বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
জঞ্জাল বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য মুকুল সেনগুপ্ত বলেন, জঞ্জাল সাফাই জরুরি পরিষেবার মধ্যে পড়ে। এভাবে হঠাৎ করে এক সঙ্গে এতজন ইমারজেন্সি সার্ভিস থেকে ছুটি (ক্যাজুয়াল লিভ) নিতে পারেন না। পরিষেবার বিঘ্ন ঘটিয়ে সবাই মিলে আন্দোলনে যাওয়া উচিত নয়। তাঁদের দাবি ন্যায্য। আমরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি। কিন্তু এটা পদ্ধতি নয়, সিএল নিয়ে সবাই পরিষেবাকেই বন্ধ করে দেব? আমরা তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বকে জানিয়েওছিলাম। তারপরেও তাঁরা শুনলেন না। আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত শিলিগুড়ি পুর কর্মচারী সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিশ্বময় মজুমদার বলেন, চালক থেকে সাফাই কর্মীদের বেতন নিয়ে বৈসম্য রয়েছে। এই বোর্ড খেয়ালখুশি মতো একেক জনকে একেকরকম বেতন দিচ্ছে। কর্মীদের দাবি ছিল মজুরি বৃদ্ধি। ছুটির দিনে কাজ করলে আগে কর্মীরা অ্যালাউন্স পেতেন। এখন তা দেওয়া হচ্ছে না। কর্মীরা তাদের দাবি নিয়ে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছিলেন। পুরসভার তরফে পরিস্কার ভাবে বলা হয়েছিল ছুটি নিয়ে আন্দোলন বসতে হবে। আমাদের সদস্যরা তাই সিএল নিয়ে আন্দোলনে শামিল হয়েছিল। এখন কেন বলা হচ্ছে ছুটি নেওয়া ঠিক হয়নি। এটা তো দ্বিচারিতা। পরিষেবা না দেওয়ায় এখন পুরসভার টনক নড়ছে। এতদিন তারা কর্মচারীদের দাবি মানেননি কেন?
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, রোজ শিলিগুড়ি পুরসভা এলাকায় ৩৫০ মেট্রিক টন জঞ্জাল জমা হয়। এই বিশাল জঞ্জালের একটা বড় অংশ আসে বাড়ি বাড়ি থেকে। বিভিন্ন ড্রেন থেকে আবর্জনা তোলা হয়। শহরে ছোট বড় মিলিয়ে ৪০টি মার্কেট রয়েছে। সেগুলি থেকে রোজ আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়। এর বাইরে আছে বিভিন্ন নার্সিংহোম, বিভিন্ন হোটেল, ভবন। পাশাপাশি রেগুলেটেড মার্কেট, এসজেডিএ মার্কেট। আবার বিল্ডিং ভাঙার ধ্বংসাবশেষও সাফাই কর্মীরা সংগ্রহ করে। কিন্তু ৪৭টি ওয়ার্ডের জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্য সাফাই কর্মী রয়েছেন মাত্র ১৬০০ জন। আবর্জনা ফেলার জন্য গাড়ি রয়েছে ৮০টি।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার অবস্থান আন্দোলনে শামিল হওয়ার জন্য অন্তত একযোগে ৩০ জন চুক্তিভিত্তিক সাফাই কর্মী গণছুটি নিয়েছিলেন। যাদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন গাড়ি চালক। স্বাভাবিক ভাবে বুধবার জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্য অধিকাংশ গাড়ি ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি। যার ফলে একাধিক ওয়ার্ড থেকে জঞ্জাল নেওয়া হয়নি। বুধবার দিনভরই শহরের একাধিক ওয়ার্ডে জঞ্জালের স্তুপ ছিল। বৃহস্পতিবার আবার সেখানেই আরও জঞ্জাল জমেছে। পুরসভার জঞ্জাল বিভাগে যে পরিমাণ সাফাই কর্মী বা গাড়ি রয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়। যার ফলে নিত্য দিন শহরের সমস্ত জঞ্জাল তোলা সম্ভব হয় না। স্বাভাবিক ভাবেই একদিনের জঞ্জাল জমে থাকায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়েছে। জনজীবন কার্যত দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। এদিনও শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দেখা গিয়ে জঞ্জালের স্তুপ পড়ে রয়েছে। শহরের বিধান রোডে স্টেডিয়ামের কাছে বেলা পর্যন্ত জঞ্জাল সাফাই হয়নি। পিডব্লিউডি মোড়ের কাছে জঞ্জাল জমেছিল। ২৫, ২৬, ১৫, ১৬, ৪৬, ৪১, ২২, ২১, ৩২, ১১, ১২ নম্বর ওয়ার্ডগুলিতে পুরোপুরি জঞ্জাল সাফাই হয়নি। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা বলেন, সাফাই কর্মীর অভাবে শহরে ঠিক মতো জঞ্জাল সাফাই হয় না। এরউপর কর্মীরা যেভাবে কাজ বন্ধ করলেন তাতে জীবন দুর্বষহ হয়ে উঠছে।