কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
বৈঠকে যোগ দেন ধুমচিপাড়া, গ্যারগেন্দা, রামঝোরা, তুলসীপাড়া, হান্টাপাড়া ও লঙ্কাপাড়া চা বাগানের শ্রমিক প্রতিনিধিরা। বৈঠকে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বুলু লামা, বাহাদুর খিমবা, অরুণ মিনজ ও এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য আশমায়া সুব্বা ছিলেন। বৈঠকে বিডিও’র প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সুরজিৎ হালদার। বন দপ্তরের পক্ষে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের সহকারী বন্যপ্রাণী সহায়ক বিমল দেবনাথ ও এডিএফও সঞ্জিত সাহা।
শ্রমিকরা বলেন, তিনজনকে চিতাবাঘে টেনে নিয়ে যাওয়ার পরেও এখনও বাগানগুলিতে রোজ চিতাবাঘ ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। এখনও প্রতিদিন রাতে বাড়ির গোয়ালঘর থেকে গবাদি পশু টেনে নিয়ে যাচ্ছে। চিতাবাঘের আতঙ্কে তারা বাগানে কাজে যেতে পারছেন না। দাঁ, লাঠি ও কুড়াল নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। চিতাবাঘ এখনও ঘুরে বেড়ালেও বন দপ্তর খাঁচাবন্দি করতে পারছে না ঘাতক প্রাণীগুলিকে।
এরপরেই বৈঠকে ধুমচিপাড়া চা বাগানের এক শ্রমিক ওমরাজ সাংদে হুমকি দেন ফের চিতাবাঘের হামলায় কারও প্রাণ গেলে এবার তিনি বন দপ্তরের বিরুদ্ধে সোজা আদালতে মামলা করবেন। শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ প্রকাশ করেন চিতাবাঘের হামলায় তাদের ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না বলে। সেজন্য বৈঠকে শ্রমিকরা ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়ার জন্য স্কুল বাসের দাবিতে সরব হন। শ্রমিকরা ফাঁকা বাড়িতে দিনের বেলায় বয়স্ক ও শিশুদের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি নিয়েও বৈঠকে তুলে ধরেন।
বিডিও সুমন সৌরভ মহান্তি ছুটিতে থাকায় তাঁর প্রতিনিধি সুরজিৎ হালদার বলেন, চিতাবাঘের হামলায় আশঙ্কায় বৈঠকে শ্রমিকরা তাদের পড়ুয়াদের স্কুলে যেতে ও ছুটির পরে বাড়ি ফেরার জন্য বাসের দাবি তুলেছেন। শ্রমিকদের এই দাবি উপর মহলে জানিয়ে দেওয়া হবে।
শ্রমিকদের দাবি, প্রসঙ্গে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের সহকারী বন্যপ্রাণী সহায়ক বলেন, চিতাবাঘের আতঙ্ক কাটাতে ও হামলা ঠেকাতে উপদ্রুত বাগানগুলিতের একগুচ্ছ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উপদ্রুত বাগানগুলিতে বন কর্মীদের চারটি ট্রাঙ্কুলাইজ টিম রাখা হয়েছে। ট্রাঙ্কুলাইজ টিমে চারটি বন্দুক দেওয়া হয়েছে পাহারা দেওয়ার জন্য। বাগানগুলিতে ২৪ জন যুবককে রাখা হয়েছে দিনে ও রাতে সর্বক্ষণ টহলদারির জন্য। চিতাবাঘ খাঁচাবন্দি করতে নতুন করে আরও খাঁচা তৈরির অর্ডার দেওয়া হয়েছে।
গত ১২ ডিসেম্বর দিনের বেলায় বাড়ির উঠোন থেকে চিতাবাঘ টেনে নিয়ে যায় পাঁচ বছরের শিশু ইডেন নায়েককে। ওই মাসেই ১৭ তারিখ ওই বাগানেরই বৃদ্ধ বুধরাম ওড়াঁওয়ের মুখের মাংস খুবলে নিয়ে যায় চিতাবাঘ। এর পর ওই মাসেরই ২২ তারিখ সকালে পাশের রামঝোরা চা বাগানের কিশোর অনিকেত ওড়াঁওকে (১২) টেনে নিয়ে যায় চিতাবাঘ। চিতাবাঘের হামলার সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটে চলতি মাসে গত মঙ্গলবার রাতে। ওই দিন রাতে বাড়ির উঠানে আগুন পোহানোর সময় মায়ের কোল থেকে চিতাবাঘ টেনে নিয়ে যায় তিন বছরের শিশু প্রমিকা ওড়াঁও’কে।