্ষা চালিয়েছি। সেখানে দেখা গিয়েছে পাম তেলের সঙ্গে নানারকম রাসায়নিক ও ক্ষতিকারক রং মিশিয়ে ভেজাল ভোজ্য তেল তৈরি করা হচ্ছে এবং সেগুলো প্যাকেটজাত হয়ে জেলা ও বাইরের জেলার বাজারে পৌঁছে যাচ্ছে। আমরা কালিয়াগঞ্জ ব্লকের বিভিন্ন দোকান থেকে বিক্রির জন্য মজুত সর্ষের তেলের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেছি তাতে ভেজাল রয়েছে। এতে যে পরিমাণ রাসায়নিক ও বিষাক্ত রং ব্যবহার করা হয় তা মানবদেহের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক। পেট খারাপ, চর্ম রোগ, নার্ভের রোগ সহ নানাবিধ অসুখ ছাড়াও ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগও হতে পারে। তাই এব্যাপারে আমরা বহুদিন থেকেই প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছি। সম্প্রতি আমরা কালিয়াগঞ্জ থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি ভেজাল তেল কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি কালিয়াগঞ্জ শহর ও শহর সংলগ্ন এলাকায় সর্ষের তেলের মিল ও কারখানায় হানা দিয়ে প্রচুর পরিমাণে ভেজাল তেল পুলিস উদ্ধার করেছে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিস সুপার সুমিত কুমার বলেন, ভেজাল ভোজ্য তেলের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে। কোনওভাবেই আমরা এই বেআইনি কারবার চলতে দেব না। রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ী বলেন, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় এই কাজ দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছে। শুধু তাই নয় ভোজ্য তেলে ভেজাল মেশানোর কারণে আগামী প্রজন্ম শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তও হচ্ছে। পাশাপাশি মুষ্টিমেয় মুনাফা লোভী অসাধু ব্যক্তিদের কারণে সিংহভাগ ব্যবসায়ী বদনামের শিকার হচ্ছেন। তাই প্রশাসনের কাছে আমাদের আবেদন এজাতীয় কারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
অন্যদিকে রায়গঞ্জের বিশিষ্ট চিকিৎসক জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলেন, খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মেশানো আমাদের দেশে নতুন কিছু নয়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের মুনাফা লাভের ইচ্ছে ও প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই এজাতীয় কাজ দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেই ভবিষ্যতে এই প্রবণতা রোখা সম্ভব হবে। তা না হলে শুধু বর্তমান প্রজন্মই নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অর্থাৎ নবজাতক শিশুরাও ভয়ানক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে না।