সংবাদদাতা, বালুরঘাট: পুলিস আধিকারিকের সই জাল করে সিভিক ভলান্টিয়ারে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলে ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগে রবিবার পুলিস তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তপন ব্লক সভাপতি মিলন বর্মনকে গ্রেপ্তার করেছে। সেই সঙ্গে জনি সাহা নামে এক যুবককেও পুলিস গ্রেপ্তার করেছে। ধৃত মিলন বর্মন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। অন্যদিকে, বনদপ্তরে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগে এদিন তপন থানার রামপুর ফাঁড়ির পুলিস দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিস জানিয়েছে, একজনের বাড়ি গঙ্গারামপুর থানার পুলিন্দায় ও দ্বিতীয় জনের বাড়ি রামপুরের ফুলবাড়িতে। ধৃত সকলেই শাসক দল ঘনিষ্ট বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিস দু’টি ঘটনারই তদন্তে নেমেছে।
পুলিস জানিয়েছে, ধৃত তৃণমূল নেতা মিলন বর্মনের নামে সিভিক ভলান্টিয়ারে ও জেলা প্রশাসনিক ভবনে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার একাধিক অভিযোগ পুলিসের কাছে রয়েছে। মিলনের সঙ্গে বড় একটি চক্র জেলায় কাজ করছে। এদিন তপন থানা এলাকায় চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার অভিযোগে চার জন গ্রেপ্তার হতেই জেলা জুড়ে আলোড়ন পড়েছে। পুলিস পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ধৃতদের সোমবার বালুরঘাট জেলা সদর আদালতে পাঠানো হবে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পুলিস সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা আদায় ও ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগে পুলিস তপন থেকে চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। ধৃতদের সোমবার আদালতে পাঠানো হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদা বলেন, পুলিসের কাজ পুলিস করবে। এমন ঘটনা একেবারেই নিন্দনীয়। এদের কারণে দলের বদনাম হচ্ছে। এদের দলে কোনও জায়গা নেই।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত মিলন তপন এলাকার জনি সাহা নামে এক যুবককে সিভিক ভলান্টিয়ারে চাকরি দেওয়ার নাম করে কয়েক মাস আগে মোটা টাকা নেয় বলে অভিযোগ। কয়েক দিন আগে সে জনিকে একটি নিয়োগপত্র দিয়ে থানায় কাজে যোগদান করতে যেতে বলে। সেই নিয়োগপত্র নিয়ে শনিবার জনি তপন থানায় যান। নিয়োগপত্র দেখে পুলিসের চক্ষু চড়কে ওঠে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরিতে সাধারণত নিয়োগপত্র দেওয়া হয় না। স্বাভাবিক কারণে নিয়োগপত্র দেখে পুলিস অবাক হয়। খতিয়ে দেখা যায় নিয়োগপত্র একেবারেই ভুয়ো। এমনকী সেখানে সিল, পুলিস আধিকারিকের সই সবই কিছুই ভুয়ো। এই বিষয়টি সামনে আসায় পুলিস সেই যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে মিলনকে সে চাকরির জন্য টাকা দিয়েছে। সেই তাকে নিয়োগপত্রটি দিয়েছে। শনিবার রাতে তপন থানার পুলিস মিলন বর্মনকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এতে পুরো বিষয়টি সামনে আসে। অন্যদিকে, একইভাবে বনদপ্তরের চাকরি দেওয়ার নাম করে রামপুরের বেশ কয়েকজন যুবকের কাছে লক্ষাধিক টাকা তুলে ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগে পুলিস রবিবার দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিস সূত্রে খবর, চাকরি দেওয়ার নাম করে জেলা জুড়ে বড় চক্র কাজ করছে। দ্রুত সেই চক্রের হদিশ করে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা পুলিসের লক্ষ্য।