পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
পুলিস ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সন্তোষ সরকার(৫১)। কয়েক বছর ধরে তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্তোষবাবু রাত ৯ টা নাগাদ মারা যান। এরপর তাঁর সাত বিঘা জমি ও বাড়ির সম্পত্তির ভাগ কে নেবে এই নিয়ে শুরু হয় দুই ননদ ও স্ত্রীর মধ্যে বচসা। সারারাত ধরে মৃতদেহ উঠানে রেখে চলে কথা কাটাকাটি, ঝগড়া। সকাল হলেও মৃতদেহ রেখে দেওয়া হয়। প্রতিবেশীরা এসে দুই পক্ষের মধ্যে সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা করেন তাতেও কোনও সুরহা হয় না। সকাল ১১টা পর্যন্ত মৃতদেহ ঘরেই পড়ে থাকে। খবর পেয়ে হিলি থানার ওসি তাসি শেরপা ঘটনা স্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠান। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হিলি থানার পুলিস।
হিলি থানার ওসি তাসি শেরপা বলেন, সম্পত্তি নিয়ে তাদের পরিবারের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। আমরা খবর পেয়েছি মৃতদেহ ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাড়িতেই পড়ে রয়েছে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
মৃতের স্ত্রী লতিকা সরকার বলেন, আমার স্বামীকে বিনা চিকিৎসায় মেরে ফেলেছে দুই ননদ সীমা সরকার ও রক্ষিতা সরকার। তারা সম্পত্তি হাতানোর জন্য বিনা চিকিৎসায় আমার স্বামীকে বাড়িতে ফেলে রেখেছিল। স্বামীকে ছুঁতেও দিত না। আমাকে প্রায়ই মারধর করা হতো। কয়েকদিন আগে স্বামীর চিকিৎসার জন্য হিলি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। এখন স্বামী মারা গিয়েছে। আমার কেউ নেই। ওরা বলছে বাড়ি থেকে বের করে দেবে। স্বামীর সম্পত্তির ভাগ না পেলে আমি দুই নাবালক সন্তান নিয়ে কোথায় যাব? জমির ভাগ কে নেবে সেনিয়ে ওরা ঝগড়া শুরু করে দেয়। পাড়ার সকলে মিলে মীমাংসায় বসা হয়। সবাই বলে আমাকে যেন সম্পত্তির ভাগ দেওয়া হয়। কিন্তু ওরা মানতে চাইছে না। গণ্ডগোলের কারণে সৎকার নিয়ে যাওয়া হয়নি।
মৃতের দিদি সীমা সরকার ও রক্ষিতা সরকার বলেন, চিকিৎসা করানো জন্য টাকা দরকার। সেই টাকা আমাদের নেই। আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ একেবারেই মিথ্যা। যা সম্পত্তি রয়েছে তা আমরা ভাই-বোনরা করেছি। বৌদিকে ভাগ দেওয়ার কোনও বিষয় নেই। মীমাংসায় বসার কারণে সৎকার করা যায়নি। নইলে আমরা রাতেই সৎকার করে দিতাম।
ধলপাড়া সংসদের পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপির গোপাল পাহান বলেন, এর আগেও আমরা বিষয়টি নিয়ে বসেছিলাম। তাতেও কোন কাজ হয়নি। স্বামীর সম্পত্তির উপর স্ত্রীর পূর্ণ অধিকার রয়েছে। যদিও এটি তাদের পারিবারিক বিষয়। শুনেছি ওদের মধ্যে গণ্ডগোলের জেরে মারা যাওয়ার পর মৃতদেহ বাড়িতেই পড়ে ছিল। এমন ঘটনা কাম্য নয়।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বছর দুয়েক আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন সন্তোষ সরকার। বাড়িতে তাঁর বৃদ্ধ মা, স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই বোন থাকত। তিনি অসুস্থ হওয়ার পর স্ত্রী উপর ননদরা অত্যাচার করত বলে অভিযোগ। বিনা চিকিৎসায় দিনের পর দিন পড়ে থাকায় সন্তোষবাবু আরও অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় কয়েক সপ্তাহ আগে দুই ননদের বিরুদ্ধে হিলি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর স্ত্রী। খবর পেয়ে হিলির বিডিও ঘটনাস্থলে পৌঁছে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন। এরই মধ্যে শনিবার রাতে সন্তোষবাবুর মৃত্যু হয়। তাঁর স্ত্রীর অভিযোগ দুই ননদ সম্পত্তি হাতাতে পরিকল্পনা করে তাঁর স্বামীকে মেরে ফেলেছে।