গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
এদিন সকালে অন্যান্যদিনের মতো কোচবিহার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও এমজেএন হাসপাতালের আউটডোরের টিকিটঘরের সামনে কয়েকশো রোগী ভিড় জমান। কিন্তু টিকিট ইস্যু করা হয়নি। প্রতিদিন এখানে গড়ে তিন থেকে চার হাজার রোগী আসেন। এদিন আউটডোর অনেকটাই শুনশান ছিল। তবে চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কথা না জেনে এদিনও রোগীদের একাংশ দূরদূরান্ত থেকে এসেছিলেন। দিনহাটার বামনহাট থেকে চোখের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন জহিরুল মিঞাঁ। চিকিৎসক দেখাতে না পেরে তাঁকে ফিরে যেতে হয়েছে। তিনি বলেন, কষ্টের টাকা খরচ করে গাড়ি ভাড়া দিয়ে হাসপাতালে এলাম। চিকিৎসকের দেখা না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। সিতাইয়ের বাসিন্দা কল্যাণ রায় তাঁর ছেলের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এসেছিলেন। চিকিৎসকের দেখা না পেয়ে তাঁকেও ফিরতে হয়েছে। বলরামপুরের করুণাকান্ত বর্মন অশক্ত শরীরে স্ত্রীকে নিয়ে আউটডোরে দেখাতে এসেছিলেন। দুপুর পর্যন্ত তিনি চিকিৎসকের আশায় বসেছিলেন। এনিয়ে রোগীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়ায়। ক্ষোভ সামাল দেওয়ার জন্য আউটডোরে পুলিস মোতায়েন করা হয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইনডোরে ও জরুরি বিভাগে যথাযথ চিকিৎসা হয়েছে। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের আউটডোরেও এদিন চিকিৎসকরা তাঁদের পরিষেবা দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁদের একাংশ এদিন আউটডোরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। জেলার অন্যান্য সরকারি হাসপাতালের আউটডোর পরিষেবাও বিপর্যস্ত হয়। এর জেরে রোগীদের চরম ভোগান্তি হয়। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরাও আউটডোর পরিষেবা বন্ধ রেখে প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন। তবে ভর্তি হওয়া রোগীদের কোনও অসুবিধা হয়নি। ইনডোরে ভরতি থাকা রোগীরা জানিয়েছেন, হাসপাতালের চিকিৎসকরা আউটডোরে না বসলেও ইনডোরে এদিন নিয়ম করেই রোগী দেখেছেন। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের আউটডোরে গড়ে প্রতিদিন ১০০০-১২০০ রোগী চিকিৎসা করাতে আসেন। এদিন আউটডোরে ১৪ জন চিকিৎসকের বসার কথা ছিল। কিন্তু এদিন একজন চিকিৎসকও ছিলেন না। চিকিৎসকরা ‘সঙ্গে আছি এনআরএস। স্টপ ভায়োলেন্স এগেইনস্ট ডকটর্স’ লাগানো ব্যাজ পড়ে ইনডোরে রোগী দেখেছেন। আলিপুরদুয়ার জেলা সদর থেকে ৬৫ কিমি দূরে জয়গাঁ থেকে পাঁচ বছরের ছেলেকে কোলে নিয়ে চিকিৎসক দেখাতে এসেছিলেন তাজমিন বেগম। আউডোরে চিকিৎসককে না পেয়ে তিনি ফিরে যান। বারোবিশার বিষ্ণুনগর থেকে এসেছিলেন মহেশ বর্মন পেটের চিকিৎসার জন্য। মহেশবাবু বললেন, আউটডোরে চিকিৎসককে না পেয়ে বাধ্য হয়ে প্রাইভেট চেম্বারে টাকা খরচ করে ডাক্তার দেখাতে হয়েছে। জেলা হাসপাতালের সুপার চিন্ময় বর্মন বলেন, আউটডোর বন্ধ রাখা হলেও রোগীদের স্বার্থে আমরা ইনডোর বা ইমারজেন্সি বন্ধ রাখিনি। অন্যদিকে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসকদের দেখা না পেয়ে এদিন রোগীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। ময়নাগুড়ির রামসাইয়ের বাসিন্দা সন্ধ্যা রায় বলেন, ছেলেকে দেখাতে এসেছি। যাতায়াতেই ১০০ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু চিকিৎসককে দেখাতে পারিনি।