পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালে আসে কোতোয়ালি থানার পুলিস। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেন, অস্বাভাবিক ওই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। প্রাথমিকভাবে জেনেছি, চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি হয়নি।
মৃতার স্বামী নূর আলি বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় বাড়িতে আমার স্ত্রী পেটে ব্যথা অনুভব করেন। আমি স্থানীয় ওষুধের দোকান থেকে গ্যাসের ওষুধ এনে খাওয়াই। এরপর সে বমি করে। তাতে ব্যাথা না কমায় রাতেই জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রেফার করা হয়। এখানে ভর্তি করার কিছুক্ষণ পরে রোগী অনেকটা সুস্থ বোধ করে। কিন্তু রাত বাড়তেই হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছিল। বিষয়টি স্বাস্থ্যকর্মীদের নজরে আনা হয়। তাঁরাই চিকিৎসা করছিলেন। আমাদের বাইরে থাকতে বলা হয়। রাতে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হলেও কোনও চিকিৎসক রোগীকে দেখেনি। ভোরে মৃত্যুর পর এক চিকিৎসক এসে পরিবারের লোকদের জানান আমার স্ত্রী মারা গিয়েছে। আমার একমাত্র পাঁচ বছরের ছেলে জিশান তার মাকে খুঁজছে। ওকে বাড়ি ফিরে কি জবাব দেব?
মৃতার মামা আব্দুল হোসেন, কাকা মেহেতাব হোসেনরা বলেন, সামান্য পেটের ব্যথায় একটি রোগী মারা গেল, কী চিকিৎসা হল এখানে? হাসপাতালের গাফিলতিতেই একটা তরতাজা প্রাণ ঝরে গেল। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালকে রাজ্যের মডেল হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য রাজ্য সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। সেই মতো এখানে বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসা করাতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ শুরু হয়েছে। এর পাশাপাশি অত্যাধুনিক দামি চিকিৎসা সরঞ্জামও আনা হচ্ছে। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেই নিখরচায় অনেক জটিল অপারেশন করানোর উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু পেটের ব্যথা নিয়ে অল্প বয়সের এক গৃহবধূ ভর্তি হওয়ার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই মারা যাওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠত শুরু করেছে। তবে অস্বাভাবিক ওই মৃত্যুর কারণ এখনও পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও জানতে পারেনি। তাই হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শে জরিনা খাতুনের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পরিবারের লোকরা মৃতদেহ ময়নাতদন্তের বিষয়েও তীব্র আপত্তি জানিয়েছিল। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাতে রাজি হয়নি। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, একে অস্বাভাবিক মৃত্যু, তারপর এই মৃত্যুকে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন মৃতার পরিবারের লোকেরা। এনিয়ে এদিন তাঁরা বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। তাই এই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ময়নাতদন্তই জরুরি ছিল। যদিও এই মৃত্যু নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোতোয়ালি থানায় কোনও অভিযোগও হয়নি।