কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
মালদহের কৃষিরত্ন পুরস্কারপ্রাপক আম উৎপাদক লোকনাথ কুমার বলেন, বিভিন্ন জায়গায় আমে সুলি পোকার আক্রমণ দেখা দিতে শুরু করেছে। ওই সংক্রমণে প্রচুর আম পচে যায়। ফলে ফলন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দুর্ভাগ্যের যে এবার দ্বিতীয়বার সুলি পোকার আক্রমণ হল। আগের থেকে এবারের সংক্রমণ বেশি এবং ভয়াবহ মনে হচ্ছে। এজন্য আমউৎপাদক মহলে তীব্র উদ্বেগ ছড়িয়েছে। কতটা প্রতিরোধ করা যাবে জানি না।
জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর রাহুল চক্রবর্তী বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে সুলি পোকার সংক্রমণ শুরু হয়েছে এটা বাস্তব। তবে খুব বেশি ভয় পাওয়ার কিছু নেই। পাঁচ শতাংশ ফলন নষ্ট হবে এটা আমরা ধরেই রাখি। ইতিমধ্যেই উৎপাদকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। তবে উৎপাদকদের পরিচর্যা নিয়ে সচেতনতার অভাব অনেকটা এই ঘটনার জন্যে দায়ী। সুলি পোকা বাগানেই থেকে যায়। তাই গাছের মরা বাকল, মরা ডাল বাগান থেকে সরিয়ে ফেলা প্রয়োজন। একইভাবে সংক্রমিত আমও সরিয়ে ফেলতে হয়। যা করা হয়নি বলেই এই সংক্রমণ তৈরি হয়েছে।
মালদহের প্রধান মরশুমি অর্থকরী ফসল আম। এবারের আমের মুকুলের মরশুমে বিপুল পরিমাণে মুকুল এসেছিল। যাতে রেকর্ড উৎপাদনের সম্ভাবনাকে ঘিরে আম উৎপাদক মহল উল্লসিত হয়ে উঠেছিল। কিন্তু বাস্তবে মুকুলের তুলনায় উৎপাদনের পরিমাণ নানান প্রাকৃতিক কারণে কমে যেতে পারে বলে আগেই আশঙ্কা করা হয়েছিল। সেই আশঙ্কাকেই বাড়িয়ে তুলেছে সুলি পোকার এমন সংক্রমণ।
আম উৎপাদকরা জানিয়েছেন, মাসখানেক আগে প্রথমবার সুলি পোকার সংক্রমণ শুরু হয়। তখন কোনওভাবে তা প্রতিরোধ করা গেলেও গত সপ্তাহ থেকে ফের জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় আমবাগানে সুলি পোকার উপদ্রব শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, সুলি পোকা মূলত প্রজননের জন্য আমকে বাছে। আমের মাথায় একটি ফুটো তৈরি করে গভীর পর্যন্ত তা বিস্তার করে। আমের মধ্যে স্ত্রী সুলি পোকা ডিম পাড়ে। সেই ডিম ফুটে পোকা বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকেই আম তার মুখের দিক থেকে পচতে শুরু করে। একটি সুলি পোকা সবচেয়ে কম চারটি আমে ছিদ্র করে। ফলে বিরাট পরিমাণ এলাকাজুড়ে সংক্রমণ তৈরি হয়। ফলত এই পোকার সংক্রমণকে ঘিরে তীব্র উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রতিরোধী ব্যবস্থা উৎপাদকরা নিতে শুরু করেছেন। তাতে কতটা প্রতিরোধ করা যাবে তার ওপরেই উৎপাদন নির্ভর করছে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, উৎপাদকদের পরিচর্যার অভাব এই সংকটকে ডেকে এনেছে। আম ধরার প্রথমপর্বেই সিন্থেটিক পাইরিথ্রয়েড জাতীয় কীটনাশক প্রয়োগ করে দেন উৎপাদকরা। এটা অনেক পরে করা উচিত ছিল। আবার সুলি পোকা বাগানে যাতে না থেকে যায় তার জন্য কিছু পদক্ষেপ করতে হয়। যা উৎপাদকরা সময়ে করেননি। সেকারণেই সুলি পোকার আক্রমণ হচ্ছে।