বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
ডুয়ার্সের পরিবেশপ্রেমী সুজিত দাস, ভিক্টর বসু সহ অন্যান্যরা বলেন, গত কয়েক বছরে নদী থেকে মাছ ধরার ধরণ অনেকটা পাল্টে গিয়েছে। আগে জলে কীটনাশক ফেলে মাছ ধরা হতো। বিভিন্নভাবে প্রচার করে এটা থেকে মাছ শিকারিদের দূরে সরানো গিয়েছে। ব্যাটারি চালিত ইলেক্ট্রিক শক দিয়ে অনেক দিন ধরেই মাছ ধর হচ্ছে। এতেও ছোট বড় সব মাছ মারা যাচ্ছে। আমরা এব্যাপারে প্রচারে নেমেছি। কিন্তু প্রশাসনকেও প্রচারে নামার পাশাপাশি যারা এসব করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
নাগরাকাটার বিডিও স্মিতা সুব্বা বলেন, আমরা নদীর মাছ বৃদ্ধিতে পোনা ছাড়ছি। কেউ যাতে বেআইনিভাবে ঝুঁকি নিয়ে মাছ না ধরেন সেব্যাপারেও প্রচার চলছে। ব্যাটারি দিয়ে জলে তড়িৎ প্রবাহ তৈরি করে কেউ মাছ না ধরেন সেটাও বলা হয়েছে। যারা মানছেন না তাদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই অভিযান শুরু হবে।
একসময় ডুয়ার্সের প্রায় সবক’টি নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ঘুরে বেড়াতে দেখা যেত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চাহিদা মেটাতে অবৈধভাবে বিভিন্ন উপায়ে মাছ ধরা শুরু হয়ে যায়। ফলে গত কয়েক বছরে ডুয়ার্সের নদী থেকে একে একে বেশ কয়েকটি প্রজাতির নদীয়ালি মাছ হারিয়ে গিয়েছে। ডুয়ার্সের তিস্তার পর জলঢাকা নদী সব চাইতে বড় নদী। একসময় এই নদীতে এক কুইন্টালেরও বেশি ওজনের বাঘা আড় মাছ মাঝেমধ্যেই পাওয়া যেত। এমনকি জলঢাকা সেতুর উপর থেকেও সেই মাছ দেখতে মানুষের ভিড় জমে যেত। সব চাইতে সুস্বাদু মাছ মহাশৈল এক সময় প্রচুর পাওয়া যেত এই নদীতে। কিন্তু সেই মাছগুলি এখন আর দেখা যায় না। এর মূল কারণই ছিল নদীতে কীটনাশক দিয়ে ছড়িয়ে মাছ ধরার প্রবণতা। এভাবে মাছ ধরা বেআইনি এটা বিভিন্নভাবে প্রচার করায় ধীরে ধীরে এথেকে মাছ শিকারিরা সরে আসেন। এখন মাছ শিকারিরা পিঠে ব্যাটারি বেঁধে তার থেকে দু’টি তার বের করে সেই তার মাছের ঝাঁকে ফেলে বিদ্যুৎ দিয়ে মাছ ধরা চলছে। দীর্ঘদিন ধরেই এভাবে মাছ ধরা চললেও তা রুখতে প্রশাসন উদ্যোগী না হওয়ায় অচিরেই নদীয়ালি মাছই হরিয়ে যাবে এমনটাই পরিবেশপ্রেমীরা আশঙ্কা করছেন।
ডুয়ার্সের তিস্তা, লিস, ঘিস, আন্ধাঝোরা, মাল, নেওড়া, কুর্তি, মূর্তি, জলঢাকা, সুখানি, ঘাঠিয়া, ডায়না সহ সবক’টি নদীতে একসময় প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। এসবের মধ্যে পুঁটি, পাবদা, মহাশৈল, চিংড়ি, মাগুর, সিঙি, আড় সহ নানান প্রজাতির নদীয়ালি মাছ মিলত। কিন্তু বেআইনিভাবে এমন পদ্ধতিতে মাছ মারায় এখন বাঘা আড়, সরপুঁটি সহ কয়েক ধরনের মাছ প্রায় হারিয়ে গিয়েছে।