পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
নিয়ম অনুসারে কৃষি জমি নিজের নামে থাকলেই সেই কৃষককে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসতে হবে এমন নির্দেশিকা রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে জেলা জুড়ে গ্রামগঞ্জের কৃষকরা এই সুযোগ পরিবারের অন্যদের পাইয়ে দিতে পরিবারের সদস্যদের নামে জমি লিখে দেওয়ার হিড়িক পড়েছে। গত কয়েক দিনে জেলাজুড়ে প্রায় ৯১ হাজারের বেশি আবেদন কৃষি দপ্তরে জমা পড়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কৃষি দপ্তরের মুখ্য অধিকর্তা জোর্তিময় বিশ্বাস বলেন, এমন কৌশল অবলম্বন করলেও আমাদের কিছু করার নেই। নিয়ম অনুসারের কৃষি জমি যাদের নামে আছে তারাই এই প্রকল্পের সুযোগ সুবিধে পাবে। আপাতত আমাদের কাছে ৯১ হাজারের বেশি আবেদন জমা পরেছে। এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।
কৃষক বন্ধু প্রকল্পে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, কোনও কৃষকের এক কাঠা জমি থাকলেই তাঁকে বছরে দুই হাজার টাকা প্রদান করা হবে। দুই একর পর্যন্ত যাদের জমি রয়েছে তাদের পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলেও তিনি ঘোষণা করেছেন। সেইমতো সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী জেলায় জেলায় কাজ শুরু হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় সেকাজ চলছে জোরকদমে।
কৃষি প্রধান দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তিন লক্ষের বেশি কৃষক রয়েছে। এই প্রকল্পের সুযোগ নিতে ইতিমধ্যে কৃষকদের মধ্যে কৃষি দপ্তরে আবেদন পত্র জমা দেওয়ার হিড়িক পড়েছে। এরমধ্যে অনেকে নিজে প্রকল্পের সুযোগ নেওয়ার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের এই প্রকল্পের সুযোগ দিতে নয়া কৌশল হাতিয়ার করেছে। গ্রামগঞ্জের অধিকাংশ কৃষকের চার একরের বেশি জমি রয়েছে। প্রকল্প অনুযায়ী এক কাঠা জমি থাকলেই বছরের দুই হাজার টাকা ও দুই একর পর্যন্ত জমি থাকলে বছরে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাবে। এই অবস্থায় গ্রামগঞ্জের কৃষক যাদের জমির পরিমাণ বেশি রয়েছে তাঁরা বাড়ির অন্যদের এই প্রকল্পের সুযোগ দিতে পরিবারের অন্যদের নামে জমি লিখে দিচ্ছে। অনেকে স্ত্রী বা পরিবারের অন্য কোনও সদস্যের নামে দুই একর পর্যন্ত জমি লিখে দিচ্ছে। কোনও কৃষকের ছয় বিঘা জমি থাকলে তিনি সরকারি প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী বছরে পাঁচ হাজার টাকা পাবেন। কিন্তু ওই পরিমাণ জমিই পরিবারের তিনজনের নামে দুই বিঘা করে ভাগ করে দিলে সেই পরিবার ওই পরিমাণ জমি থেকে বছরে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করতে পারছে। এমনই চল শুরু হয়েছে জেলায়। কৃষকরা সরকারি টাকা পেতে এমন কৌশল নিলেও কৃষি দপ্তরের হাত-পা বাঁধা। দপ্তর তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না। কৃষি জমির পরচা থাকলেই সেই জমির মালিককে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের সুযোগ দিতে দপ্তর বাধ্য। কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা সরকারি প্রকল্পের সুযোগ নেওয়ার জন্য কৃষকদের এই চাতুরি বুঝতে পারলেও আবেদন নিতে বাধ্য হতে হচ্ছে।