গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
এবার পাশের জেলা কোচবিহারে উত্তপ্ত পরিবেশে ভোট হয়েছিল। কিন্তু আলিপুরদুয়ারের চা বলয়ে ভোট হয়েছিল চুপচাপ উৎসবের মধ্যে। গত ১১ এপ্রিল ভোটকে কেন্দ্র করে আলিপুরদুয়ারে একটি সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেনি। ফলে এই চুপচাপ ভোট কিসের ইঙ্গিত তা নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপি দুই শিবিরই উৎকন্ঠায় ছিল। সেই উৎকন্ঠার অবসান হচ্ছে আজ।
চা বলয়ের ভোটাররাই নির্ণায়ক হওয়ায় আলিুপুরদুয়ারে তাই ভোটের প্রচারে অন্যান্য ইস্যুকে পিছনে ফেলে সব দলের প্রচারেই বেশি করে উঠে এসেছে চা বাগানের সমস্যা ও বন্ধ চা বাগানের ইস্যু। আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে ৮২টি চা বাগান আছে। বন্ধ আছে ১১টি চা বাগান। এই ৮২টি চা বাগান আছে ৫৭টি পঞ্চায়েতে। যার মধ্যে ৫০টি পঞ্চায়েতই আছে তৃণমূলের দখলে। চা বলয়ে পঞ্চায়েত দখলে সম্পূর্ণ ব্যর্থ গেরুয়া শিবির। ফলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, পঞ্চায়েত দখলের নিরিখে আজ অনেকটাই অ্যাডভান্টেজে তৃণমূল।
আলিপুরদুয়ারের চা বলয়ে যেমন আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্ক আছে, তেমনি সাধারণ গোর্খাভাষী ভোট ব্যাঙ্কও আছে। চা বলয়ের এই গোর্খা ও আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্ক শেষ পর্যন্ত বিজেপি না তৃণমূল কার বাক্সে গিয়েছে আজ কয়েক ঘন্টা পর সেটাও পরিষ্কার হয়ে যাবে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকে ডুয়ার্সে গোর্খা ভোটে ভাঙন শুরু হয়। ডুয়ার্সে বিমল গুরুংয়ের বদলে এখন বিনয় তামাংপন্থীদের দাপট। চা বলয়ের গোর্খা ভোটের এই সুবিধা শাসক দল তৃণমূল কতটা তুলতে পারে সেটাও আজ পরিষ্কার হয়ে যাবে সাধারণ আমজনতার কাছে।
লোকসভা ভোটের আগে জেলায় সাতটি চা বাগান খুলেছে। চা শ্রমিকদের মজুরি ১৩২ টাকা থেকে বেড়ে ১৭৬ টাকা হয়েছে। এই সুবিধাও তৃণমূল কতটা তুলতে পারে সেটাও আজ পরিষ্কার হয়ে যাবে কয়েক ঘন্টা পরে। আলিপুরদুয়ারে ভোটের প্রচারে এসে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বন্ধ চা বাগান ও চা শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি। এই ঘটনার কোনও নেতিবাচক প্রভাব গেরুয়া শিবিরের বাক্সে পড়ে কিনা সেটাও আজ রাজনৈতিক মহলের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে। জেলার রাজনৈতিক মহলে একটা কথা চালু আছে, জেলার চা বাগানগুলিতে শেড ট্রি’র মতো ছায়া হয়ে বসে আছে তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠন চা বাগান তৃণমূল মজদুর ইউনিয়ন। অন্যদিকে এখনও চা বাগানগুলিতে সেভাবে বিজেপি’র শ্রমিক সংগঠন গড়েই ওঠেনি। চা বাগানে তৃণমূলের এই সংগঠন ও বিজেপি’র ‘হাওয়া’ কতটা কাজে দেয় সেটাও আজ জানা যাবে। সব মিলিয়ে তৃণমূল শিবির আশা করছে চা বলয়ে সংগঠন ও চা শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধা এই দুইয়ের কারেণ তারাই আজ বাজিমাত করবে। অন্যদিকে, গেরুয়া শিবিরের ধারণা, নামকাওয়াস্তে চা বাগান খোলা ও চা শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি লাগুর ক্ষেত্রে রাজ্যের শাসক দলের দীর্ঘদিনের অনীহার জন্য চা বলয়ের ভোটে আজ তারাই শেষ হাসি হাসবেন।