পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
দলের অন্দরেই আলোচনা শোনা যায়, দল ক্ষমতায় আসার পর ধর্মতলার সভায় ভিড় বাড়ার পাশাপাশি জেলার নেতাদের মধ্যে রাজ্য নেতৃত্বের সামনে মুখ দেখানোর প্রবণতা শুরু হয়েছে। জেলাস্তরের প্রস্তুতি বৈঠক এবং মিছিলে উপস্থিত না থাকলেও ২১ জুলাইয়ের সভায় মুখ দেখানোর জন্য একদিন আগে থেকে অনেকে কলকাতায় গিয়ে ঘাঁটি গাড়েন। বলা বাহুল্য, ২১ জুলাই নিয়ে জেলায় প্রস্তুতি মিছিলে সবপক্ষকে মিলিয়ে জেলায় ব্যতিক্রমী হয়ে উঠলেন মৌসম। শুধু জেলা সদরেই নয় ব্লক স্তরে মিছিল করে কর্মসূচির উন্মাদনা একলাফে অনেকটা উচ্চতায় নিয়ে গেলেন তিনি।
এব্যাপারে মৌসম বলেন, ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতিতে আমরা জেলাজুড়ে মিছিল ও পদযাত্রার আয়োজন করি। এদিন বিকেল ৪টা নাগাদ একযোগে জেলার দুই শহর এবং ১৫টি ব্লকে মিছিল হয়। নিজ নিজ এলাকার মিছিলে নেতানেত্রীদের যোগ দিতে বলা হয়েছিল। সেইমতো সকলে মিছিলে অংশ নেন। ইংলিশবাজার শহরের মিছিলে শাখা সংগঠনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। এদিন রবীন্দ্র অ্যাভিনিউ থেকে বের হয়ে শহর পরিক্রমার পর পোস্ট অফিস মোড়ে মিছিল শেষ হয়। দলের ছাত্র সংগঠনের তরফেও এদিন শহরের মিছিলে আমি যোগ দিই। এদিনের কর্মসূচি সফল করার জন্য আমরা পরপর দুটি বৈঠক করেছিলাম। সুষ্ঠভাবে কর্মসূচি রূপায়ণের পিছনে দলীয় নেতৃত্ব এবং তৃণমূল কর্মীদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল।
২১ জুলাই কলকাতার সভায় মালদহ থেকে কত সংখ্যক তৃণমূল নেতাকর্মী যাবেন? মৌসম বলেন, সংখ্যাটা এখনও ঠিক হয়নি। তবে এবার রেকর্ড সংখ্যক লোক নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। এব্যাপারে ব্লক ভিত্তিক তথ্য চাওয়া হয়েছে। কোন ব্লক থেকে কত লোক যাবে তা দু-একদিনের মধ্যে জানা যাবে। নিজ নিজ এলাকা থেকে কর্মীদের কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্লক এবং শহর নেতৃত্ব পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর ২১ জুলাই কলকাতার ধর্মতলায় তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে শহিদ দিবস পালিত হয়। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওইদিন শহীদ তর্পণ করেন। দীর্ঘদিন ধরেই ঘাসফুল শিবির দিনটি পালন করে আসছে। রাজ্যে বিরোধী দল হিসাবে থাকার সময় বছরের ওই একটি দিনই কার্যত কেন্দ্রীয়ভাবে তৃণমূল বড় ধরনের সভার আয়োজন করত। ফলে রাজ্যের কোণায় কোণায় ছড়িয়ে থাকা তৃণমূল নেতাকর্মীরা ২১ জুলাইয়ের অপেক্ষায় বছরভর প্রহর গুণতেন। দলনেত্রীর বক্তব্য শোনার জন্য তাঁরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতেন। তৎকালীন শাসকদল সিপিএম ২১ জুলাই এবং তার আগের দিন থেকে এলাকার বাস স্টপেজ ও রেল স্টেশনগুলিতে নজরদারি চালাত। সভায় যাওয়া তৃণমূল কর্মীদের চিহ্নিত করার জন্য লালপার্টির লোকজন নজর রাখত। সিপিএমের লালচোখ উপেক্ষা করেই অবশ্য কাতারে কাতারে তৃণমূল কর্মী ধর্মতলার সভায় যেতেন। সভার দিন বৃষ্টি হলেও তা মাথায় নিয়েই কর্মীরা জমায়েত হতেন।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর বছরভর তৃণমূলের তরফে ছোটবড় নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়। কিন্তু তৃণমূল কর্মীদের কাছে ২১ জুলাইয়ের তাৎপর্য আগের মতোই রয়েছে। শুধু রাজ্য রাজনীতি হয়, এই সভা ইতিমধ্যে জাতীয় রাজনীতিরও নজর কেড়েছে।