বিএনএ, জলপাইগুড়ি: মঙ্গলবার রাতে ট্যাংরায় মূলচক্রী ধরমকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার জলপাইগুড়ি জেলা দায়রা আদালতে পেশ করে পুলিস। তার ছয় দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যদিও ধরম পাশোয়ান নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরে তাকে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। এদিন ধরমের মুক্তির দাবিতে কোর্ট চত্বরে কিছু লোক স্লোগানও দেয়। ধরমকে আদালতে নিয়ে যেতে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তারজন্য প্রচুর পুলিস মোতায়ন করা হয় কোর্ট চত্বরে। জলপাইগুড়ির পুলিস সুপার অভিষেক মোদি বলেন, অভিযুক্ত ধরম পাশোয়ানকে হেফাজতে পেয়েছি। আমরা ঘটনার আমরা আরও রহস্য ভেদ করব। জলপাইগুড়ি আদালতের সহকারী সরকারী আইনজীবী মৃন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশী মেয়ে পুষ্পা রায় ও তার স্বামী শিল্টু বায়েনের সহযোগিতায় ওই পানশালায় দেহব্যবসা চালানো হতো। দেহব্যবসার মূলচক্রী পানশালার মালিক ধরম পাশোয়ানকে জেরা করে নারী পাচার চক্র সম্পর্কে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিস। ধরম পাশোয়ানের ছয় দিন পুলিস হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অভিযুক্ত ধরম পাশোয়ান বলেন, মাত্র চার মাস হল পানশালাটি খুলেছিলাম। কোনও অনৈতিক কার্যকলাপ সেখানে হয় না। কম সময়ে পানশালাটি ভালো পসার করায় ব্যবসায়িক কারণে পুলিসকে ভুল বুঝিয়ে আমার পিছনে লাগানো হয়েছে। এখনও অনেক নামীদামি হোটেল, পানশালায় দেহব্যবসা রমরমিয়ে চলছে।
গতমাসে জলপাইগুড়ির এক পানশালায় অভিযান চালিয়ে নারী পাচার চক্রের বড় পর্দা ফাস করে পুলিস। ওই পানশালা থেকে একাধিক মেয়ে উদ্ধারের পাশাপাশি ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের জেরা করে পুলিস পানশালার মালিক ধরম পাশোয়ানকে মঙ্গলবার রাতে কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার করে। পুলিস সূত্রে জানা গেছে, একদা বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া পুষ্পা রায় ও তার স্বামী শিল্টুর মদতেই চলত এই চক্র। তারাই মূলত ভিন জেলা থেকে মেয়েদের চাকরির আশ্বাস দিয়ে পানশালায় নিয়ে আসত। পানশালার মালিকের মদতে চলত অবৈধ কার্যকলাপ। ১৩জন মেয়েকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও আরও অনেক মেয়েকেই সেখানে অবৈধ কাজে নামানো হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান। নারী পাচারের সহযোগিতা ছাড়াও এই চক্রে জড়িত আরও চাঁইদের ধরতে ধরমকে জেরা করতে চায় পুলিস। এই ঘটনার তদন্ত যে পথে এগচ্ছে তাতে আরও বড় চক্রের হদিশ মিলতে পারে বলে পুলিসের ধারণা।