বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে হবিবপুরে জয়ী সিপিএম বিধায়ক খগেন মুর্মু বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় আজ উপনির্বাচন হচ্ছে। তৃণমূল এখানে প্রার্থী করেছে অমল কিস্কুকে। বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন জয়েল মুর্মু। সিপিএমের হয়ে লড়াই করছেন সাধু টুডু এবং কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন রেজিনা মুর্মু। এই চারজন ছাড়াও আরও চারজন প্রার্থী রয়েছেন হবিবপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে। তাঁরা হলেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার ইমানুয়েল হেমব্রম, বহুজন মুক্তি পার্টির বাবুরাম কিস্কু, কামতাপুর পিপলস পার্টি (ইউনাইটেড) প্রার্থী সঙ্গীতা সরেন এবং নির্দল প্রার্থী মণ্ডল মার্ডি।
হবিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রে মোট ভোটার রয়েছেন দুই লক্ষ ৪০ হাজার ৭১ জন। এঁদের মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা এক লক্ষ ২১ হাজার ৪৫৯ জন। মহিলা ভোটার রয়েছেন এক লক্ষ ১৮ হাজার ৬০৫ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন সাতজন। এই কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার সুজিত কুমার রায় জানিয়েছেন, হবিবপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে ২৪৭টি ভোট গ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে। এগুলির মধ্যে পাঁচটি আদর্শ ভোট গ্রহণ কেন্দ্র থাকবে যার মধ্যে হবিবপুর ব্লকে তিনটি এবং বামনগোলায় দু’টি। তিনটি বুথে ভোট গ্রহণের কাজ পরিচালনা করবেন মহিলারা।
জেলা নির্বাচন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, হবিবপুরে ৯৮৮ জন ভোটকর্মী থাকছেন। এছাড়াও থাকছেন ২০ শতাংশ অতিরিক্ত ভোটকর্মী। মালদহ জিলা স্কুল থেকে ইভিএম, ভিভিপ্যাট সহ নির্বাচনী সামগ্রী সংগ্রহ করে শনিবারই তাঁরা রওনা হয়ে গিয়েছেন ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের উদ্দেশে। এই নির্বাচনে থাকছেন প্রায় ৫০ জন মাইক্রো অবজার্ভারও।
অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি রাজস্ব ও নির্বাচন) পালদেন শেরপা বলেন, হবিবপুরে আলাদা করে সংবেদনশীল বুথ চিহ্নিত করা হয়নি। সব বুথেই থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রয়োজন অনুযায়ী কোনও বুথে এক সেকশন (আটজন) এবং কোনও বুথে হাফ সেকশন (চারজন) কেন্দ্রীয় সশস্ত্র জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। ভোটারদের লাইন সামলানোতে সাহায্য করার জন্য থাকবে একজন করে লাঠিধারী রাজ্য পুলিসের কর্মীও। মোট ২২টি সেক্টর অফিস থাকছে। প্রতিটি সেক্টরে একজন করে ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক এবং একজন করে সহকারী আধিকারিক থাকবেন।
জেলা পুলিসের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, চারটি কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) থাকছে হবিবপুরে। প্রতিটি কিউআরটি’তে এক সেকশন করে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ান থাকবেন। তাঁদের রাস্তা চেনানোর জন্য থাকবেন একজন করে রাজ্য পুলিসের কনস্টেবল। চারটি ফ্লাইং স্কোয়াড ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করছে।
আজবড় কোনও হিংসা বা রক্তপাত হবে না বলেই ধারণা রাজনৈতিক দলগুলি। তবে রিগিংয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেস। বিজেপি’র জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র বলেন, রক্তপাত হবে না বলেই মনে করছি। কারণ কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। তবে তৃণমূল রিগিংয়ের চেষ্টা করলে বিজেপি কর্মীরা বাধা দেবে। কারণ হবিবপুরে আমাদের জয় নিশ্চিত।
কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোস্তাক আলম বলেন, রক্তপাত ও হিংসা ছাড়াই ভোট হবে বলে আশা করছি। তবে তৃণমূল রিগিং করার চেষ্টা করবেই। সেক্টরের উপর আমাদের ভরসা নেই। সেক্টরের কর্মীরা পালিয়ে বেড়ান। এবার তেমন হলে আদালতে যাব। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রর বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বাহিনী যথাযথ দায়িত্ব পালন করলে রক্তপাত হওয়ার কথা নয়। তবে রিগিং রুখতে সক্রিয় হতে হবে জওয়ানদের। তাছাড়া বুথ পাহাড়ায় জওয়ানরা থাকলে গ্রাম ফাঁকা পড়ে থাকবে। সেখানে সন্ত্রাস চালানোর আশঙ্কা থাকছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, হবিবপুরে বিরোধীরা প্ররোচনা না দিলে হিংসা হবে না। তৃণমূল শান্তির পক্ষে। রিগিংয়ের আশঙ্কা অমূলক।