বিএনএ, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, নকশালবাড়ি: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যারেজ থেকেই চুরি হল তাদের একটি গাড়ি। রবিবার সকালে গ্যারেজে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা ঘটনাটি বুঝতে পারেন। নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন থাকার পরেও এমন ঘটনায় বিভিন্ন মহল বিস্মিত। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এই ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ড বিভাগের অফিসার ইনচার্জের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি মাটিগাড়া থানার পুলিস ঘটনাটি নিয়ে তদন্তে নেমেছে। এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিস গাড়িটির হদিশ পায়নি। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিসের সন্দেহ, এই অপারেশনের সঙ্গে নেপাল কিংবা বিহারের গাড়ি পাচারচক্র জড়িত আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দিলীপকুমার সরকার বলেন, গাড়ি চুরির ঘটনা নিয়ে ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ড বিভাগের ওসি’র কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বিভাগীয় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। চুরির ব্যাপারে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ড বিভাগের অফিসার ইনচার্জ সজল চক্রবর্তী বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পেশ করা হবে। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডেপুটি পুলিস কমিশনার (পশ্চিম) অতুল ভি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাটি নিয়ে নির্দিষ্ট মামলা রুজু করা হয়েছে। সমস্ত দিক গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই তাদের গ্যারেজ রয়েছে। অন্যান্য দিনের মতো এদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মী গ্যারেজ চত্বরে পায়চারি করতে গিয়ে চুরির বিষয়টি আঁচ করেন। খবর পেয়ে রেজিস্ট্রার সহ আধিকারিকরা ও পুলিস ঘটনাস্থলে যান। শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে গ্যারেজে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ গাড়ি পার্কিং করা হয়। বাস, অ্যাম্বুলেন্স ও ছোট গাড়ি মিলিয়ে সেখানে ১৬টি গাড়ি ছিল। উপাচার্য, রেজিস্ট্রার সহ বিভিন্ন আধিকারিকদের গাড়িও রাখা ছিল। সকালে দেখা যায়, একটি গাড়ির তালা ভাঙা, দরজা খোলা। অফিসারদের ব্যবহারের একটি গাড়ি নেই। সেটি সাদা রঙের ছিল। ২০১৫ সালে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা দিয়ে সেটি কেনা হয়।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিভিন্ন মহলের বক্তব্য, নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন থাকলেও একাংশ এলাকা অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। একাংশে সীমানা প্রাচীর নেই। তাছাড়া গ্যারেজ চত্বরে সিসিটিভি ক্যামেরাও নেই। এমন ঢিলেঢালা নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়েই দুষ্কৃতীরা গাড়িটি চুরি করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অরক্ষিত নিমতলা দিয়েই গাড়ি নিয়ে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যেতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল, বিকেল ও রাত তিনটি শিফ্টে মোট ২৫ জন নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়। যার মধ্যে গ্যারেজ চত্বরেই থাকেন পাঁচজন। গ্যারেজ চত্বরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মীর দাবি, তিনি গাড়িটি নকশালবাড়ির দিকে দুষ্কৃতীদের নিয়ে যেতে দেখেছেন। পুলিসকে সেটা জানানো হয়েছে। পুলিসের সন্দেহ, স্থানীয় দুষ্কৃতীদের সহযোগিতায় নেপাল কিংবা বিহারের গাড়ি পাচারকারীরা সেটি চুরি করেছে।