সংবাদদাতা, বালুরঘাট: ২১ জুলাই কলকাতায় শহিদ দিবসে যোগ দিতে ৬০ হাজার কার্ড বিলি করেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। এই বিপুল সংখ্যক নেতা কর্মীকে কলকাতায় কীভাবে নিয়ে যাওয়া হবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে তৃণমূল শিবির। জেলা থেকে কলকাতায় যাওয়ার ক্ষেত্রে হাতেগোনা দু’টি ট্রেন ও কয়েকটি বাস রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ভোরের ট্রেনে কয়েক হাজার কর্মীকে কলকাতায় পাঠিয়ে দিয়েছে নেতৃত্ব। বাকিদের শনিবার পর্যন্ত ট্রেনে কলকাতায় পাঠানো হবে। ট্রেনের সবাইকে পাঠানো সম্ভব না হওয়ায় অতিরিক্ত বাস ভাড়া করেছে জেলা তৃণমূল। কর্মীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেই দিক নজর দিয়ে অর্পিতা ঘোষ বিশেষ একটি কমিটি তৈরি করেছেন। নিজে কলকাতায় দাঁড়িয়ে থেকে জেলা থেকে যাওয়া কর্মীদের যাতে কোনও অসুবিধায় পড়তে না হয় তা খতিয়ে দেখছেন। তবে জেলার পরিবহণ ব্যবস্থার পরিকাঠামো না থাকায় একাধিক তৃণমূল নেতাকর্মী কলকাতায় যেতে না পেরে হতাশাও প্রকাশ করেছেন।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি অর্পিতা ঘোষ বলেন, ৬০ হাজার কার্ড বিলি হয়েছে। যদিও ৬০ হাজার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে যাওয়ার মতো পরিবহণ ব্যবস্থা জেলায় নেই। আমরা অতিরিক্ত বাস ভাড়া করেছি। আমি কলকাতায় আছি। বৃহস্পতিবার বিকেলে কয়েক হাজার কর্মী কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছে। তাদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেসব দিকে খেয়াল রাখতে হচ্ছে। জেলা তৃণমূলের সম্পাদক বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, অনেকে কার্ড চাইছে। কিন্তু আমরা আর কার্ড দিচ্ছি না। এবারের প্রচুর সমর্থক কলকাতায় যাওয়ার জন্য ইচ্ছে প্রকাশ করছেন। কিন্তু সবাইকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
প্রতিবছর ২১ জুলাই শহিদ দিবসে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা থেকে বিপুল সংখ্যাক তৃণমূল কর্মী সমর্থক কলকাতা যান। তাঁদের যাতায়াত, থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা দলের তরফে করা হয়। এবারের তৃণমূলের তরফে ৬০ হাজার কার্ড বিলি করা হয়েছে। সেই কার্ড বিলির পরেও আরও কার্ড নিচুতলার কর্মীরা চাইছেন। যদিও আর কার্ড দিতে চাইছে না তৃণমূল নেতৃত্ব। তাদের দাবি, যে সংখ্যাক কার্ড বিলি করা হয়েছে তাঁদেরকেই নিয়ে যাওয়া অসম্ভব হবে। ট্রেনের সংখ্যা কম থাকায় সবাইকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। সেই কারণে কর্মীদের যাতে যাতায়াতের কোনও সমস্যা না হয় সেই দিকে নজর দিয়ে নতুন করে আর কার্ড বিলি করা হচ্ছে না। ৬০ হাজার কর্মী কলকাতায় নিয়ে যেতে হিমশিম খাচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার সকালে অনেকে তেভাগা এক্সপ্রেস করে করে কলকাতায় রওনা দিয়েছেন। অন্য দিকে ট্রেনের কামরা পা রাখার জায়গা না থাকায় অনেকে এদিন বিকেলের ট্রেনে রওনা দেবেন বলে স্টেশন থেকে বাড়ি ফিরে এসেছেন। কিছু কিছু গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতৃত্ব ট্রেনে যাতায়াতের সমস্যার কারণে নিজে থেকে বাস ভাড়া করে কর্মীদের নিয়ে যাচ্ছে। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের তরফেও অতিরিক্ত বাস ভাড়া করা হয়েছে। প্রাইভেট গাড়ি নিয়েও অনেকে কলকাতার উদ্দেশে ইতিমধ্যে রওনা দিয়েছেন। কলকাতায় অর্পিতা ঘোষ আগে গিয়ে সব কিছু তদারকি শুরু করেছেন। জেলা থেকে আসা কর্মীদের যাতে কোন অসুবিধে না হয় তিনি স্টেশনের গিয়ে তাঁদের স্বাগত জানিয়ে থাকার জায়গায় পৌঁছে দিচ্ছেন। তাঁদের সমস্যা খতিয়ে দেখতে জেলার তৃণমূল নেতাদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করেছেন। সেই কমিটির সদস্যরা সব কিছু খতিয়ে দেখে কার কী সমস্যা হয়েছে তা সমাধান করার চেষ্টা করছেন।