গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ পাওয়ার সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিধাননগর এলাকার মিলনপল্লির বাসিন্দা সুস্মিতা। জন্ম থেকেই দুটি হাত নেই। তবে বাঁ দিকে সাঁত থেকে আট ইঞ্চির মতোন হাতের একটু অংশ রয়েছে। যা কোনও কাজেই আসে না। সেক্ষেত্রে হাতের কাজ সবটাই পা দিয়েই সারে সুস্মিতা। নিয়মিত পড়াশুনোয় চর্চার পাশাপাশি তার দখল রয়েছে ছবি আঁকায়। পা দিয়ে তুলির টানে তুলে ধরে গ্রাম বাংলার চিত্র থেকে শুরু করে নানান থিম। তার আঁকা সেই সব ছবি স্থান পেয়েছে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়। তবে সে আজও ব্রাত্য সমাজে। দিন কাটাতে হয় দ্রারিদ্রতার মাঝে। সুস্মিতা সন্তোষীনি বিদ্যাচক্রের ছাত্রী। তার পরীক্ষা কেন্দ্র পড়েছে মুরলিগছ হাই স্কুল। এদিন মায়ের সঙ্গে গুটি গুটি পায়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছায় সে। সুস্মিতা বলে, আমি পা দিয়েই লিখি। আমি তাতে স্বাচ্ছ্যন্দ বোধ করি। কোনও অসুবিধে হয় না। আমি পড়াশোনা করে আগামীতে শিক্ষিকা হতে চাই।
সুস্মিতারা দুইবোন এক ভাই। তার দিদি বর্তমানে আইটিআই পড়ে। তার দাদা দিনমজুরি করে। সুস্মিতার বাবা সুভাষ মণ্ডল পেশায় দিনমজুর। সংসারের জোয়াল টানতে কাজে যোগ দেন তার মা অঞ্জলি দেবী। তিনি সংসারের মূল রোজগেরে। বর্তমানে তিনি স্থানীয় একটি চা বাগানে দিনমজুরি করেন। সেক্ষেত্রে মা ও ছেলের হাড় ভাঙা খাটুনির সামান্য কিছু রোজগারের টাকায় চলে সংসার। অঞ্জলি দেবী বলেন, কোনওমতে দিনপাত হয় আমাদের। মেয়েদের উচ্চশিক্ষার কথা ভাবা আমার কাছে দুঃস্বপ্ন। তবে বড় মেয়ে কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও সুস্মিতার পক্ষে তা সম্ভব নয়। তবে সুস্মিতার অদম্য জেদের কাছে হার মানতে হয়। সেক্ষেত্রে দিনভর হাড়ভাঙা খাটুনির পরেও মেয়ের পড়াশুনোর দিকে নজর দিতে হয়।
অন্যদিকে এদিন পরীক্ষাকেন্দ্রের বদলে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সিসিইউতে পরীক্ষা দিয়েছে ডাবগ্রাম- ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা অধিকারী। প্রিয়াঙ্কার মা ধরণী অধিকারী বলেন, দিনকয় ধরেই মেয়ে জ্বরে আক্রান্ত। তিনদিন আগে তাকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বুকে সংক্রমণ হয়েছে। চিকিৎসা চলছে। তবে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েনি আমার মেয়ে। শুরু থেকেই সে পরীক্ষায় বসার ক্ষেত্রে জোর দিচ্ছিল। সেক্ষেত্রে স্কুলের তরফে সবরকম ব্যবস্থা করা হয়। আমি খুশি যে আমার মেয়ে পরীক্ষা দিতে পেরেছে।