বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
চাষিরা বলেন, লিচুতে রং ধরতে শুরু করেছে। আরও সপ্তাহখানেক গাছে থাকলে লিচুর প্রকৃত স্বাদ পাওয়া যাবে। কিন্তু এমন অবস্থায় লিচু ঝরে পড়ছে। এমনটা হওয়ায় ক্ষতির বহর বাড়ছে। গত বছর ফলন ভালো হলেও শেষমুহূর্তে নিপা ভাইরাসের আশঙ্কায় অনেকেই লিচু খাননি। এবার গরমে লিচু ঝরে পড়লে ভালো দাম মিলবে না। ওই লিচু রাখা যাবে না।
গোকর্ণ গ্রামের লিচু চাষি রাজু ইসলাম বলেন, আমার ১৪ বিঘা জমিতে লিচু বাগান আছে। প্রতিটি গাছেই এবার ব্যাপক ফল এসেছে। গতবছর নিপা ভাইরাসের কারণে বিপুল ক্ষতি হয়। এবার গরমে লিচু গাছ থেকে ফেটে পড়ে যাচ্ছে। সব ঠিকঠাক থাকলে লাভ ভালো হতো। কিন্তু এখন কী হবে জানি না।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা উদ্যানপালন আধিকারিক সমরেন্দ্রনাথ খাঁড়া বলেন, এবারে আদর্শ আবহাওয়া থাকার কারণে লিচু গাছে ভালো মুকুল এসেছিল। চাষিরা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে পরিচর্যা করায় ভালো ফলও পান। ঝড়বৃষ্টির কারণে কিছু লিচু নষ্ট হয়েছে। কিন্তু তীব্র তাপপ্রবাহের ফলে লিচু গাছেই ফেটে যাচ্ছে। আমরা চাষিদের পরামর্শ দিয়েছি যাতে তাঁরা প্রতিদিন বিকেলে শুধুমাত্র জল স্প্রে করেন। এতে ওই সমস্যা আটকানো যাবে। চাষিরা তাই করছেন। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই লিচু জেলার বাজারে পাওয়া যাবে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমণ্ডি, হরিরামপুর, কুমারগঞ্জের লিচু বাগানে এবার ব্যাপক ফলন হয়েছে। কিন্তু অসহ্য গরমের কারণে সবক’টি বাগনেই লিচু ফেটে ঝরে পড়ছে। মাটিতে পরে ওসব নষ্ট হচ্ছে। চাষিরা জানিয়েছেন, এবারে প্রথম থেকেই আদর্শ আবহাওয়া থাকার কারণে প্রতিটি গাছই মুকুলে ছেয়ে যায়। মাঝে কয়েক দফা হালকা বৃষ্টিতে ওসব মুকুল ঝরে যায়নি। অধিকাংশ মুকুলেই গুটি আসে। পরে সেথেকে লিচুও হয়। গাছে প্রথম থেকেই তেমন রোগপোকার আক্রমণ হয়নি। ঝোড়োহাওয়া হলেও লিচুতে তার খুববেশি প্রভাব পড়নি। ঘূর্ণিঝড় ফণীর জেরে মাঝে দু’দিন আবহাওয়া বদলে যায়। হালাকা বৃষ্টিও হয়। কিন্তু তারপর থেকে টানা প্রায় দু’সপ্তাহ প্রখর রোদই লিচুর পক্ষে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। রং ধরার আগেই লিচু ফেটে যাচ্ছে, ঝরে পড়ছে।
উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় ৫৫ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি লিচু চাষ হয়েছে কুশমণ্ডি ব্লকের দেহাবন্ধ, হরিরামপুর ব্লকের গোকর্ণ এবং কুমারগঞ্জ ব্লকের বাগানগুলিতে। এখানকার লিচুতে জেলার চাহিদা মিটে যায়। এখানে বোম্বাই, মাদ্রাজি প্রজাতির লিচু চাষ হয়।