কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
ডুয়ার্সের চালসার বাসিন্দা কর্মা মাহালি বলেন, রবিবার সকাল ১১ টা নাগাদ তিনি তার শিশু সন্তানকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। শিশুকে ভর্তি করার পর থেকে তাঁকে বের করে দেওয়া হয়। তারপর থেকে তিনি ওয়ার্ডের বাইরে অপেক্ষা করেছেন। তাতে তিনি দেখেছেন রবিবার রাত পর্যন্ত তাঁর শিশুকে কোনও ডাক্তার দেখেননি। এদিন সকাল ৭টা নাগাদ ওয়ার্ডে গিয়ে দেখেন তার এক বছর দু’মাস বয়সের সন্তান মারা গিয়েছে। এই ঘটনায় তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের তীব্র নিন্দা করে বলেন, মাল বাজারেও আমার সন্তানকে ভর্তি নেয়নি ডাক্তার না থাকার জন্য। এখানে ভর্তি নিলেও ডাক্তার না থাকায় তার চিকিৎসা করা হয়নি। হাসপাতালে যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে বলতে হয় রোগীরা জঙ্গলে আসছেন। আর এই জঙ্গলে আমার সন্তানের মৃত্যু হল এর দায় কে নেবে? কী মানে রয়েছে এধরনের আন্দোলনের? আমরা গরিব মানুষ আমাদের ক্ষমতা নেই নার্সিংহোমে গিয়ে চিকিৎসা করানোর। যদিও হাসপাতালের সুপার কৌশিক সমাজদার জানিয়েছেন, বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। শিশু বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তাররা দাবি করেছেন, ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা শিশুদের ঠিকমতো চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এনআরএসে এক জুনিয়র ডাক্তারকে মারধর করার ঘটনার প্রতিবাদে ও নিরাপত্তার দাবিতে গত সাতদিন ধরে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা ধর্মঘট আন্দোলন করে আসছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এর জেরে বহু গরিব মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এ দিনও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরিব মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পাবার আশায় এসেছিলেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ম রক্ষার তাগিদে জরুরি বিভাগ চালু থাকলেও সেখানে কার্যত চিকিৎসা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক রোগী ও তাদের পরিবারের লোকেরা। তাদের অভিযোগ, হয়তো ডাক্তারবাবু দেখছেন, কিন্তু প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা সবই বন্ধ রয়েছে। ফলে সঠিক চিকিৎসা চালু হচ্ছে না। একই অবস্থা ভর্তি থাকা রোগীদের। তাঁদের অভিযোগ, ঠিকমতো চিকিৎসা তাদের হচ্ছে না। ডাক্তার কখন আসছেন বা যাচ্ছেন তা তারা বুঝতেই পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ নবান্নের বৈঠকের দিকে তাকিয়েছিলেন। আর সাধারণ মানুষের হয়রানি চরমে ওঠায় জুনিয়র ডাক্তাররাও বুঝতে পেরেছিলেন তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। তাই এখানকার জুনিয়র ডাক্তাররা এদিন দুপুর থেকেই কলকাতার বৈঠকে কী হয় তা নিয়ে চর্চাতেই বেশি ব্যস্ত ছিলেন। ঘনঘন ফোনে কলকাতায় তাঁদের ডাক্তার নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে দেখা গিয়েছে। নবান্নের বৈঠকে নজর রাখার জন্য দুপুর আড়াইটে থেকেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে তারা টিভির সামনে বসে পড়েন । বৈঠক যত এগিয়েছে এখানকার জুনিয়র ডাক্তারদের মুখে ততই স্বস্তি দেখা গিয়েছে। তাতেই বোঝা গিয়েছে তারাও চাইছিলেন দ্রুত সম্মানজনক সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসুক। সেইমতো বৈঠক শেষ হওয়ায় এখানকার জুনিয়র ডাক্তাররাও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মিটিংয়ের যাবতীয় বক্তব্য শুনে তারাও আশাবাদী মঙ্গলবার থেকেই তারা কাজে যোগ দিতে পারবেন।