গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
উত্তর দিনাজপুর জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের আধিকারিক সুফল মণ্ডল বলেন, জেলায় মূলত ধান, পাট, গম চাষ হয়। দীর্ঘদিন থেকেই চাষিরা এসব ফসল উৎপাদন করে আসছেন। জেলার কিছু অংশে চা এবং আনারস চাষ হচ্ছে। জেলাজুড়ে সরিষা চাষের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। কয়েক বছর ধরে জেলার চাষিদের মধ্যে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে। তাই তাঁদের দিয়ে এবার আমরা কম সময়ে লাভজনক মাশরুম ও ব্রোকলি চাষ করাতে উদ্যোগ নিয়েছি। এতে তাঁরা সব্জির ভালো দাম পাবেন। আগ্রহী চাষীদের আমরা চাষের পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি অন্যান্যভাবেও সাহায্য করব।
জেলার সব্জি চাষি বলেন, কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কিছু চাষি ব্রোকলি চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন। আমাদের জেলারও কিছু কৃষক মাশরুম চাষ করছেন। তাঁরাও এটি উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছেন। উদ্যানপালন দপ্তর পরামর্শ দিয়ে এবং সহযোগিতা করলে আমরাও অল্প সময়ে সব্জি উৎপাদন করে লাভের মুখ দেখতে পারব।
দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাশরুমে অত্যাধিক পরিমাণে প্রোটিন থাকে। অনেক শাক-সব্জির তুলনায় এর প্রোটিনের মাত্রা বেশি। সুস্বাদু, শরীর গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন বি ও খনিজ লবন মাশরুমে রয়েছে। এছাড়া ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, কপার থাকায় সাধারণত হাড় ও দাঁতের গঠনে এর কার্যকরী ভূমিকা আছে। শরীরে রক্তাল্পতা দেখা দিলে নিয়মিত মাশরুম খেলে তা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। মাশরুমে শর্করা ও ফ্যাট জাতীয় পদার্থ কম থাকায় হৃদরোগ, বহুমূত্র ও উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগের ক্ষেত্রে এটি আদর্শ খাদ্য। বাজারে এর চাহিদা থাকায় দপ্তর এই চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে। এখানে মূলত তিন ধরনের মাশরুম চাষ হয়। জুন মাস থেকে শুরু করে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত যে মাশরুম চাষ করা যায় তাকে বলা হয় পোয়াল মাশরুম। খড়ের উপর জন্মায় বলে এই মাশরুমের নাম পোয়াল মাশরুম। খুব সহজে ও কম খরচে এই মাশরুম চাষ করা হয়। মাত্র ১২-১৫ দিনের মধ্যেই এর ফলন পাওয়া যায়। এছাড়াও রয়েছে ঝিনুক মাশরুম। সেপ্টেম্বর মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এই মাশরুমের চাষ হয়। ২০-২৪ দিনে এর ফলন হয়। অন্যদিকে শীতকালীন মাশরুম চাষও এরাজ্যে হয়ে থাকে। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে চাষ হওয়া এই মাশরুমের নাম বোতাম মাশরুম। যেকেউ দপ্তরের পরামর্শ মেনে এসব মাশরুম খুব সহজেই চাষ করে বাড়তি আয় করতে পারে। ভোটপর্ব মিটে গেলে এব্যাপারে কৃষকদের পরামর্শ, প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এছাড়াও ব্রোকলি বা সবুজ ফুলকপি চাষের ব্যাপারেও দপ্তর উদ্যোগী হয়েছে। ব্রোকলি চাষ করেও কৃষকরা অতিরিক্ত উপার্জন করতে পারবেন। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ব্রোকলির বীজ পোঁতা বা চারা বসানোর সময়। উপযুক্ত পরিচর্যা, নিয়মিত জলসেচ, আগাছা তুলে চাষের জমি পরিচর্যা করতে হবে। ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে, পুষ্টি বাড়াতে ব্রোকলি খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। আমাদের রাজ্যে পাঞ্জাব ব্রোকলি, পুসা ব্রোকলি ছাড়াও হাইব্রিড জাতের প্যাকম্যান, পাইরেট, ব্রঞ্জিনো, কাবুকি, ফিয়েস্টা, মাসকেট, সুলতান ব্রোকলির চাষ হয়। ব্রোকলি ভাজা ছাড়াও এর স্যালাড স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী।