রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
রূপক রায়ের মা পপিদেবী বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর মাত্র ৭০০০ টাকা পেনশনে কোনওরকমে সংসার চলছে। বছর দু’য়েক আগে ওর বাবা মারা যায়। বাবার মৃত্যুতে ছেলেও ভেঙে পড়েছিল। তবে রূপক যাতে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারে সেজন্য আমি ওকে নিয়মিত গাইড করি। ছেলের এমন সাফল্যে আজ আমি খুশি। ছেলে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখছে। ও চিকিৎসক হতে চায় ঠিকই কিন্তু সামন্য পেনশন দিয়ে কীভাবে ওর স্বপ্ন পূরণ করব সেনিয়ে ভাবলে মনে হয় মাথার ওপর আকাশ ভেঙে পড়ছে।
কৃতী রূপক জানিয়েছে, বাবার মৃত্যুর পর মানসিকভাবে আমি ভেঙে পড়েছিলাম। কিন্তু মাধ্যমিকে যে নম্বর পেয়েছি তা সম্পূর্ণ মায়ের আশীর্বাদ এবং তাঁর গাইডেন্স না থাকলে কখনই হতো না। আগামী দিনে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে চিকিৎসক হতে চাই। আমি এমবিবিএস করতে চাই। কিন্তু অতদূর পৌঁছনোর জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। জানি না কীভাবে ওই টাকা জোগাড় হবে।
পুরাতন মালদহের শুভাশিসের মা মলয়া সরকার বলেন, ছেলেকে স্কুল থেকে শিক্ষকরা সবরকম সহযোগিতা করেছেন। কোনওরকমে সংসার চলছে। ছেলেকে সেভাবে প্রাইভেট টিউশনি পড়ার সুযোগ করে দিতে পারেনি। ছেলে যে নম্বর পেয়েছে তাতে আমি গর্বিত। শুভাশিসের কাকা উদয় সরকার বলেন, দাদার মৃত্যুর পর শুভাশিসকে দেখভাল করছি। ছেলেটি আগাগোড়া কঠোর পরিশ্রমী। শুভাশিস বলে, আগামী দিনে অধ্যাপক হতে চাই। বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
পুরাতন মালদাহ কালাচাঁদ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রাহুল রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, শুভাশিসের দাদাও আমাদের স্কুলে থেকে পড়ে ভালো নম্বর পেয়েছিল। তবে পিতৃহীন ওই ছাত্র লড়াই করে এই সাফল্য পেয়েছে। ওর উচ্চশিক্ষার জন্য আমারা যতটা পারব ওর সঙ্গে থাকার চেষ্টা করব।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের মালদহে জেলার আহ্বায়ক সঞ্জয় বল বলেন, গাজোল এবং পুরাতন মালদহের ওই দুই পড়ুয়া যেভাবে আর্থিক প্রতিকূলতার মধ্যে পড়াশুনা করে এত ভালো ফল করেছে তা আগামী দিনে অন্যান্য পড়ুয়াদের উৎসাহিত করবে। জেলাবাসী হিসেবে আমরা গর্ব অনুভব করছি। উচ্চশিক্ষায় সব সময়ই তাদের পাশে থাকব।
রূপক রায় ৯৬.৭১ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। সে দিনে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা পড়াশুনা করত। পড়াশুনার বাইরে ছবি আঁকা, ক্রিকেট খলতে সে ভালোবাসে। প্রতিটি বিষয়েই রূপক ৯৩ নম্বরের ওপরে নম্বর পেয়েছে। শুভাশিস সরকারের মা মলায়াদেবী একটি বেসরকারি স্কুলে মাত্র ১২০০ টাকা বেতনে কাজ করেন। ওর বাবার মৃত্যুর পর কাকা উদয় সরকার, অশোক সরকাররা তাঁকে দেখাশুনা করেন। শুভাশিস ৯১.৪২ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। পড়াশুনার বাইরে সে গল্পের বই পড়তে ভালোবাসে।