বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
রবিবার আইএনটিইউসি’র জেলা কার্যালয় ইন্দিরা স্মৃতি শ্রমিক ভবনে বসে সংগঠনের জেলা সভানেত্রী লক্ষ্মী গুহ অভিযোগ করেন, তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত হচ্ছে। সংগঠনে তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা তথা প্রাক্তন জেলা সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম সংগঠন বিরোধী কাজকর্মে জড়িত বলে দাবি করেন তিনি। নজরুল ইসলামকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে তিনি জানান।
এক সময়ের ডাকসাইটে কংগ্রেস নেতা তথা শ্রমিক সংগঠনের তৎকালীন সর্বময় কর্তা বিশ্বনাথ গুহর সহধর্মিণী লক্ষ্মী গুহর দাবি, কংগ্রেস ও আইএনটিইউসি’কে পিছন থেকে ছোরা মেরেছেন নজরুল ইসলাম। এমনকি বেআইনিভাবে তিনি নিজেকে সংগঠনের জেলা সভাপতি বলেও দাবি করছেন। এই জন্যই তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন লক্ষ্মী গুহ।
পাল্টা নজরুল ইসলামের বক্তব্য, বিশ্বনাথ গুহর আমল থেকেই মালদহে শ্রমিক স্বার্থ রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে এসেছে আইএনটিইউসি। কিন্তু লক্ষ্মী গুহর মধ্যে সেই সক্রিয়তা নেই। স্রেফ ক্ষমতা ধরে রাখার উদ্দেশ্যেই চেয়ার দখল করে রেখেছেন তিনি। তাই তাঁকে নয়, লক্ষ্মী গুহকেই অপসারিত করেছে সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব। নিষ্ক্রিয় সভাপতির হাত থেকে সংগঠন রক্ষা করতে জেলাজুড়ে আইএনটিইউসি কর্মীদের কাছে এগিয়ে আসার আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, লক্ষ্মী গুহ ও কাজী নজরুল ইসলামের এই সভাপতি পদ দখলের লড়াইয়ের শরিক হয়ে গিয়েছে আইএনটিইউসি’র রাজ্য নেতৃত্বও। সংগঠনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক অলোক চক্রবর্তী ২৪ আগস্ট একটি চিঠি পাঠিয়ে নজরুল সাহেবকে লক্ষ্মী গুহ’র পদে বসানো হয়েছে বলে জানিয়ে দেন। ৯ আগস্ট নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি বৈঠকে বর্তমান সভাপতি লক্ষ্মী গুহ’র বিরুদ্ধে পাস হওয়া সিদ্ধান্তকেও তিনি স্বীকৃতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন অলোকবাবু। উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইএনটিইউসি’র কর্মকর্তা হিসাবেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত বলে দাবি অলোকবাবুর।
আইএনটিইউসি’র রাজ্য সভাপতি এম কামরুজ্জামান কামারের সই করা নির্দেশ দেখিয়ে লক্ষ্মী গুহ দাবি করেন, জেলা সভাপতি পদে তিনিই রয়েছেন। অলোকবাবুর ওই সিদ্ধান্তের কোনও বৈধতা নেই। কাজী নজরুল ইসলামকে বহিষ্কারের পাশাপাশি অলোকবাবুর বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক স্তরে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে।
দলের বেহাল অবস্থার মধ্যে শ্রমিক সংগঠনের এই আকচাআকচি নিয়ে ক্ষুব্ধ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোস্তাক আলম। তিনি বলেন, পদ নয় সংগঠনই মুখ্য। একদিকে যখন দলের কর্মীরা কঠিন পরিস্থিতিতে লড়াই করছেন তখন পদ নিয়ে এই লড়াই অত্যন্ত বিসদৃশ। তবে তাঁর সমর্থন যে লক্ষ্মী গুহর পক্ষেই রয়েছে এদিন তারও ইঙ্গিত দেন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি। তিনি বলেন, কেউ কেউ শিলিগুড়িতে বসে মালদহের শ্রমিক সংগঠন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। সেটি অনুচিত। এব্যাপারে অলোকবাবুর সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করবার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।