যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
এদিন সকাল থেকেই মাদারিপুরে উত্তেজনা ছড়ায়। মাদারিপুর হাইস্কুলের ৬ নম্বর বুথে ভোট দিতে যাওয়ার সময় ভোটারদের একদল দুষ্কৃতী বাধা দেয়। তাদের ভোট দিতে যেতে দেওয়া হয়নি এই অভিযোগে মাদারিপুরে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। উল্লেখ্য অবরোধকারীদের অধিকাংশই ছিলেন মহিলা। অবরোধের খবর পেয়ে বিজেপির প্রার্থী সৌম্যরূপ মণ্ডল ঘটনাস্থলে পৌঁছন। প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ চলার পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ক্যুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) পৌঁছয়। তারা বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। কেন্দ্রীয় বাহিনী তাদের সঙ্গে করে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ শান্তিতেই ভোট চলে। এরপরে কিউআরটি চলে যায়। এর কিছু সময়ের মধ্যেই ভোট কেন্দ্র থেকে কয়েক হাত দূরে মুখে গামছা বাঁধা একদল দুষ্কৃতী সাধারণ মানুষ ও ভোটারদের উপরে হামলা চালায়। জাতীয় সড়কের পর পর বোমা ফাটানো হতে থাকে। শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলিও চালানো হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় অল্পবিস্তর কয়েকজন আহতও হন। তবে তাঁদের হাসপাতালে যেতে হয়নি। সেখানে সংবাদ সংগ্রহে গেলে সংবাদ মাধ্যমকে আক্রমণ করা হয়। তাদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। কয়েকজন সাংবাদিককে মারধরও করা হয়। পরে আবার কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। পুলিস একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেসের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসও বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছে। এই ঘটনা ছাড়া গোটা বিধানসভা এলাকায় এদিন কোথাও কোনও সংর্ষের খবর আসেনি। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ সেন বলেন, বিজেপির সমর্থকেরা যাতে ভোট দিতে না যায় তার জন্য তৃণমূল কংগ্রেস মাদারিপুরে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে। বিজেপির প্রার্থী সৌম্যরূপ মণ্ডল বলেন, দুষ্কৃতীরা বাধা দিলেও মানুষ রাস্তায় নেমে আন্দোলন করে ভোটাধিকার রক্ষা করতে পেরেছেন। দুষ্কৃতীরা গুলি, বোমা চালিয়েছে। কিন্তু মানুষ পিছু হটেনি। দুষ্কৃতীরাই পিছু হটে। কেন্দ্রীয় বাহিনী ভালো ভূমিকা নেয়। তারা প্রায় ৫০০ মানুষকে ভোট দেওয়াতে পেরেছে। এছাড়া অন্যান্য এলাকায় শান্তিপূর্ণ ছিল। এটাই আশ্চর্যের যে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হচ্ছে। বাংলার গণতন্ত্রের এটাই প্রকৃত স্বরূপ। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী আবদুল করিম চৌধুরী বলেন, মাদারিপুরের ঘটনাটি বিজেপি ঘটিয়েছে। শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে দেখে তারা অশান্তি করার জন্যই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। সিপিএমের প্রার্থী স্বপন গুহ নিয়োগী বলেন, মাদরিপুরে ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। এটা গণতন্ত্র নয়। ওই এলাকা ছাড়া সমস্ত এলাকায় শান্তিতে ভোট হয়েছে। কংগ্রেস প্রার্থী মুজাফ্ফর হুসেন বলেন, মাদারিপুরে তৃণমূল কংগ্রেস গণ্ডগোল করেছে। এটা ঠিক করেনি। ইসলামপুরের অতিরিক্ত পুলিস সুপার কার্তিক চন্দ্র মণ্ডল বলেন, মাদারিপুরের ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, করিম সাহেব নিজেকে পাহারাদার বলে দাবি করেন। মানুষও তাঁর দাবিকে স্বীকারও করে। তিনি নয় বার বিধায়ক হয়েছেন। কিন্তু কখনওই বুথ জ্যাম কিংবা অন্য কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু এবার উপনির্বাচনে মাদারিপুরের ঘটনা করিম সাহেবের ইমেজে ধাক্কা দিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। পুলিস ও রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে এদিন মাদারিপুরের ঘটনা চোপড়া এলাকার দুষ্কৃতীরা ঘটিয়েছে। মাদারিপুর থেকে চোপড়ার দূরত্ব বেশি নয়। দুষ্কৃতীরা সকলেই মুখে কাপড় বেঁধে ছিল। ঘটনার রিমোট চোপড়া থেকেই চালিত হয়েছে বলে একাংশ মনে করছে।
এদিন মাদারিহাট ছাড়া অন্যত্র গণ্ডগোল সেভাবে হয়নি। সর্বত্রই মানুষ শান্তিতে ভোট দিয়েছেন। তবে কোথাও প্রচুর লাইন চোখে পড়েনি। বুথগুলিতে কোথাও অতিরিক্ত ভিড় দেখা যায়নি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৬৯ শতাংশ ভোট পড়েছে।