বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
অন্য জেলা থেকে আসা ফেরিওয়ালারা সাইকেল চালিয়ে গোটা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় রমরমিয়ে ব্যবসা করছেন। বাড়িতে পড়ে থাকা মোবাইল ফোন, বা স্মার্ট ফোনের চার্জার বদলে তাঁরা দিচ্ছেন স্টিলের বাসন। অনেকের কাছেই পুরনো মোবাইল ফোন রয়েছে। সেসব দিয়ে বাসন নেওয়ার চাহিদাও তাই বেড়েছে।
মুর্শিদাবাদের ফেরিওয়ালা ফিরোজ শেখ বলেন, আগে শাড়ি দিয়ে বাসন দিতাম। বহুদিন ওই ব্যবসা চলেছে। এখন আর কেউ শাড়িকাপড় দেন না। একসময়ে মাথার চুল সংগ্রহ করে বাসন দিতাম। এখন সকলেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। এক নয় একাধিক ফোন থাকে মানুষের ঘরে ঘরে। একটু পুরনো হলেই বদলে ফেলেন। ভেঙে গেলে রেখে দেন। সেই সব পুরনো মোবাইল ফোন নিয়ে আমরা বাসন দিচ্ছি। গ্রাম-শহর সর্বত্রই পুরনো মোবাইল খুব সহজেই পাওয়ায় যাচ্ছে। মহাজনের ঘর থেকে ওসব পুরনো মোবাইল চলে যায় কলকাতার বিভিন্ন কোম্পানিতে। একবছর ধরে আমরা ২০-২৫ জন এই জেলায় ব্যবসা করছি। গঙ্গারামপুরের গৃহবধূ সবিতা সাহা বলেন, বছরখানেক ধরে পুরনো মোবাইল ফোন দিয়ে বাসন মিলছে। ঘরে পড়ে থাকা খারাপ মোবাইল ফোন দিয়ে বাসন পেয়ে আমরা খুশি।
মুর্শিদাবাদ জেলার একদল ফেরিওয়ালা জেলার শহর থেকে গ্রাম সর্বত্রই সাইকেল চালিয়ে ঘুরছেন। তাঁদের সাইকেলের ক্যারিয়ারে বাসন বোঝাই করা রয়েছে। মোবাইল ফোনের পরিবর্তে বাটি, চাইনিজ বড়মাপের ফোন নিয়ে টিফিন বক্স, বড়ো সাইজের বাটি দেওয়া হচ্ছে। যদি অ্যানড্রয়েড ফোন কেউ দেন তবে ভালো মানের স্টিলের থালা, টিফিন বক্স দেওয়া হচ্ছে। সচল, অচল, ভাঙা সবধরনের ফোনই তাঁরা নিচ্ছেন।
এঁরা সকলেই কমবেশি ফোন মেরামত করতে জানেন। তাই ওসব ফোন নিয়ে নিজেরাই প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে দেখন চলবে কি না। এরমধ্যে কোনও ফোন মেরামত করা সম্ভব হলে তাঁরাই সেটি মেরামত করে বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন। যেসব ফোন তাঁদের পক্ষ মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না সেসব তাঁরা বহরমপুরে গিয়ে যাঁর কাছ থেকে বাসন আনছেন তাঁদের দিয়ে আসছেন। মাসে একবার দু’বার করে তাঁরা মুর্শিদাবাদে যান ওসব দিতে।
যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফেরিওয়ালারা তাঁদের ব্যবসাতেও পরিবর্তন এনেছেন। একসময়ে কাপড় দিয়ে বাসন বিক্রি করা হতো। দীর্ঘ কয়েকবছর এই কাজ তাঁরা করেছেন। পরবর্তীতে মাথার চুল নিয়ে ফেরিওয়ালারা বাসন দিতেন। কখনও তা দাঁড়িপাল্লায় ওজন মেপে টাকাও দিতেন। এখন পুরনো অচল, ভাঙা কিংবা ব্যাটারি খারাপ হয়ে বাড়িতেই পড়ে থাকা মোবাইল ফোন ফেরিওয়ালারা সংগ্রহ করে সেই বাসনই দিচ্ছেন। শুধু মোবাইল ফোনই নয়, তাঁরা মোবাইল ফোনের চার্জার নিয়েও বাসন দিচ্ছেন। গ্রাম-শহরে ফেরিওয়ালার এই নতুন হাঁক বেশ আলোড়নও ফেলেছে।