বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
মালদহের পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, জখম এবং ধৃত ব্যক্তি বন্ধু ছিলেন। দু’জনে একসঙ্গে নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসা করতেন। ব্যবসার আড়ালে তাঁরা পণ্যবাহী ট্রাককে টোল প্লাজা ফাঁকি দিতে সাহায্য করতেন। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পিটিএস মোড় থেকে ট্রাকগুলিকে ঘুরপথে নিয়ে গিয়ে ১৬ মাইল এবং ১৭ মাইলের মোড়ে পৌঁছে দিতেন তাঁরা। বিনিময়ে ট্রাকচালকদের কাছ থেকে কমিশন নিতেন। এদিন ভোরে দু’জনে এক জায়গায় দেখা করেন। সেখানেই টাকা-পয়সা নিয়ে দু’জনে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। ঠিক কী কারণে তাঁদের ঝগড়া হয়েছিল তা এখনও স্পষ্ট করে জানা যায়নি। সনাতনের কাছে ৭.৬২ এমএম পিস্তল ছিল। বেআইনিভাবে সেই আগ্নেয়াস্ত্র তিনি জোগাড় করেছিলেন। ভুল করে ট্রিগারে চাপ পড়ে গিয়েছিল বলে ধৃতের দাবি। ইচ্ছাকৃতভাবেই গুলি চালানো হয়েছিল কীনা, তা পুলিস তদন্ত করে দেখছে। জখমকে ইংলিশবাজার শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে সনাতনের হাতে ‘গান পাউডারের’ (বন্দুক থেকে গুলি চলার পর বারুদের অবশিষ্টাংশ) নমুনা পাওয়া গিয়েছে। তাঁর হাতের ছাপ নেওয়া হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্রের বাঁটে থাকা হাতের ছাপের নমুনার সঙ্গে তা পরীক্ষা করা হবে।
পুলিস এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্তোষ এবং সনাতন বৈষ্ণবনগর থানার সতেরো মাইল এলাকার বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা একসঙ্গে নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসা করতেন। তবে ওই ব্যবসার আড়ালে টোল প্লাজা ফাঁকি দেওয়ার কারবারেও জড়িত ছিলেন তাঁরা। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের টোল প্লাজা এড়িয়ে ট্রাকচালকরা ঘুরপথে যাতায়াত করে। সেই কাজে ওই দু’জন চালকদের সহযোগিতা করতেন। বদলে চালকদের কাছ থেকে তাঁরা টাকা নিতেন। সেই টাকার বখরা নিয়ে সম্প্রতি বিবাদের সূত্রপাত হয়। এদিন ভোরে বাইক নিয়ে সন্তোষ বাড়ি থেকে বের হন। সনাতনের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। টাকা-পয়সা নিয়ে দু’জনের বচসা হয়। অভিযোগ, বচসার মাঝে সনাতন আগ্নেয়াস্ত্র বের করেন। প্রথমে তিনি বাঁট দিয়ে সন্তোষের মাথায় মারেন। পরে সনাতন তাঁর বন্ধুকে লক্ষ্য করে গুলি চালান বলে অভিযোগ। ঘটনার পর সনাতন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে তাঁকে বৈষ্ণবনগর থানার পুলিস গ্রেপ্তার করে।
গুলিবিদ্ধ যুবকের স্ত্রী পুনম মণ্ডল বলেন, সনাতনের সঙ্গে আমার স্বামী আগে যৌথভাবে নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসা করত। কিছুদিন হল ব্যবসা ভাগ হয়ে যায়। সন্তোষ আর সনাতনের সঙ্গে সেভাবে যোগাযোগ রাখতেন না। তার ফলে সনাতনের রাগ হয়। তিনি এর আগে একবার বাড়িতে এসে শাসিয়েও গিয়েছিলেন। তখন আমার স্বামীকে গুলি করে খুন করার হুমকি দিয়েছিলেন। এদিন লোকজনের মুখে স্বামীর গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাই। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে সন্তোষকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। আমরা তাঁকে ইংলিশবাজার শহরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করি। স্বামীর অবস্থা স্থিতিশীল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। ব্যবসার আড়ালে দু’জনে টোল প্লাজা ফাঁকি দিতে ট্রাকচালকদের সাহায্য করত কীনা, তা আমার জানা নেই। তবে স্বামী কোনও বেআইনি কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল না বলে আমি বিশ্বাস করি।