কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
বরকত গনিখান চৌধুরির খাসতালুক কোতোয়ালি ভবন থেকেই কংগ্রেস পেয়েছে একের পর এক এমপি ও বিধায়ক। কিন্তু ২০০৬ সালে গনিখানের প্রয়াণের পরে ধীরে ধীরে জল গড়িয়েছে অন্য খাতে। এই পরিবার থেকে প্রথম তৃণমূলে যোগ দেন গনিখানের ভাগ্নি শেহনাজ কাদরি। তারপর কংগ্রেস ছেড়ে আসেন গনির ভাই আবু নাসের খান চৌধুরিও (লেবু)। তবে কংগ্রেস মোক্ষম ধাক্কা খায় উত্তর মালদহের দুইবারের এমপি গনিখানের আরেক ভাগ্নি মৌসম নুরের দলত্যাগে। এবছরের জানুয়ারি মাসের শেষে তৃণমূলে যোগদান করেছেন মৌসম। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উত্তর মালদহের প্রার্থী ঘোষণা করে দেন।
ঘটনার প্রতিঘাত কাটিয়ে উঠে কংগ্রেস ঠিক ওই আসনেই মৌসমের বিরুদ্ধে তাঁর মামাতো ভাই ঈশা খান চৌধুরিকে প্রার্থী করে দেয়। দুই ভাই-বোন এবার সম্মুখ সমরে। কিন্তু দু’জনেই আপাতত পারিবারিক সম্পর্ককে সরিয়ে রেখে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন যুদ্ধ জয়ের প্রস্তুতিতে। একদিকে মৌসমের লক্ষ্য, নিজের এমপি পদ ধরে রাখার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মালদহ থেকে প্রথম লোকসভা আসন উপহার দেওয়া। অন্যদিকে ঈশার চ্যালেঞ্জ, উত্তর মালদহ আসনটিকে কংগ্রেসের জন্য তৃতীয় বারের জন্য নিশ্চিত করা। তাই দু’জনই মাটি কামড়ে লড়াই করছেন। দু’জনেই সিরিয়াস।
বোন মৌসমের সঙ্গে এখন কথা হয়? ঈশা পরিষ্কার কথা, আপাতত আমরা দু’জনই নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। ওর সঙ্গে এখন দেখা বা কথা হচ্ছে না বললেই চলে। ভোটে জেতাটাই এখন আমরার প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য। নিজের ঘরের লোকের বিরুদ্ধে লড়ার অভিজ্ঞতা এটাই আমার প্রথম নয়। ২০১৬ সালে লেবু কাকাকে হারিয়েই বিধানসভায় জিতেছি। আসলে জেলার মানুষ বরকত সাহেব আর হাত প্রতীকটাকেই চেনেন। এখানে অন্য কিছুই গুরুত্ব পায়না।
মৌসমও খানিকটা বোঝেন ব্যাপারটা। তিনি বরকত সাহেবের প্রতীকের পরিবর্তে তাঁর উন্নয়ন আর ধর্মনিরপক্ষতার আদর্শ তুলে ধরে লড়াইয়ে নেমেছেন। তিনি বলেন, ঈশা খান চৌধুরি সম্পর্কে আমার দাদা। ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। আমরা একই ভবনে থাকি। কিন্তু ও প্রচার নিয়ে ব্যস্ত। আমিও সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মানুষের দুয়ারে পড়ে থাকছি। কদাচিৎ দেখা হচ্ছে। কথা বলতে শুধু ‘হাই-হ্যালো’। এখন লক্ষ্য একটাই— নির্বাচনে জয়ী হওয়া। এবারের নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এবার লড়াই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষতার। বরকত সাহেব সারা জীবন যে ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে ছিলেন তাঁকে বজায় রাখাই আমার দায়িত্ব।
ভাই–বোনের এই লড়াইকে উপভোগও করছেন জেলাবাসী। তারা অপেক্ষা করে আছেন ফলাফলের দিকে। সকলেরই আশা, রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমিত হলে আবেগের রাস্তাতেই ফিরবে ভাই–বোনের সম্পর্কের চিরস্নিগ্ধতা।