কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
শিলিগুড়ি শহরের উপকণ্ঠেই মাটিগাড়া এলাকা অবস্থিত। এই এলাকার একদিকে রেললাইন, আর একদিক দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে চামটা নদী। রেল লাইন ও নদীর মাঝখান দিয়ে বিস্তৃত ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক। এই এলাকাতেই উত্তরায়ণ উপনগরি। সেখানে শপিংমল, নার্সিংহোম, হোটেল প্রভৃতি রয়েছে। মাটিগাড়া তো বটেই সমগ্র শিলিগুড়ি মহকুমার ব্যস্ততম এলাকাগুলির মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপনগরি অন্যতম। এখানে দিনে প্রচুর লোকের সমাগম হয়। পাশেই পরিবহণ নগর, বিশ্বাসপাড়া, খাপরাইল মোড়, মাটিগাড়া প্রভৃতি এলাকা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাকে কেন্দ্র করেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে ড্রাগ মাফিয়ারা। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রেল লাইনের ধারে বসে গাঁজা ও হেরোইন বিক্রি করছে মাদক কারবারিরা। এমনকী, পরিবহণ নগরের কিছু ঝুপড়ি চায়ের দোকানে, রাস্তার হোটেলে কারবারিদের ঠেক রয়েছে। সাঙ্কেতিক নামে তারা গাঁজা ও হেরোইন বিক্রি করছে। যার দামও অস্বাভাবিক।
বিভিন্ন সময় ধৃত মাদক কারবারিদের বয়ান ডি-কোড করে পুলিস জানতে পেরেছে, গাঁজার সাঙ্কেতিক নাম ‘পাতা’। এলাকার কিছু চা ও পানের দোকানে যা সহজেই মেলে। আর ‘লামা’ ও ‘পুড়িয়া’ নামে বিক্রি হচ্ছে হেরোইন। এগুলি অবশ্য চায়ের দোকানে সরাসরি মেলে না। চা বা পানের দোকনের খোঁজ করলেই হেরোইন কারবারিরা হাজির হয়ে যায়। কারণ, চায়ের দোকানেই থাকে কারবারিদের লিঙ্কম্যান। এগুলি ৫০ থেকে ১০০ টাকার পুরিয়া হিসাবে বিক্রি হয়। এভাবেই মাটিগাড়া থানার বিশ্বাসপাড়া, রেললাইন, সিটি সেন্টার, পরিবহণ নগর প্রভৃতি এলাকায় দিনভর চলে মাদক কারবার। রাতে তা আরও বেড়ে যায়। মাটিগাড়া থানার এক অফিসার বলেন, সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলির উপর নজর রাখা হয়েছে। পাশাপাশি মাদক কারবারের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীদেরও সচেতন করা হচ্ছে।
মাটিগাড়া এলাকায় মাদক কারবারিরা সক্রিয় হয়ে ওঠায় গ্রামবাসীদের একাংশ রীতিমতো উদ্বিগ্ন। তাঁরা বলেন, রেল লাইন, নদীর ধারে এবং পরিবহণ নগরে পার্থেনিয়াম গাছে জঙ্গলে বসে মাদক সেবনের ঠেক। দিনমজুরদের পাশাপাশি কিশোর ও যুবকরাও নেশায় আশঙ্ক হচ্ছে। কেউ সিগারেটের মাধ্যমে, কলকের মাধ্যমে, আবার কেউ কেউ ইনজেকশনের মাধ্যমে গাঁজা ও হেরোইনের নেশা করছে। নেশার ছোবলে বিপদগামী হচ্ছে যুবকরা। পুরুষদের পাশাপাশি কিছু মহিলাও এই কারবারে জড়িয়ে পড়েছে। ড্রাগ মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে বিজেপি। তারা মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছে। তাদের অভিযোগ, মাদক কারবারিদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধিতে গ্রামের সুস্থ পরিবেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
মাটিগাড়া থানার পুলিস জানিয়েছে, মাদক কারবারের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে গত ছ’মাসে ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। যার মধ্যে কয়েকজন মহিলাও রয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনকে অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। আর কয়েকজনকে মাদক কারবার চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। যাদের বিরুদ্ধে এনডিপিএস আইনে মামলা চলেছে। ধৃতদের কয়েকজন জেলে রয়েছে। কাজেই মাদক কারবারের বিরুদ্ধে পুলিস সতর্ক রয়েছে।