বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার কাকভোরে চুরির ঘটনাটি প্রথম নজরে আসে এলাকাবাসীর। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, এদিন একটি মন্দিরে পুজো করতে গিয়ে পূজারী খেয়াল করেন তালা ভাঙা। উধাও কালী মূর্তির গয়না, প্রণামীর বাক্স সহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিস। বিষয়টি জানাজানি হতেই একে একে জড়ো হন এলাকাবাসীরা। তখনই নজরে আসে ওই মন্দিরের কাছাকাছি আরও পাঁচটি মন্দিরে একই কায়দায় চুরি হয়েছে। এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা।
কালী মন্দির, মনসা মন্দির, রাধাকৃষ্ণ মন্দির সহ বেশ কয়েকটি মন্দিরে মূর্তিগুলির রুপো ও সোনার অলঙ্কার মিলিয়ে প্রায় ছয় লক্ষ টাকার মূল্যবান সামগ্রী চুরি হয়েছে বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, এছাড়াও মোটা অঙ্কের প্রণামী জমা পড়ত মন্দিরের বাক্সগুলিতে। সেগুলিও নিয়ে পালিয়েছে চোরের দল। সব মিলিয়ে আরও বেশ কয়েক হাজার টাকার প্রণামী লুট হয়েছে মন্দিরগুলি থেকে। বাসিন্দারা বলেন, এলাকায় দুষ্কৃতীদের উপদ্রব বেড়েছে। রাত বাড়লেই বসছে বেআইনি মদ ও জুয়ার আসর। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করতে ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু চোখ বুজে রয়েছে পুলিস। টহলদারি প্রায় হয় না বললেই চলে। ফলে ক্রমশ বাড়ছে বেআইনি কার্যকলাপ। সব দেখেও মুখ বুজে থাকতে হচ্ছে। তাঁদের দাবি, রাতে পুলিসি টহলদারি সক্রিয় থাকলে এতগুলি মন্দিরে চুরির ঘটনা অনায়াসে এড়ানো যেত। উল্লেখ্য, বুধবার সকালে ইংলিশবাজার থানার ফুলবাড়িতেও একটি মন্দিরে চুরি হয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, ওই মন্দির থেকে প্রায় ৮৫ হাজার টাকা সহ প্রণামীর বাক্স চুরি হয়েছে।
একই দিনে শহরের মকদুমপুর এলাকায় একটি মোবাইল এবং কম্পিউটারের শোরুমেও চুরি হয়েছে। সেখান থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার জিনিস চুরি হয়েছে বলে দাবি করেন দোকানের এক কর্মচারী। তার আগে পুরসভা এলাকার আরেকটি মন্দিরেও চুরি হয়েছিল।
সব মিলিয়ে জেলা সদর ইংলিশবাজারের বিভিন্ন এলাকায় পরপর চুরির ঘটনা নিয়ে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর রাজীব চম্পটি বলেন, মন্দিরে চুরি কোনও দস্যু দলের কাজ নয়। সাধারণ সমাজবিরোধীরাই এই সব ঘটনা ঘটাচ্ছে। কিন্তু ভাবতে আশ্চর্য লাগছে, এই সব ছোটখাট দুষ্কৃতীদেরকেও এখন পুলিস ধরতে পারছে না। ইংলিশবাজারে চুরি এবং সমাজবিরোধী কার্যকলাপ ক্রমশ বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায়। তিনি বলেন, পুলিস শাসক দলের নেতাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যস্ত। তাদের দুষ্কৃতী দমনের ক্ষমতা কমেছে। তারা এখন স্রেফ নেতা-মন্ত্রীদের নিরাপত্তারক্ষীর ভূমিকা পালন করে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, পুলিসের নিষ্ক্রিয়তা এই রাজ্যে নতুন কিছু নয়। পুলিস ব্যস্ত বিরোধীদের কণ্ঠ রোধ করতে। তবে জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার বলেন, হাস্যকর সমালোচনা করছেন বিরোধীরা। তাঁরা কার্যকারণ সম্পর্ক বিস্মৃত হচ্ছেন। ছোটখাট বিষয়েও পুলিস আর তৃণমূলকে একাকার করে দিচ্ছেন।
ইংলিশবাজার থানার ইন্সপেক্টর-ইন-চার্জ পূর্ণেন্দু কুণ্ডু বলেন, পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ঠিক নয়। কয়েকদিন আগেই গয়েশপুর এলাকার একটি মন্দিরে চুরির অভিযোগে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এটি নতুন কোনও দুষ্কৃতী দলের কাজ। পুলিস তদন্ত চালাচ্ছে। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।