গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
রাজ্যের বন্যপ্রাণ শাখার মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিনহা বলেন, আগামী ৮ নভেম্বর থেকে পাতলাখাওয়া রসমতি বনাঞ্চল রাজ্যের তৃতীয় গণ্ডার আবাসস্থল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করছে। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের তিনটি গণ্ডার দিয়ে ওই নতুন গণ্ডার আবাসস্থলের যাত্রা শুরু হচ্ছে। বর্তমানে জলদাপাড়া ও গোরুমারায় গণ্ডারের আবাসস্থল রয়েছে। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও কুমার বিমল বলেন, রসমতি বনাঞ্চলে পাঠানোর জন্য জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের তিনটি গণ্ডারকে ইতিমধ্যেই আমরা চিহ্নিত করেছি। তিনটি গণ্ডারের মধ্যে একটি পুরুষ ও দু’টি স্ত্রী গণ্ডার।
রাজ্য বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, শেষ গণ্ডার শুমারি অনুসারে বর্তমানে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে গণ্ডারের সংখ্যা ২৩১-২৩৭টি। সেখানে গণ্ডারের সংখ্যা অত্যধিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় গণ্ডারদের মধ্যে সঙ্গিনী দখলের লড়াই অসম্ভব বেড়ে গিয়েছে। জঙ্গল থেকে গণ্ডাররা কখনও লোকালয়েও ঢুকে পড়ছে। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে গণ্ডারের এই অসম্ভব চাপ কমাতেই রসমতি বনাঞ্চলে রাজ্যের তৃতীয় গণ্ডার আবাসস্থল তৈরি করতে হয়েছে।
বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, একটা পুরুষ গণ্ডার প্রতি তিনটি স্ত্রী গণ্ডার থাকা দরকার। কিন্তু বর্তমানে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে পুরুষ ও স্ত্রী গণ্ডারের এই অনুপাত দাঁড়িয়েছে ১:১। জাতীয় উদ্যানে স্ত্রী ও পুরুষ গণ্ডারের আনুপাতিক ভারসাম্য ধরে রাখার জন্যও পাতলাখাওয়ায় নতুন গণ্ডার আবাসস্থল তৈরি প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
গত তিন বছর ধরেই রসমতি বনাঞ্চলে গণ্ডারদের থাকার যাবতীয় পরিকাঠামো তৈরি করে ফেলা হয়েছে। সেখানে গণ্ডারদের উপর নজরদারির জন্য চারটি নজরমিনার তৈরি করা হয়েছে। বন কর্মীও নিয়োগ করা হয়েছে। গণ্ডাররা সাধারণত সমতল এলাকা দিয়ে হাঁটাচলা করতে ভালোবাসে। সেজন্য রসমতি বনাঞ্চলের এবড়ো খেবড়ো মাটি সমান করা হয়েছে। গণ্ডারদের খাবারের রসদ হিসাবে পাতলাখাওয়া বনাঞ্চলে ৭০ হেক্টর জমিতে বিশেষ ধরনের ঘাস লাগানো হয়েছে। সেখানে গণ্ডারদের প্রিয় খাবার চাড্ডা, পুরুন্ডি, চেপটি ও মালসা ঘাস লাগানো হয়েছে। রসমতি বনাঞ্চলের ভেতর দিয়ে বইছে বুড়ি তোর্সা নদী। এতে গণ্ডারদের জলের অভাব হওয়ার কথা নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও গণ্ডারদের জল খাওয়ার জন্য সেখানে কয়েকটি কৃত্রিম জলাধারও তৈরি করা হয়েছে। রাজ্যের বন্যপ্রাণ শাখার মুখ্য বনপাল বলেন, গণ্ডারদের থাকার জন্য রসমতি বনাঞ্চলে যাবতীয় পরিকাঠামো তৈরির কাজ সম্পূর্ণ। সামান্য কিছু কাজ যা বাকি আছে তা আগামী দু’ মাসের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। সব কিছু ঠিকঠাক এগলে আগামী ৮ নভেম্বর আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে রাজ্যের তৃতীয় গণ্ডার আবাসস্থল।