সংবাদদাতা, পুরাতন মালদহ: অবশেষে মালদহে ভারী শিল্পের দরজা খুলল। গুজরাতের একটি সংস্থা মালদহের নারায়ণপুরে শুক্রবার ভুট্টা প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের শিলান্যাস করল। সংস্থার কর্ণধার মণীষ গুপ্ত এদিন জানান। এই প্রকল্পে তাঁরা ২০০ কোটিরও বেশি টাকা বিনিয়োগ করবেন। ১৮ মাসের মধ্যে উৎপাদন শুরু হবে। ভুট্টা থেকে চকোলেট, বিস্কুট সহ নানা ধরনের খাদ্যসামগ্রী তৈরি হবে। স্থানীয়ভাবে ব্যাপক কর্মসংস্থানও হবে। নারায়ণপুর শিল্পতালুকের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে পুরাতন মালদহ ব্লক কৃষিদপ্তরের উল্টোদিকে প্রায় ৬৬ একরের বেশি জমিতে এই শিল্প গড়ে উঠবে।
এদিন নারায়ণপুরে শিল্পতালুকের এই বৃহৎ শিল্পের শিলান্যাস করেন সংস্থার কর্ণধার মনিশ গুপ্তা এবং উত্তর মালদহ লোকসভা কেন্দ্রের সংসদ সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসের মৌসম বেনজির নুর। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল, জেলা তৃণমূল নেতা হেমন্ত শর্মা প্রমূখ। আগামী দু’মাসের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ পরিকাঠামো তৈরির প্রাথমিক কাজ শুরু হবে। শিল্প স্থাপনের উপযুক্ত পরিবেশ থাকায় ওই গোষ্ঠী এখানে শিল্প স্থাপনের জন্য এগিয়ে এসেছে। এই শিল্প গড়ে উঠলে একদিকে যেমন কর্মসংস্থানের বিপুল সম্ভাবনা তৈরি হবে তেমনি প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবেও স্থানীয়দের সামনে উপার্জনের সুযোগ তৈরি হবে। এ বিষয়ে গুজরাতের ওই শিল্পগোষ্ঠীর ডিরেক্টর সন্দীপ আগারওয়াল বলেন, প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার বিনিয়োগে ভুট্টা কেন্দ্রিক শিল্প তৈরি করা হবে। প্রথম দফায় আমরা প্রায় ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছি। পরবর্তীতে আরও ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। এখান থেকে আমরা ভুট্টাকে প্রসেসিং করে গ্লুকোজ, বিস্কুট, চকলেট, মেডিসিন সহ নানা ধরনের দ্রব্য উৎপাদন সম্ভব হবে। এখানে পুরোপুরি কাজ শুরু হয়ে গেলে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে কয়েক হাজার লোক উপকৃত হবেন। এবিষয়ে মৌসম বেনজির নুর বলেন, শিল্প স্থাপন খুব ভালো উদ্যোগ। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন রাজ্যে আরও শিল্প আসুক।
গুজরাতের গোষ্ঠীটি যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে এজেলায় বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। পাশাপাশি অনেকেই পরোক্ষভাবে এতে যুক্ত হতে পারবেন। জেলার ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি উদ্যোগ ও বস্ত্র দপ্তরের জেনারেল ম্যানেজার মানবেন্দ্র মণ্ডল বলেন, জেলায় এই ভুট্টা কেন্দ্রিক শিল্প গড়ে উঠলে কৃষক এবং শিল্পের মধ্যে সমন্বয় তৈরি হবে। কেননা এশিল্পে প্রচুর ভুট্টার প্রয়োজন হবে। সেক্ষেত্রে ভুট্টা চাষিদের আর্থসামাজিক অবস্থা পাল্টে যাবে। মালদহ সহ দুই দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ ব্যাপক হারে ভুট্টার চাষ হওয়ায় এই শিল্প ঘিরে ভুট্টার কাঁচামাল সহজেই যোগান দেওয়া সম্ভব হবে। তাছাড়া এই শিল্পে মাসে প্রায় ১ লক্ষ মেট্রিক টন ভুট্টার কাঁচামাল প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ভুট্টা চাষের সঙ্গে যুক্ত কৃষকরা লাভবান হবেন। ভুট্টা উৎপাদনের পাশাপাশি ভুট্টা বিক্রির বিরাট একটি বাজারও তৈরি হয়ে যাবে। শিল্প ঘিরে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা আছে। শুধু শিল্প পরিচালনা করতে প্রতিদিন প্রায় ২০০ শ্রমিক প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত থাকবে বলে এমনটাই দাবি করেছে ওই শিল্প গোষ্ঠী।