গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডালখোলা থানার রানিগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা উদয় সিংহের সঙ্গে সাত বছর আগে সান্ত্বনাদেবীর বিয়ে হয়েছিল। বছর দুই আগে থেকে উদয়বাবুর বাড়িতে রাকেশের যাতায়াত বেড়ে যায়। ১১ মাস আগে উদয়বাবুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। স্বামীর মৃত্যুর কয়েক মাস পর থেকেই সম্পর্কিত দেওর রাকেশের বাড়িতে সান্ত্বনাদেবী স্বামী স্ত্রীর মতো থাকতে শুরু করেন। স্বামীর জমানো ও জমি বিক্রির ২০ লক্ষ টাকা ডালখোলার একটি ব্যাঙ্কে জমা ছিল। বউদিকে অবৈধ সম্পর্কের জালে জড়িয়ে রাকেশ গত ছয় মাস ধরে ওই টাকা হাতাতে শুরু করে বলে অভিযোগ। সান্ত্বনাদেবীর ভাই মঙ্গল লালা বলেন, দিদির কাছ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা গত ছয় মাসে রাকেশ হাতিয়ে নিয়েছে। ওই টাকা হাতাতে সে নিয়মিত দিদির উপর অত্যাচারও করত। কিন্তু টাকার জন্য শেষপর্যন্ত দিদিকে এভাবে খুন করবে ভাবতে পারিনি। ডালখোলা থানায় এনিয়ে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছি। এই মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে পুরো রানিগঞ্জ গ্রাম। বাসিন্দারা সকলেই ওই ঘটনায় রাকেশের চরম শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন। বাসিন্দাদের সন্দেহ সান্ত্বনার স্বামী উদয়বাবুর মৃত্যুও রহস্যজনক। এলাকায় সমাজবিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত থাকায় বাসিন্দারা ভয়ে এতদিন রাকেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পেতেন না।
স্থানীয় বাসিন্দা ও মৃতের পরিবারের সদস্যরা এদিন জানিয়েছেন, শনিবার সকালে সান্ত্বনা ডালখোলায় ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে যান। আগের রাতে রাকেশের সঙ্গে তাঁর প্রচণ্ড গণ্ডগোল হয়। বাসিন্দারা বলেন, শনিবার সান্ত্বনা একটি বাসে চেপে ডালখোলায় গিয়েছিলেন। রাকেশ তার মোটরবাইকে যেতে জুলুম করছিল। কিন্তু তিনি বাইকে যাননি। রাকেশ পিছন পিছন বাইকে ডালখোলায় যায়। টাকা তোলার পর সান্ত্বনাদেবী একটি টোটোতে চেপে বাড়ির দিকে রওনা হন। রাকেশ ফের তাঁর পিছু নিয়ে কিছুদূর এসে জোর করে টোটো থেকে নামিয়ে বাইকে উঠতে বাধ্য করে। জোর করে বাইকে তুলে কিছুদূর এসে শীষাটোলার জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। সেখানেই সান্ত্বনাদেবীর মাথার পিছন থেকে রক্ত ঝরতে দেখেন স্থানীয়রা। তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে স্থানীয়রা রাকেশকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাপ দেয়। রাকেশ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে। গ্রামবাসীরা ঘটনা দেখে রাকেশকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাপ সৃষ্টি করেন। কিন্তু দোমোহনায় গিয়ে হাতুড়েকে দেখালে মৃত বলায় সে ফের বাড়িতে আসতে চায়। গ্রামবাসীরা সান্ত্বনার দেহ নিয়ে রাকেশকে করণদিঘি হাসপাতালে যেতে বাধ্য করেন। সেখানে চিকিৎসকরা দেখে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রাকেশ গ্রামবাসীদের কাছে দাবি করে সান্ত্বনা তার মোটরবাইক থেকে পড়ে গিয়ে জখম হয়েছে। হাসপাতালে মৃতদেহ রেখে রাকেশ বাড়িতে চলে যায়। এই ঘটনায় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। যদি বাইক দুর্ঘটনা ঘটে তবে রাকেশ অক্ষত থাকে কীভাবে? রাকেশ প্রথমে যখন সান্ত্বনাকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়িতে নিয়ে এসেছিল তখন বাসিন্দাদের সামনেই রাকেশ তার আত্মীয়কে মোটা টাকার একটি বান্ডিল রাখতে দেয়। এই ঘটনায় মৃতের ভাই খুনের অভিযোগ করায় রাতেই ডালখোলা থানার পুলিস রাকেশকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিস জানিয়েছে এটি খুনের ঘটনা।