বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
মালদহের বিভিন্ন ব্লকে ইতিমধ্যেই জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু করেছেন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা। ইংলিশবাজারের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ, মোথাবাড়ির বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন, গাজোলের বিধায়ক দীপালি বিশ্বাসরা ইতিমধ্যেই পুরোদস্তুর জনসংযোগের কাজে নেমে পড়েছেন। নিজ নিজ বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে তাঁরা সাধারণ নাগরিকদের বাড়িতে খাওয়ার পাশাপাশি রাত্রিবাসও করছেন গ্রামীণ এলাকায়। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কাজের সুবিধা মানুষ সঠিকভাবে পাচ্ছেন কি না, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ক্ষেত্রে তাঁদের প্রাপ্য ভাতা সময়মতো মিলছে কি না এসব জানার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনমুখী কর্মসূচিগুলি তাঁদের কাছে গিয়ে বিশদে ব্যাখ্যা করছেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। জেলায় এই জনসংযোগ কর্মসূচির সার্বিক দায়িত্বে থাকা তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৌসম নুরের দাবি, অভাবনীয় সাড়া মিলছে এই কর্মসূচিতে। সাধারণ মানুষের এই বিপুল সমর্থন আগামী দিনে তৃণমূলকে বড়সড় রাজনৈতিক সুবিধা দেবে বলে আত্মবিশ্বাসী মৌসম।
অন্যদিকে আন্দোলনে নেমে পড়েছে কংগ্রেসও। এক সময়ের রাজনৈতিক দুর্গ মালদহে পায়ের তলা থেকে সমর্থনের মাটি ক্রমশ সরছে বুঝতে পেরে লাগাতার আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি ও বিধায়ক মোস্তাক আলম। পঞ্চায়েত স্তর থেকে জেলা স্তর পর্যন্ত এই আন্দোলনের মাধ্যমে তৃণমূল বিরোধী মানুষকে নিজেদের দলের ছাতার তলায় নিয়ে আনা সম্ভব হবে বলেই ধারণা কংগ্রেস নেতৃত্বের। সেই লক্ষ্যেই প্রদেশ কংগ্রেস এমনকী সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেতৃত্বকে এই আন্দোলনের মঞ্চে হাজির করিয়ে মালদহবাসীকে জোরালো বার্তা দিতে চাইছে কংগ্রেস। মোস্তাক আলম বলেন, আন্দোলনের রাস্তাতে হেঁটেই আমরা মালদহের মানুষকে বুঝিয়ে দেব যে, তৃণমূলের স্বৈরাচার ও বিজেপির সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষমতা শুধু কংগ্রেসেরই রয়েছে। এদিকে পুর পরিষেবাকে সামনে রেখে শহর এলাকায় কিছু আন্দোলন করে নিজেদের প্রাসঙ্গিক রাখার চেষ্টা শুরু করেছে জেলা সিপিএম নেতৃত্বও।
তবে অন্য দলগুলির এই জনসংযোগ বা আন্দোলন কর্মসূচিকে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দিচ্ছে না বিজেপি। সম্প্রতি মালদহের দু’টি লোকসভা কেন্দ্রেরই নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ম্যারাথন বৈঠক সেরেছেন বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নেতা তথা রাজ্যে দলের সহকারী পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন। সেই বৈঠকে অত্যন্ত সুকৌশলে এবং নীরবে তৃণমূল, কংগ্রেস ও সিপিএমের মোকাবিলা করার বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলা বিজেপি সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, তৃণমূলের নেতারা ঢাকঢোল পিটিয়ে, ক্যামেরা, মাইক্রোফোন নিয়ে গ্রামে যাচ্ছেন। সারা রাজ্যের সঙ্গে মালদহেও এই ফাঁপা কর্মসূচি করে লড়াইয়ে ফিরতে চাইছে তৃণমূল। কিন্তু ওই দলের নেতারাও জানেন, এই ধরণের কর্মসূচি কতটা অন্তঃসারহীন। সবটাই সাজানো একটি নাটক। মানুষ এইসব দেখছেন আর মুখ টিপে হাসছেন। তাঁরা জানেন নীরবে, এত প্রচার না করে বিজেপি ও তার শাখা সংগঠনের কর্মীরা বিগত কয়েক বছর ধরে কীভাবে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছেন। এই নিবিড় জনসংযোগ এবং নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহের অভূতপূর্ব সুশাসন ও সাংগঠনিক নেতৃত্বের ফল মালদহের সাম্প্রতিক বিধানসভা উপ নির্বাচন ও লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে প্রতিফলিত হয়েছে। মালদহের মানুষ দু’হাত তুলে বিজেপি’কে আশীর্বাদ করেছেন। সুতরাং তৃণমূলের রাজনৈতিক জনসংযোগই হোক কিংবা কংগ্রেস বা সিপিএমের লোক দেখানো আন্দোলন, কিছুই মালদহে বিজেপির এই উত্থান প্রতিহত করতে পারবে না বলে দাবি বিজেপির জেলা সভাপতির।