পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
এদিন জেলা প্রশাসনিক ভবনে ক্যাম্প অফিস খোলা হয়েছিল। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ভোটকর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। নির্বাচন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, অসুস্থতার নথিপত্র দেখালেই ডিউটি থেকে ছাড় মিলবে এমনটা নয়। মেডিক্যাল বোর্ড তাঁর জমা দেওয়ার নথি যাচাই করার পাশাপাশি সবদিক খতিয়ে দেখবে। তারপরই তাঁরা ফিট অথবা আনফিটের তালিকা ঘোষণা করবে।
তুফানগঞ্জের সরকারি হাসপাতালের কর্মী শীতলচন্দ্র দাস এদিন নানা ধরনের প্রেসক্রিপশন নিয়ে জেলা প্রশাসনের দপ্তরে হাজির হয়েছিলেন। তাঁর দাবি, কয়েক মাস ধরেই তাঁর স্নায়ুর সমস্যা দেখা দিয়েছে। ভোটের ডিউটি করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। নিয়ম অনুসারে তাঁকেও এদিন সিরিয়াল নম্বরযুক্ত কাগজ ধরিয়ে দেওয়া হয়। মাথাভাঙার রুইডাঙা পঞ্চায়েতের কর্মী শরৎচন্দ্র বর্মনকে তাঁর ছেলে বিশ্বজিৎ বর্মন নিয়ে এসেছেন। হাতের ব্যাগে প্রেসক্রিপশন ঠাসা রয়েছে। চোখে মুখে একরাশ দুশ্চিন্তা। মেডিকেল বোর্ডের বাইরের চেয়ারে তিনি ঠায় বসে রয়েছেন। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, বাবার তিনবার স্ট্রোক হয়ে গিয়েছে। এমন রোগীর পক্ষে ভোটের ডিউটি দেওয়া কি সম্ভব? এদিন প্রেসক্রিপশন হাতে জেলা প্রশাসিনক ভবনে হাজির হয়েছিলেন তুফানগঞ্জের বিএলআরও দপ্তরের এক কর্মী। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, বেশিরভাগই স্নায়ুর রোগে ভুগছেন বলে বোর্ডের সামনে দাবি করেছেন। হৃদযন্ত্রের সমস্যার কথাও কয়েকজন বলেছেন। কয়েকজন দাবি করেছেন, জোরে চিৎকার তিনি সহ্য করতে পারেন না। বুথে ঢুকে কেউ হম্বিতম্বি করলে তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেতে পারে। কয়েকজনের দাবি, লিখতে গেলেই তাঁর হাত কাঁপে। কয়েকজনের আবার পেটের সমস্যা রয়েছে। একজন তো পায়ে ব্যান্ডেজ বেঁধেও এসেছেন। জেলা প্রশাসনিক দপ্তরের কর্মীরা তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন ভোটের আগেই তাঁর পায়ের ক্ষত ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু ডিউটি থেকে রেহাই পেতে তিনি কার্যত নাছোড়বান্দা। শেষ পর্যন্ত তিনি খোলসা করেন, বুথে বসে থাকতে তাঁর প্রচন্ড ভয় লাগে। এই ভয় কাটানো তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। জেলা প্রশাসনিক ভবনের বেঞ্চে বসে গোটা পরিস্থিতি এতক্ষণ দেখছিলেন কোচবিহার শহরের বাসিন্দা এক মহিলা। তাঁর স্বামী কোচবিহারের একটি কলেজের কর্মী। ওই মহিলা বলেন, আমার স্বামী একটু ভীতু ধরনের। রায়গঞ্জে যে ঘটনা হয়েছিল তারপর কীসের ভরসায় স্বামীকে ভোট করাতে পাঠাব? কিন্তু স্বামী কেন আসছেন না? মহিলার সহাস্য উত্তর, সবাই তো সাহসী হতে পারে না।