কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
মন্দিরের পুরোহিত হরগৌরী মিশ্র বলেন, এদিন মদন মোহন ঠাকুরের পুষ্যাভিষেক অনুষ্ঠান হয়েছে। ঠাকুরকে ১০৮ ঘটি জলে স্নান করানো হয়েছে। বিশেষ যজ্ঞও এদিন হয়েছে। সেই যজ্ঞের আগুনে পায়েস আহুতি দেওয়া হয়েছে। মন্দিরের অপর পুরোহিত শিব কুমার চক্রবর্তী বলেন, এদিন ঠাকুরের বিশেষ ভোগ হয়েছে। সেই ভোগও ঠাকুরকে নিবেদন করা হয়েছে।
এদিন সকালে নিত্যপুজোর পর মন্দিরের বারান্দায় যজ্ঞ অনুষ্ঠান হয়েছে। পুরোহিতরা নানা ধরনের কাঠ সেই যজ্ঞস্থলে রাখেন। আম, শাল, যজ্ঞ ডুমুরের কাঠ দিয়ে যজ্ঞ হয়েছে। সেই যজ্ঞের আগুনে পিতলের পাত্রে পায়েস তৈরি হয়েছে। এই রীতিটি স্থানীয়ভাবে ‘চড়ুপাক’ বলেও পরিচিত। সেই পায়েস এদিন যজ্ঞের আগুনেই আহুতি দেওয়া হয়েছে। শ্বেত পাথরের বারান্দায় যজ্ঞের আগুনের পবিত্র শিখা এদিন মন্দির চত্বরটিকে অন্য মাত্রা দেয়। যজ্ঞের আগুন থাকাকালীনই বড় মদন মোহন ঠাকুরকে মন্দিরের বারান্দায় বের করা হয়। ঠাকুরের শরীরে দুধ, দই, ঘি, মধু সহ নানা দ্রব্য মাখানো হয়। সকালের প্রথম রোদ তখন খেলা করছে মন্দিরের বারান্দায়। সেই রোদে আরও অপরূপ হয়ে ওঠেন কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর মদন মোহন। পিতলের গামলায় ঠাকুরকে রেখে ডাবের জল, গঙ্গা জল সহ নানা ধরনের পবিত্র জল শরীরে ঢালা শুরু হয়। এর সঙ্গে ঢাকের আওয়াজ আর ভক্তদের উলুধ্বনিতে মুখরিত হয় মন্দির চত্বর। একে একে ১০৮ ঘটি জল দিয়ে বড় বাবাকে স্নান করানো হয়। সহস্রধারার জলেও ঠাকুরকে এদিন স্নান করানো হয়েছে। রাজ আমলের প্রাচীন পুঁথি বের করে পুরোহিত পবিত্র মন্ত্রোচ্চারণ করেন। সকাল থেকেই প্রচুর ভক্ত ঠাকুরের স্নান দেখার জন্য মন্দির চত্বরে উপস্থিত হয়েছিলেন। ঠাকুরের পবিত্র স্নান ও পুজোর নানা রীতিকে মোবাইল বন্দি করতেও ভক্তদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। ঠাকুরের স্নান শেষ হলে তাঁকে মন্দিরের গর্ভগৃহে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ঠাকুরকে নতুন বস্ত্র পরানো হয়। এদিকে ঠাকুরের স্নানের পর সেই জল সংগ্রহ করার জন্যও ভক্তদের মধ্যে যথেষ্ট উৎসাহ ছিল। অনেকেই এদিন নানা ধরনের পাত্রে সেই জল সংগ্রহ করে নিয়ে যান। অন্যদিকে স্নান শেষ হওয়ার পর পুজোর অঙ্গ হিসাবে ঠাকুরের কাছে বিশেষ ভোগ নিবেদন করা হয়েছে। অন্ন ভোগের সঙ্গে ডাল, সব্জি, মিষ্টান্ন ঠাকুরের কাছে নিবেদন করা হয়েছে। ঠাকুরের পুষ্যাভিষেক উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গণে এদিন উৎসবের আমেজ ছিল। এদিকে সামনেই সরস্বতী পুজো। সেদিন মন্দির সংলগ্ন আনন্দময়ী ধর্মশালায় পলাশ তোলার অনুষ্ঠান হবে। তারপরই মদন মোহন মন্দিরের অন্যতম বড় উৎসব দোলাযাত্রার প্রস্তুতি শুরু হবে। সেই দোল পূর্ণিমার জন্যও দিন গুণছেন ভক্তরা।