কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
নিশীথবাবুর মা ছন্দা প্রামাণিক বলেন, মাস খানেক আগে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমাদের বাড়িতে কয়েক বার আক্রমণ করে। পুলিসকে বিষয়টি জানানো সত্ত্বেও তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এর পরেই ছেলে নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানায়। বুধবার থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাত জনের একটি দল আমাদের বাড়িতে এসেছে। এখন অনেকটা নিরাপদ বোধ করছি। সিতাইয়ের বিধায়ক তৃণমূলের জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া বলেন,যাকে তাকে কেন্দ্রীয় রক্ষী দেওয়া হচ্ছে। মানুষ ব্যালট বাক্সে এর জবাব দেবে। বিজেপি’র কোচবিহার জেলা সভাপতি মালতী রাভা বলেন, দলে যোগদানের সময় নিরাপত্তা চেয়ে নিশীথ প্রামাণিক আবেদন করেছিলেন। নিরাপত্তা নিয়ে তাঁর আশঙ্কা থাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অক্ষয় ঠাকুর বলেন, লোকসভা ভোটে এখন পর্যন্ত মাত্র জেলায় এক কোম্পানি নিরাপত্তা বাহিনী এসেছে। অবাধ শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা না দিয়ে কোচবিহারে বিজেপি নেতাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
এদিন সাত সদস্যর সিআইএসএফের একটি দল নিশীথবাবুর বাড়িতে এসে পৌঁছয়। তারা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র হাতে পাহারা দেওয়া শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর আরও উচ্চপদস্থ কর্তারা এসে বাড়ি সরেজমিনে খতিয়ে দেখে নিরাপত্তা কর্মী বাড়াতে পারেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীরা এখনও নিশীথবাবুর বাড়িতে রয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় তৃণমূল যুব ও মাদারের লড়াইয়ে দিনহাটা মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা উত্তাল হয়ে উঠেছিল। তৎকালীন তৃণমূল যুব নেতা নিশীথবাবুর নেতৃত্বে নির্দল হয়ে ভোটে লড়াই করে যুবরা। যুব-মাদার সংঘর্ষে গীতালদহে এক তৃণমূল কর্মী মারা যান। একাধিক তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। নির্বাচনের পরে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে নিশীথবাবুকে দল থেকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। বহিষ্কারের পরের দিনই নিশীথবাবু দিনহাটা ছেড়ে কলকাতা চলে যান। দলে ফেরার চেষ্টা জারি রাখলেও তৃণমূল নেতৃত্ব পাত্তা দেয়নি। এরপরেই নিশীথবাবুর অনুগামী নির্দলরা তৃণমূলে ফেরার জন্য আবেদন জানান। তৃণমূল ফেরার রাস্তা প্রায় বন্ধ হওয়ায় বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন নিশীথবাবু। তিনি লোকসভা ভোটের প্রাক মুহূর্তে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র হাত ধরে দিল্লিতে বিজেপিতে যোগ দেন। এখনও তিনি দিনহাটায় ফেরেননি। তবে তার আগেই তাঁর বাড়িতে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়ন হল।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে লড়াই করে তিনি জয়ী হন। এরপরেই নিশীথবাবু কোচবিহারের যুব নেতা রানা গোস্বামীর ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। রানা গোস্বামীর সঙ্গে সর্ম্পকের জেরে সংগঠনের রাজ্য নেতাদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। রানাবাবুর অকাল মৃত্যুর পর দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সেই দ্বন্দ্বের জেরেই তিনি যুব কর্মীদের গত পঞ্চায়েত ভোটে নির্দল হিসাবে দাঁড় করান। কিন্তু দল থেকে তাঁকে বহিষ্কারের পরে বিজেপির এক রাজ্য নেতার সহযোগিতায় দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন।