গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, আমরা কাউকে কোনওদিন জোর করে দলে নিয়ে আসিনি। কয়েকজন স্বেচ্ছায় এসেছেন। কিন্তু বিজেপি রীতিমতো জোর করে, ভয় দেখিয়ে আমাদের জনপ্রতিনিধিদের ওদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তবে কেউই মন থেকে বিজেপিতে যাচ্ছেন না। প্রাক্তন মন্ত্রী সিপিএমের অনন্ত রায় বলেন, জোর করে দখল করার যে রাস্তা তৃণমূল দেখিয়েছিল সেই রাস্তাতেই এখন হাঁটছে বিজেপি। তৃণমূলের অস্ত্রতেই তৃণমূলকে বধ করছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সহ সভাপতি ব্রজ গোবিন্দ বর্মন বলেন, ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০টি পঞ্চায়েতের সিংহভাগ সদস্য আমাদের দিকে চলে এসেছেন। তুফানগঞ্জে দুটি পঞ্চায়েত সমিতিরও অনেকেই আমাদের দিকে এসেছেন। সকলেই স্বেচ্ছায় বিজেপিতে এসেছেন। কাউকে জোর করা হয়নি। তবে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল যে ধরনের সন্ত্রাস চালিয়েছিল তা জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই মানতে পারেননি।
সম্প্রতি জেলা জুড়ে একের পর এক পঞ্চায়েতের সদস্যরা দল বেঁধে বিজেপিমুখী হয়েছেন। তুফানগঞ্জের দুটি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরাও বিজেপিমুখী হয়েছেন। কারা বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এনিয়ে দলের অন্দরে কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। বিধায়ক, জেলা পরিষদের সদস্য, কাউন্সিলারদের নিয়েও নানা জল্পনা ছড়িয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বাম জমানার অবসান হওয়ার পর থেকেই কোচবিহারে কার্যত দখলের রাজনীতি শুরু করেছিল তৃণমূল। সেই সময় বামেদের ছাতার তলায় থাকা জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই পিঠ বাঁচাতে বিজেপিতে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। এরপর বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে গোটা জেলাকে বিরোধী শূন্য করার জন্য জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব রীতিমতো কোমর বেঁধে ময়দানে নামে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন গোটা জেলা জুড়ে তৃণমূলের ভয়াবহ দাপট দেখা গিয়েছিল। তুফানগঞ্জে মনোনয়ন দিতে যাওয়ার সময় বিজেপি কর্মীদের উপর রীতিমতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। সেই সময় থেকেই কোচবিহারের রাজনীতিতে তৃণমূলের মূল প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছিল বিজেপি। এমনকী পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েই বিজেপি প্রার্থীরা অসমে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। তৃণমূলের অত্যাচারে দিনের পর দিন ঘরছাড়া অবস্থায় পার্টি অফিসে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন বিজেপির নেতা কর্মীরা। মূলত ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সমস্ত স্তরকেই বিরোধী শূন্য করার ব্যাপারে তৃণমূল তৎপর হয়েছিল। এর সঙ্গেই দিনহাটা সহ জেলার বিভিন্ন গ্রামে পার্টি অফিস দখল করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল তৃণমূল। গোটা জেলা জুড়ে বিজেপি ও বামেদের একের পর এক পার্টি অফিস তৃণমূলের দখলে চলে গিয়েছিল। বাসিন্দাদের মতে, বর্তমানে তারই পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে বিজেপি। এদিকে দলের ভাঙন ঠেকাতে রীতিমতো হিমসিম খাচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজ্যস্তরের প্রতিনিধিরা এসেও কোনও লাভ হচ্ছে না। বর্তমানে পরিস্থিতিতে কীভাবে দলকে ধরে রাখা যাবে তা নিয়ে কোনও দিশা খুঁজে পাচ্ছেন না নেতারা। তবে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের একাংশ আতঙ্কিত হয়ে বিজেপিতে চলে যাচ্ছেন। মন থেকে কেউই বিজেপিতে যাচ্ছেন না।