গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
রায়গঞ্জ গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী ক্যামেলিয়া রায় ৬৮৯ নম্বর পেয়ে রাজ্যে তৃতীয় স্থান পেয়েছে। গঙ্গারামপুর হাইস্কুলের সায়ন্তন বসাক ৬৮৩ নম্বর পেয়ে রাজ্যে অষ্টম স্থান অর্জন করেছে। রায়গঞ্জ গার্লস হাইস্কুলের অপর ছাত্রী সঞ্চারী চক্রবর্তী ৬৮১ নম্বর পেয়ে রাজ্যে দশম স্থান পেয়েছে। এদিন সকালে ফল জানতে পেরেই তাদের বাড়িতে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। ক্যামেলিয়া জানিয়েছে, সে বড় হয়ে গবেষণা করতে চায়। সঞ্চারীও ভবিষ্যতে অঙ্ক নিয়ে গবেষণা করতে আগ্রহী। সায়ন্তনের লক্ষ্য চিকিৎসক হওয়া।
এদিন সকালে কলেজ পাড়ায় ক্যামেলিয়ার বাড়ি গিয়ে দেখা গেল আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে পাড়া প্রতিবেশীরা ভিড় জমিয়েছেন সেখানে। রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান সন্দীপ বিশ্বাসও ক্যামেলিয়ার বাড়ি গিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান। ক্যামেলিয়া ও তার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যামেলিয়ার পড়াশুনার নির্দিষ্ট কোনও সময় ছিল না। যখনই ইচ্ছে করত বা সময় পেত সে বই নিয়ে বসতো। যেটুকু পড়ত, মন দিয়ে পড়ত। ক্যামেলিয়া বাংলায় ৯৫, ইংজেজিতে ৯৭, অঙ্ক, ভৌত বিজ্ঞান ও জীবন বিজ্ঞানে ১০০ নম্বর পেয়েছে। ইতিহাস ও ভূগোলে সে ৯৮ করে নম্বর পেয়েছে। ক্যামেলিয়ার বাবা কাঞ্চিরাম রায় পেশায় হাই স্কুল শিক্ষক। মাধুরী রায় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। জীবন বিজ্ঞান সে বাবার কাছেই পড়ত। বাকি সব বিষয়েই তার গৃহশিক্ষক ছিল।
গঙ্গারামপুরের দত্তপাড়ায় সায়ন্তনের বাড়িতে এদিন সকালে একটা সময় তিলধারনের জায়গা ছিল না। তার বাবা বৃন্দবন বসাক পেশায় তাঁত ব্যবসায়ী। মা গৃহবধূ। বিজ্ঞান নিয়ে পডাশুনা করে সে ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায়। তার পরিবার ও স্কুলের শিক্ষকরা তার পাশে থাকবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। অপর দিকে, রায়গঞ্জের উকিল পাড়া এলাকার বাসিন্দা সঞ্চারী পরীক্ষার আগের দিনগুলিতে আট থেকে নয় ঘণ্টা করে পড়াশুনা করত। অঙ্ক ও ভৌত বিজ্ঞানে তার দু’জন করে শিক্ষক ছিল। বাকি সব বিষয়েই একজন করে শিক্ষক ছিল। তার বাবা দেবাশিস চক্রবর্তী হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। মা রূপালী চক্রবর্তী আইসিডিএস কর্মী।
পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি আদিত্যনারায়ণ দাস বলেন, রাজ্যে পাশের হারের তুলনায় আমরা পিছিয়ে আছি। জেলার সামগ্রিক ফল আরও একটু ভালো হলে খুশি হতাম। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক তিলকতীর্থ ভৌমিক বলেন, জেলার এই ফলে আমরা খুশি নই। এবারে জেলার পাশের হার রাজ্যের তুলনায় তা অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। শিক্ষক হিসাবে চাই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীই পাশ করুক।
এদিকে ফল নিয়ে খুব বেশি খুশি হতে পারছে না দক্ষিণ দিনাজপুরও। বালুঘাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ কুণ্ডু বলেন, আমাদের জেলায় এবারে শতাংশের দিক থেকে আশানুরূপ ফল হয়নি। এটা কাঙ্খিত ছিল না। গঙ্গারামপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল ঘোষ বলেন, রাজ্যের নিরিখে আমাদের জেলায় শতাংশের হিসাবে ফল ভালো হয়নি। এর প্রধান কারণ হলো নবম থেকে দশম শ্রেণিতে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি স্কুলে কমে যাচ্ছে। প্রতি বিষয়ে প্রাইভেট টিউশন পড়তে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা বেসামাল হয়ে পড়ছে।