বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
গোলাম রব্বানি বলেন, গুজবে কান না দিতে মানুষকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পুলিসে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। পুলিসের প্রচারের পাশাপাশি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যরাও এব্যাপারে মানুষকে বোঝাবে। ইসলামপুরের অতিরিক্ত পুলিস সুপার কার্তিকচন্দ্র মণ্ডল বলেন, এখনও পর্যন্ত ছেলেধরার কোনও প্রমাণ নেই। এলাকায় ছেলেধরার গুজব রটেছে। এই গুজবের কারণে অনেককেই গণপিটুনির শিকার হতে হয়েছে। তাই পুলিসের পক্ষ থেকে সচেতনতা প্রচার করা হচ্ছে। বিভিন্ন থানা এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে, লিফলেট বিলি করা হয়েছে। এলাকায় কোনও সন্দেহজনক ব্যক্তি দেখলে তাকে মারধর না করে পুলিসকে খবর দিতে বলা হচ্ছে।
পুলিসের ওই লিফলেটে বার্তা দেওয়া হয়েছে, ‘দাঙ্গা থেকে চুরি যে কোনও গুজবে কান দেবেন না বা আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আপনার এলাকায় কোনও সন্দেহজনক ব্যক্তি ঘোরাফেরা করলে পুলিসকে জানান। আইন অনুসাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিস দিবারাত্রি সজাগ রয়েছে আপনার সুরক্ষায়।’ পুলিস কন্ট্রোল রুমের নম্বরও (০৩৫২৬-২৫৫০০৮) তাতে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইসলামপুর পুলিস জেলা এলাকার (ডালখোলা থেকে চোপড়া) মধ্যে গত দু’-এক মাসে ছেলেধরা গুজবে প্রায় ১২ জন নিরীহ মানুষ গণপিটুনির শিকার হয়েছে। ওই সব এলাকায় খোঁজ করলে একটি শিশুও চুরি হয়েছে এমন তথ্য মিলছে না। তারপরেও গুজবে গণপিটুনি চলছেই। কয়েকদিন আগেই রামগঞ্জ রাজার এলাকায় এক মহিলা ও পুরুষকে ধরে স্থানীয়রা ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দিয়েছে। পুলিস তাঁদের উদ্ধার করতে গেলে পুলিসের হাত থেকে ওই দম্পতিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। পুলিসের একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। গত শুক্রবার বিকেলে গোয়ালপোখর থানার পাঞ্জিপাড়া পুলিস ফাঁড়ির তেলিয়াপোখর এলাকা থেকে এক ভবঘুরে মহিলাকে স্থানীয়দের হাত থেকে উদ্ধার করে পুলিস। মাঝবয়সি ওই ভবঘুরে মহিলাকে এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখে স্থানীয়রা ছেলেধরা সন্দেহ করে ঘিরে ধরে। জনতা তাঁকে গণধোলাই দিতে উদ্যত হলে তখনই পুলিসের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। পুলিস জনতাকে নিরস্ত করে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। পরে ওই মহিলার পরিচয় জানতে পেরে পুলিস কিষাণগঞ্জে তাঁর পরিবারের হাতে তাঁকে তুলে দেয়।
শনিবার দুপুরে ইসলামপুর থানার রামগঞ্জ পুলিস ফাঁড়ির বগলাডাঙ্গিতে ফের ছেলেধরা সন্দেহে দুই ফেরিওয়ালাকে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিস তাঁদের উদ্ধার করতে গেলে পুলিসের গাড়ি ভাঙচুর হয়। পরে বিশাল পুলিস বাহিনী গিয়ে মারমুখী জনতার হাত থেকে ওই দু’জনকে উদ্ধার করে। একই দিনে ডালখোলার ভুসামনি এলাকায় তিন যাযাবরকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটনি দেয় স্থানীয়রা। পুলিস গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।
গুজবে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায়ও প্রভাব পড়েছে। অভিভাবকেরা আতঙ্কিত হয়ে আছেন। অনেকে তাঁদের ছেলেমেয়েকে ভয়ে ভয়ে স্কুলে পাঠাচ্ছেন। যতক্ষণ তারা বাড়ি না ফিরছে পরিবার আতঙ্কে থাকছে। ছেলেমেয়ে একটু চোখের আড়াল হলেই আঁতকে উঠছে পরিবারের লোকজন।