গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক স্বাগত সেন বলেন, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশেই আলোচনা হয়েছে কংগ্রেস বিধায়কদলের সঙ্গে। দাবিদাওয়া খতিয়ে দেখে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিন সকাল ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন কংগ্রেস কর্মীরা। পরে একে একে এসে পৌঁছন সুজাপুরের কংগ্রেস বিধায়ক ঈশা খান চৌধুরি, হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক মোস্তাক আলম, মানিকচকের বিধায়ক মোত্তাকিন আলম, পুরাতন মালদহের বিধায়ক ভূপেন্দ্রনাথ হালদার, চাঁচলের বিধায়ক আসিফ মেহেবুব এবং মালতীপুরের বিধায়ক আলবিরুণি জুলাকারনাইন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি সৌরভ প্রসাদ, যুব কংগ্রেসের রাজ্য নেতা বাবুল সেখ সহ অন্যান্যরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনেই মাইক নিয়ে বক্তৃতা শুরু করেন কংগ্রেস বিধায়করা। তাঁদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ব্যবস্থা কার্যত প্রহসনে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতার হাত বদল হলেও ছাত্রছাত্রীদের কোনও সুরাহা হয়নি।
উল্লেখ্য, জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেই সাম্মানিক স্নাতক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দেখা যায় পরীক্ষায় পাশের হার এক ধাক্কায় কমেছে অনেকটাই। এরপরে ফল প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় পর্যালোচনা করে আবার নতুন করে প্রকাশ করা হবে ফলাফল। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলির ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বিক্ষোভ দেখাতেও শুরু করে।
প্রসঙ্গত, সেই নোটিস জারির দু’সপ্তাহের বেশি সময় কেটে গেলেও এখনও সংশোধিত ফল প্রকাশ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিষয়টিকে সামনে রেখেই এদিন আন্দোলনে নামে কংগ্রেস। কংগ্রেস বিধায়ক ভূপেন্দ্রনাথ হালদার, আসিফ মেহেবুব প্রমুখ জানান, ভুলে ভরা রেজাল্ট প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। তবে এই প্রথমবার নয়। এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজাল্ট নিয়ে ভুরিভুরি অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও কোনও পদক্ষেপ না করাতেই একই ভুলের পুনরাবৃত্তি হয়ে চলেছে। তার খেসারত দিচ্ছেন ছাত্রছাত্রীরা।
সৌরভ প্রসাদ বলেন, আমরা রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছি পুরো বিষয়টির পিছনে। রাজনৈতিক কারণে অনেক সময় মূল্য চোকাতে হচ্ছে মেধাবী পরীক্ষার্থীদের। আমাদের দাবি, যাঁরা এই পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন তাঁদের চিহ্নিত করুক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হোক।
ফলাফল ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল নিয়েও এদিন অভিযোগ তোলা হয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। উল্লেখ্য, হস্টেলে বৃহস্পতিবার রাত্রে জল ও বিদ্যুতের সমস্যা দেখা দিয়েছিল। আবাসিক ছাত্রদের অভিযোগ, হস্টেল সুপার বাদল সরকার সেদিন মহানন্দা নদীর জল খেয়ে রাত কাটানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন তাঁদের। এরপরেই শুক্রবার প্রায় সারাদিন ধরে বিক্ষোভ দেখান আবাসিক ছাত্ররা। নিজস্ব অসুবিধার কথা জানিয়ে তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন আবাসিক ছাত্রীরাও।
ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি এদিন বলেন, হস্টেল সহ সব ক্ষেত্রেই একাধিক অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। তাই আমরা আন্দোলনের পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছি।
শনিবার ছুটির দিন হলেও কেন কংগ্রেস নেতৃত্ব এদিনটিকেই তাঁদের রাজনৈতিক কর্মসূচির জন্য বেছে নিলেন তা নিয়েও অবশ্য প্রশ্ন উঠেছে। কংগ্রেস দিধায়ক দলের পক্ষ থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, উপাচার্য সময় দেওয়াতেই তাঁরা এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। তাছাড়া ছাত্র স্বার্থেই এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি তাঁরা বেশিদিন ফেলে রাখতে চাননি।
ডেপুটেশন নেওয়ার পরে বিশদে মন্তব্য করতে চাননি উপাচার্য। তিনি বলেন, সুস্থ পরিবেশেই আলোচনা হয়েছে। ওঁদের দাবিগুলি খতিয়ে দেখা হবে। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই বৈঠকে উপস্থিত এক আধিকারিক বলেন, বিধায়করা যে বিষয়গুলি উত্থাপন করেছেন তার বেশিরভাগই কলেজগুলির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব বেশি হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। তবে পরীক্ষা ও ফলাফল সংক্রান্ত অভিযোগগুলি গুরুত্বের সঙ্গেই বিবেচনা করা আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বিধায়কদের।