কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
প্রসেনজিৎবাবু বলেন, একটা দেওয়াল লিখতে রং, তুলি, ব্রাশ আমি নিজেই দিয়ে থাকি। নির্দিষ্টভাবে কোনও দেওয়ালের মাপ ধরে টাকা নিই না। গড়ে ২০০ টাকা করে নিয়ে থাকি। এখন কমবেশি ১০০-১২০ বর্গফুট দেওয়াল কমপক্ষে ১০টা করে লিখছি। এই সময়ে আয় ভালোই হয়। পেশা নয়, নেশার টানেই এটা আমি অনেকদিন থেকে করে যাচ্ছি। নির্বাচনের দিন এবং প্রার্থীর নাম ঘোষণার জন্য এতদিন তাকিয়ে ছিলাম। প্রতিবারই রাজনৈতিক দলগুলি আমাকে দেওয়াল লেখার জন্য নিয়ে যায়। এবার এখনও পর্যন্ত যেক’টি দেওয়াল লিখেছি সবটাই তৃণমূল প্রার্থী কানাইয়ালাল আগরওয়ালের হয়ে লেখা হয়েছে। বামেরা ডেকেছে সেখানেও যাব। আশা করি, বিজেপি, কংগ্রেসও ডাকবে।
নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে যদি দেওয়াল লিখনের কাজের মিল না হয় তাহলে কি করেন? এই প্রশ্নে প্রসেনজিৎবাবুর সাফ কথা আমার নিজস্ব রাজনৈতিক মতাদর্শ যাই থাকুক দেওয়াল লেখার ক্ষেত্রে শিল্পটাই প্রাধান্য পায়।
যেকোনও নির্বাচন আসলেই প্রসেনজিৎবাবুর খোঁজ শুরু হয়। তিনি নিজেই রং, তুলি দিয়ে প্রার্থীদের সমর্থনে রাজনৈতিক দলের চাহিদা মতো দেওয়াল লিখে দেন। এবারও তিনি কাজে নেমে পড়েছেন। শহরে যেসব দেওয়াল লেখা হচ্ছে সেসবের অনেক ক’টিতেই তাঁর হাতের লেখা জ্বলজ্বল করছে। প্রতিবছরই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কোনও না কোনও ভোট এসে যায়। তাই নির্বাচন এলেই বাড়তি কিছু রোজগারের আশায় তাঁর মুখে চওড়া হাসি ফোটে। ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস এবং বামেরা তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। তাই সবদল থেকেই তাঁর ডাক আসছে। তাই কয়েকদিন ধরেই তাঁকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেওয়াল লেখার কাজে ব্যস্ত হয়ে থাকতে হচ্ছে। পেশা নয়, নেশার টানেই এটা করতে পেরে প্রসেনজিৎবাবু আনন্দ পান।
রায়গঞ্জের মিলনপাড়ার বাড়িতে মায়ের সঙ্গে থাকেন প্রসেনজিৎবাবু। ১৬-১৭ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে তিনি নির্বাচনের সময়ে দেওয়াল লিখে আসছেন। ফলে রায়গঞ্জ শহরের রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা প্রসেনজিৎবাবুকে একনামেই চেনেন। আজকাল গ্রামগঞ্জেও তাঁর ডাক পড়ছে। নির্বাচনের সময়ে তিনি রাজনৈতিকদলগুলির ডাকের অপেক্ষায় থাকেন। রাজনৈতিক দলগুলি দেওয়াল চুনকাম করে দেয়। তিনি রং, তুলি, ব্রাশ দিয়ে লিখে দেন। রায়গঞ্জের বিভিন্ন রং এবং দশকর্মার দোকান থেকে সেসব কেনন। তিনি জানিয়েছেন, ৫, ১২, ২০ নম্বর তুলি ওসব লিখতে লাগে। এছাড়াও ছোট, বড় বিভিন্ন মাপের ব্রাশের দরকার হয়। ৩৫০-৪০০ টাকা প্রতি লিটার রঙের কৌটা কিনতে হয়। বিভিন্ন রং দিয়ে প্রার্থীদের নাম লেখেন। পাশাপাশি নির্দিষ্ট দলের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট রং ব্যবহার করে প্রতীক আঁকতে হয়। এছাড়াও নানা ধরনের কার্টুন, ছড়া তিনি নির্ভুলভাবে দেওয়ালে লিখে দেন। তিনি জানিয়েছেন, এই সময়ে একেক দিনে কাজ করে হাজার দেড়েক টাকা রোজগার হয়। প্রসেনজিৎবাবু সারা বছর ইনটিরিয়র ডেকরেশনের কাজ করেন। কিন্তু নির্বাচনের আগে প্রচারপর্বে দেওয়াল লিখে বাড়তি রোজগার করতে পেরে তিনি খুশি হন।