বিদ্যায় সাফল্য ও হতাশা দুই-ই বর্তমান। নতুন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। মামলা-মোকদ্দমার কোনও পরিবেশ তৈরি ... বিশদ
তাদের বক্তব্য, যেভাবে এই বৈঠক নিয়ে বিরোধী দলগুলির জনপ্রতিনিধিদের ব্রাত্য করে রাখার মনোভাব দেখানো হয়েছে তাতে সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সব কয়টি প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদেরই এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কোনও ভাবেই কাউকে হেয় করার প্রশ্ন নেই।
উল্লেখ্য, মালদহ শহরের ভয়াবহ যানজট নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই তীব্র বিতর্ক চলছিল। এরপর বেআইনি টোটো ধরপাকড় নিয়ে জেলা প্রশাসন ও আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে মালদহ জেলা টোটো ও ই-রিকশ ড্রাইভারস’ ও অপারেটরস’ ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের পাশে দাঁড়ায় সিপিএম, কংগ্রেস, সিপিআই ও আরএসপি’র শ্রমিক সংগঠনগুলি। ২৯ জুন এক বৈঠকের পরে পুরসভা এলাকায় গ্রামীণ এলাকার টোটো ও ই-রিকশর প্রবেশ বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন ও পুলিস। এতে পরিস্থিতি নতুন করে জটিল হয়। ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করেন মালদহ দক্ষিণের সংসদ সদস্য আবু হাসেম খান চৌধুরি (ডালু)। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্যকে টোটো নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই বৈঠকই হতে চলেছে আজ।
তবে বৈঠকে আমন্ত্রিতদের তালিকা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তিন প্রধান বিরোধী দল। জেলা কংগ্রেস সভাপতি ও বিধায়ক মোস্তাক আলম বলেন, জেলা প্রশাসনের কর্তারা মালদহের সংসদ সদস্যদের বৈঠকে ডাকেনি। কংগ্রেস সাংসদ ডালুবাবু নিজে এই বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় হয়েছেন। অথচ তাঁকে উপেক্ষা করা হয়েছে। আমাদের চরম বিরোধী হলেও সাংবিধানিকভাবেই উত্তর মালদহের সংসদ সদস্যকেও বৈঠকে ডাকা উচিৎ ছিল। যিনি এই বিষয়টি তুলেছিলেন এবং টোটো বিতর্কে যাঁর বিধানসভা এলাকাও ভুক্তভোগী সেই কংগ্রেস বিধায়ক অর্জুন হালদারকে বৈঠকে ডাকা হয়নি। মানিকচকের বিধায়ক মোত্তাকিন আলম আদতে ইংলিশবাজারের যদুপুরের বাসিন্দা। তাঁর বাড়ির এলাকাতেও টোটো বিতর্কের প্রভাব পড়েছে। অথচ উপেক্ষা করা হয়েছে তাঁকেও।
কংগ্রেসের জেলা সভাপতি বলেন, মৌসম নুর তৃণমূলের জেলা সভাপতি হিসাবে বৈঠকে থাকতেই পারেন। কিন্তু রাজ্য মহিলা কমিশনের ভাইস চেয়ারপার্সন হিসাবে তাঁকে ডাকা হয়েছে। মহিলা কমিশনের টোটো সমস্যায় কী ভূমিকা রয়েছে তা বোধগম্য হচ্ছে না। সাংসদ, বিধায়কদের এই অসম্মান আমরা মানব না। জনপ্রতিনিধিদের উপেক্ষা করে টোটো সমস্যা যে মিটবে না তা প্রশাসন দ্রুত বুঝতে পারবে।
একই সুর শোনা গিয়েছে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও টোটো আন্দোলনের নেতা কৌশিক মিশ্রর গলাতেও। তিনি বলেন, আমরা আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি যে টোটো ও ই-রিকশ ড্রাইভার ও অপারেটরদের ইউনিয়নকে ডাকা হয়নি। শ্রমিক সংগঠনগুলিকেও ডাকা হয়নি। আমরা বিশ্বাস করি না এভাবে সমস্যার সমাধান হবে।
বিজেপি’র জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, তৃণমূল নেতারা টোটোর মদতদাতা ছিলেন। ঢালাও টোটো নিজেদের স্বার্থে ওরাই রাস্তায় নামিয়েছে। আবার ওঁরাই এখন সমাধান খুজছে। প্রশাসন তাঁদেরকেই গুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা বৈঠকে যাব। সমাধান না হলে প্রশাসন যে ভাষা বোঝে সেই ভাষাতেই আন্দোলন হবে।
জেলাশাসক অবশ্য বলেন, সব কয়টি প্রধান রাজনৈতিক দলকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সংসদ সদস্য, বিধায়করা তাঁদের দলের প্রতিনিধিত্ব করতেই পারেন। আমরা সকলের মতামতই শুনতে চাই।