বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
রাজনৈতিক মহলের মতে, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের বিপুল সাফল্যের কারণে জনক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। সেই ক্ষোভের আগুনকে উসকে দিয়েই উত্তরে তৃণমূলের অহংকার বিজেপি চূর্ণ করে দিয়েছে। এরসঙ্গে বিজেপি’র সনাতন ভোট বিভাজনের রাজনীতি সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে এই প্রথমবার উত্তর বলয়ে বিজেপিকে বিপুল সাফল্য এনে দিল। বিজেপির অন্দর মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের ভোটকে পুরোপুরি নিজেদের পক্ষে এনে ফেলতে সক্ষম হয়েছে তারা।
পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব জানান, এই ফল অপ্রত্যাশিত। কেন এমন হল তা তাঁরা পর্যালোচনা করে দেখবেন। বিজেপি’র উত্তরবঙ্গ কমিটির আহ্বায়ক রথীন্দ্র বসু বলেন, মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের মানুষকে বোকা ভেবেছিলেন। মানুষ উচিত জবাব দিয়েছে। আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, বিজেপি’ বিভাজনের রাজনীতির মধ্যে দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। এরসঙ্গে তৃণমূলের ভুল রাজনীতি উত্তরে বিজেপিকে মাটি পাওয়ার সুযোগ করে দিল। মালদহ দক্ষিণ কিন্তু বরকতদাকে ভুলে যায়নি। সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ধর্মের নামে ভোট হয়েছে। সকলের জন্যই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠল।
বিকেল হওয়ার আগেই উত্তরের সাতটি আসন গেরুয়া শিবিরের দখলে যাওয়া নিশ্চিত হয়ে যায়। ততক্ষণ কোচবিহারের তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়ে বিজেপির নিশীথ প্রামাণিক জয়োল্লাসে মেতে উঠেছিলেন। চূড়ান্ত সম্মানের এই লড়াইয়ে বহিষ্কৃত নেতার কাছে হেরে যাওয়ায় স্বভাবতই তৃণমূলের মুখ পুড়েছে। একইভাবে চা বলয়ের দখলদারিও ততক্ষণে জন বারলার কাছে চলে গিয়েছে। কোনও পূর্বাভাস ছাডাই উত্তরের বিশিষ্ট জনবসতি এলাকা জলপাইগুড়িতেও গেরুয়া পতাকার জয়জয়াকার। পাহাড়েও নিস্তার পায়নি তূণমূল। তৃতীয় বারের জন্যে কাঞ্চনজঙ্ঘা দখল করেছে পদ্মশিবির। রায়গঞ্জ নিয়ে দলের নেতৃত্বের প্রবল আশা থাকলেও বাজিমাৎ করেছেন স্বয়ং সেবক সংঘ করে আসা দাপুটে রাজ্য নেত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। বালুরঘাটে আনকোরা অধ্যাপক প্রার্থী সুকান্ত মজুমদারকে নামিয়ে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। অর্পিতা ঘোষকে নিয়ে দলের অন্তর্দ্বন্দ্বও ভোটের ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে বলেই ওয়াকিবহাল মহলের বিশ্বাস। বালুরঘাট থেকে উত্তর মালদহে পা ফেলতেই কিছুটা প্রতিরোধের মধ্যে পড়েছিল বিজেপি। প্রায় পাঁচ ঘণ্টার টানা উত্থান-পতনের পরে বিকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ বিজেপি প্রার্থী বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে যান। উত্তরের এক আসনে গনিপরিবারের দুই ভাই-বোনের লড়াই আচমকা দলবদলে বিজেপির প্রার্থী হওয়া সহ নানা চমক থাকলেও বাজিমাৎ করেছে বিজেপি। দক্ষিণ মালদহে গনিমিথকে ছাপিয়ে এদিন গণনার শুরুতে পদ্মের সুবাস ছড়িয়ে পড়েছিল। গনিখানের ভাই আবু হাসেম খান চৌধুরীকে হারিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে দৌঁড় শুরু করেছিলেন বিজেপির বহিরাগত নেত্রী শ্ররূপা মিত্র চৌধুরী। একর পর এক রাউন্ডে তিনি যেভাবে এগোচ্ছিলেন যাতে রাজনৈতিক মহল ধরেই নিয়েছিল যে এই আসনে বিজেপি জিতেই গিয়েছে। তবে শেষ হাসি হাসেন প্রবীণ ডালু। একটি বিশেষ শ্রেণীর বিপুল ভোট ব্যাংকের এলাকায় পদ্মঝুল ফুটে বিশেষজ্ঞদের বিস্মৃত করেছে। শুধু লোকসভাতেই নয় এই তল্লাটে দার্জিলিং ও হবিবপুর বিধানসভার দু’টি উপনির্বাচনেও লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের কর্তৃত্ব। শুধুমাত্র ইসলামপুরেই ফুটেছে ঘাসফুল।